৪৮৮৬

পরিচ্ছেদঃ ১২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ঠাট্টা ও কৌতুক প্রসঙ্গে

৪৮৮৬-[৩] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে সওয়ারী চাইল। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আমি তোমার সওয়ারীর জন্য উষ্ট্রীর বাচ্চা দান করব। তখন লোকটি বলল, আমি উষ্ট্রীর বাচ্চা দিয়ে কি করব? অতঃপর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ উট তো উষ্ট্রী-ই প্রসব করে। (তিরমিযী ও আবূ দাঊদ)[1]

وَعَن أنسٍ أَنَّ رَجُلًا اسْتَحْمَلَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «إِنِّي حَامِلُكَ عَلَى وَلَدِ نَاقَةٍ؟» فَقَالَ: مَا أَصْنَعُ بِوَلَدِ النَّاقَةِ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «وَهَلْ تَلِدُ الْإِبِلُ إِلَّا النُّوقُ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُد

ব্যাখ্যাঃ (مَا أَصْنَعُ بِوَلَدِ النَّاقَةِ؟) মোটা বুদ্ধির সাধারণ মানুষ উটের বাচ্চা বলতে ছোট উট বুঝে, যার উপর আরোহণ করা যায় না। মূলত রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেটা বোঝাননি। তিনি একটি আরোহণযোগ্য পরিণত উটের কথা বুঝিয়েছেন। তবে লোকটি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অর্থ বুঝতে ভুল করেছে। (‘আওনুল মা‘বূদ ৮ম খন্ড, হাঃ ৪৯৯০)

(هَلْ تَلِدُ الْإِبِلُ إِلَّا النُّوقُ) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি তোমাকে সওয়ারীর জন্য একটি উটের বাচ্চা দিব। তখন লোকটি একটু অসন্তুষ্ট হলে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বুঝিয়ে দিলেন যে, উট বড় হয়ে গেলেও তো উটেরই বাচ্চা। বাচ্চা বলতে যে ছোট উটই উদ্দেশ্য হবে এমন নয়। বড় উটও হতে পারে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাথে সে সত্য কথাই বলেছেন, সেটা তিনি বড় উট ও ছোট উট দ্বারা বুঝিয়ে ছিলেন।

‘আল্লামা বায়জূরী (রহিমাহুল্লাহ) ‘শারহুশ শামায়িল’ গ্রন্থে বলেনঃ এর অর্থ হলো যদি তুমি আমার কথার অর্থ চিন্তা-ভাবনা করে কথা বলতে, তবে এরূপ কথা বলতে পারতে না। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এ কথায় ইঙ্গিত আছে যে, যে ব্যক্তি কোন কথা শুনবে তার উচিত হলো ভালোভাবে চিন্তা-ভাবনা করে উত্তর দেয়া। শুনেই তাড়াহুড়া না করে উত্তর দেয়া উচিত। (‘আওনুল মা‘বূদ ৮ম খন্ড, হাঃ ৪৯৯০)

হাদীসটির বাস্তবিক শিক্ষা : আজকে ইন্টারনেটের যুগে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, কিছু বক্তার বক্তব্যকে ছোট করে অংশ বিশেষ জাতির সামনে উপস্থাপন করা হচ্ছে। আর সাধারণ জনগণ না বুঝেই, আগে-পিছে, না শুনেই এক-একটা মন্তব্য করে বসে। কেউ কাফির পর্যন্ত বলে গালি-গালাজ করে বসে। আবার কেউ ‘আলিমদের ব্যঙ্গ চিত্র তৈরি করে মন্তব্য করছে। যেগুলো কাবীরাহ্ গুনাহের শামিল। অথচ যদি মন্তব্যকারী বক্তার কথা সম্পূর্ণ শুনে চিন্তা-ভাবনা করত তবে এরূপ মন্তব্য করা সম্ভব ছিল না। (সম্পাদক)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ