৪৭৬১

পরিচ্ছেদঃ ৮. প্রথম অনুচ্ছেদ - নাম রাখা

৪৭৬১-[১২] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রা (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (আঙ্গুর গাছকে) তোমরা ’’কার্‌ম’’ বলো না। কারণ كَرْم (কারম) বলা হয় মু’মিনের অন্তঃকরণকে। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْأَسَامِىْ

وَعَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: لَا تَقُولُوا: الْكَرْمُ فَإِنَّ الْكَرْمَ قَلْبُ الْمُؤمن . رَوَاهُ مُسلم

ব্যাখ্যাঃ ফাতহুল বারীতে আবূ হুরায়রাহ  হতে বর্ণিত হাদীসে রয়েছে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ

عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ ؓ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَيَقُولُونَ الْكَرْمُ إِنَّمَا الْكَرْمُ قَلْبُ الْمُؤْمِنِ

অর্থাৎ- রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তারা বলেন, الْكَرْمُ  (আল কার্ম) আর ‘‘আল কার্ম’’ অর্থ মু’মিনের অন্তর। যুহরী বর্ণনা করেন, আবূ সালামাহ্ হতে এই শব্দের মাধ্যমে لا تسموا العنب كرما অর্থ তোমরা আঙ্গুরকে كرم নামকরণ করো না।

আর ইমাম মুসলিম (রহিমাহুল্লাহ) همام এর পদ্ধতি থেকে আবূ হুরায়রা -এর বর্ণনা করা হাদীস উল্লেখ করেন, لا يقل احدكم للعنب الكرم অর্থাৎ তোমাদের কেহ আঙ্গুরকে الكرم বলবে না। কেননা الكرم শব্দ দ্বারা একজন মুসলিম ব্যক্তিকে বুঝানো হয়েছে। سفيان এর বর্ণিত হাদীস,

قال رسول الله صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لا تقولوا كرم فإن الكرم قلب المؤمن

অর্থাৎ- রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা كرم বলো না, কেননা কার্ম হলো মু’মিনের অন্তর। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উক্তি ويقولون الكرم এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো তারা বলে কার্ম আঙ্গুরের গাছ। আর ত্ববারানী ও বাযযার (রহিমাহুমাল্লাহ) সামুরাহ  বর্ণিত হাদীস মারফূ‘ হিসেবে সংকলন করেন,

إن اسم الرجل المؤمن في الكتب الكرم من أجل ما أكرمه الله على الخليقة، وإنكم تدعون الحائط من العنب الكرمد

অর্থাৎ- নিশ্চয় মু’মিনের নাম গ্রন্থসমূহে রয়েছে كرم এ কারণে যে, আল্লাহ তা‘আলা তাকে সৃষ্টিজীবের উপর সম্মানিত করেছেন। নিশ্চয় তোমরা আঙ্গুরের বাগানকে كرم কার্ম বলে আহবান করো।

খত্ত্বাবী এ আলোচনার সারাংশ বর্ণনা করেছেন যে, নিশ্চয় নিষেধের দ্বারা উদ্দেশ্য হলো মদের হারামের গুরুত্ব দেয়া তার নাম মিটিয়ে ফেলার দ্বারা এবং কেননা এ নাম অবশিষ্ট রাখার মাধ্যমে তাকে প্রতিষ্ঠা করার শামিল। কারণ জাহিলী যুগে একে যে পান করত সে সম্মানী হয়ে যায় এটা মনে ও ধারণা করত, অতঃপর এর নামকরণ كرم কারাম করা হতে নিষেধ করা হয়েছে এবং বলেছেন,

(إِنَّمَا الْكَرْمُ قَلْبُ الْمُؤْمِنِ) অর্থাৎ নিশ্চয় কার্ম মু’মিনের হৃদয়, অন্তর। কারণ এর ভিতর রয়েছে ঈমানের আলো ইসলামের হিদায়াত সৎপথ প্রদর্শন।

ইবনুল বাত্ত্বল ইবনুল ‘আরাবী হতে বর্ণনা করেছেন, নিশ্চয় তারা আঙ্গুর কারম كرم নামে নামকরণ করত, কেননা মদ আঙ্গুর থেকে তৈরি করা হত আর তাদের ভ্রান্ত ধারণা মদ দানশীল হওয়ার, উদার হওয়ার উপর উৎসাহ প্রদান করে এবং উত্তম চরিত্রের আদেশ দেয়। (আসলে এ কথাগুলো ঠিক নয়, ভ্রান্ত।) শারহু মুসলিমে আবূ হুরায়রা  ও ‘আওনুল মা‘বূদে নিষেধ রয়েছে।

শিক্ষা : আমরা কখনও কোন ব্যক্তির নাম كرم (কারম) রাখব না এবং এ নামে আহবান করব না। বরং كرم কোন ব্যক্তির নাম রাখা যায়।

(ফাতহুল বারী ১০ম খন্ড, হাঃ ৬১৮৩; শারহুন নাবাবী ১৫শ খন্ড, হাঃ ২২৪৭/৭; ‘আওনুল মা‘বূদ ৮ম খন্ড, হাঃ ৪৯৬৬)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ