৪৯০৩

পরিচ্ছেদঃ ১৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - বংশগৌরব ও পক্ষপাতিত্ব

৪৯০৩-[১১] ’আবদুর রহমান ইবনু আবূ ’উকবাহ্ (রহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত। তিনি আবূ ’উকবাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন। আবূ ’উকবাহ্(রাঃ) মুক্ত দাস ছিলেন এবং পারস্যের অধিবাসী ছিলেন। তিনি বলেন, আমি উহুদের যুদ্ধে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে উপস্থিত ছিলাম। মুশরিকদের মধ্য হতে এক ব্যক্তিকে তরবারি বা বর্শা দ্বারা আঘাত করলাম এবং বললামঃ আমার তরফ থেকে আঘাত গ্রহণ করো, আমি পারস্যের দাস। এটা শুনে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার দিকে দৃষ্টিপাত করলেন এবং বললেনঃ তুমি কেন এ কথা বললে না যে, আমার তরফ থেকে আঘাত গ্রহণ করো, আমি আনসারীদের দাস? (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي عُقْبَةَ عَنْ أبي عُقبةَ وَكَانَ مَوْلًى مِنْ أَهْلِ فَارِسَ قَالَ: شَهِدْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أُحُدًا فَضَرَبْتُ رَجُلًا مِنَ الْمُشْرِكِينَ فَقُلْتُ خُذْهَا مِنِّي وَأَنَا الْغُلَامُ الْفَارِسِيُّ فَالْتَفَتَ إِلَيَّ فَقَالَ: هَلَّا قُلْتَ: خُذْهَا مِنِّي وَأَنَا الْغُلَامُ الْأَنْصَارِيُّ؟ . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

ব্যাখ্যাঃ (خُذْهَا مِنِّي وَأَنَا الْغُلَامُ الْفَارِسِيُّ) এর কারণ হলো, কোন সম্প্রদায়ের মুক্ত দাস সেই সম্প্রদায়েরই অন্তর্ভুক্ত। মুল্লা ‘আলী কারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ যখন তুমি কাউকে আঘাত করে গর্ব করবে তখন তুমি নিজেকে আনসারদের সাথে সম্পৃক্ত করবে। যাদের নিকট আমি হিজরত করেছি এবং যারা আমাকে সাহায্য করেছে। আর তৎকালীন সময়ে পারস্য কাফির রাষ্ট্র ছিল। তাই রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীকে তাদের দিকে সম্পৃক্ত করাকে অপছন্দ করেছেন। আর তাকে আনসারদের সাথে সম্পৃক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন যাতে করে সে মুসলিমদের সাথে সম্পৃক্ত হয়। বুঝা যায় যে, সে একজন মুসলিম বীর পুরুষ। (‘আওনুল মা‘বূদ ৮ম খন্ড, হাঃ ৫১১৪)

উহুদ যুদ্ধ : ৩য় হিজরীর ৭ই শাও্ওয়াল শনিবার সকালে উহুদ যুদ্ধ সংগঠিত হয়। কুরায়শরা আবূ সুফ্ইয়ান-এর নেতৃত্বে ৩০০০ সৈন্যের সুসজ্জিত বাহিনী নিয়ে মদীনার তিন মাইল উত্তরে উহুদ পাহাড়ের পাদদেশে শিবির সন্নিবেশ করে। এই বাহিনীর সাথে আবূ সুফ্ইয়ান-এর স্ত্রী হিন্দ বিনতু ‘উতবাহ্-এর নেতৃত্বে ১৫ জনের একটি মহিলা দল ছিল, যারা নেচে-গেয়ে ও উত্তেজক কবিতা পাঠ করে তাদের সৈন্যদের উত্তেজিত করে। এ যুদ্ধে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নেতৃত্বে প্রায় ৭০০ সৈন্য ছিল। প্রচণ্ড যুদ্ধ শেষে একটি ভুলের জন্য মুসলিমদের সাক্ষ্য বিজয় অবশেষে বিপর্যয়ে পরিণত হয়। মুসলিম পক্ষ ৭০ জন শাহীদ ৩৮০ জন আহত হয়। তার মধ্যে মুহাজির ৪ জন, আনসার ৬৫ জন। কুরায়শ পক্ষ ৩৭ জন নিহত হয়। তবে এই হিসাব চূড়ান্ত নয়। বরং কুরায়শ পক্ষ হতাহতের সংখ্যা ছিল অনেক বেশি, এই যুদ্ধে মুসলিমরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কুরায়শরা বিজয়ী হয়নি। বরং তারা ভীত হয়ে ফিরে যায়। এ যুদ্ধ প্রসঙ্গে সূরাহ্ আ-লি ‘ইমরান-এর ১২১-১৭৯ পর্যন্ত ৬০টি আয়াত নাযিল হয়। (সীরাতুর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ৩৩৯ পৃঃ)