৪৩১০

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

৪৩১০-[৭] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বলেছেনঃ এক বিছানা পুরুষের জন্য, অপরটি তার স্ত্রীর জন্য এবং তৃতীয় বিছানা মেহমানের জন্য। আর চতুর্থখানা শয়তানের জন্য। (মুসলিম)[1]

الْفَصْلُ الْأَوْلُ

وَعَنْ جَابِرٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَهُ: «فِرَاشٌ لِلرَّجُلِ وَفِرَاشٌ لِامْرَأَتِهِ وَالثَّالِثُ للضيف وَالرَّابِع للشَّيْطَان» . رَوَاهُ مُسلم

ব্যাখ্যাঃ একটি পরিবারের একজন পুরুষের জন্য একটি বিছানাই যথেষ্ট। দু’টি বিছানা হলে দ্বিতীয়টি তার স্ত্রীর জন্য ধরা হবে, আর তৃতীয়টি হলে তা হবে মেহমান-অতিথিদের জন্য। কিন্তু চতুর্থটি নিষ্প্রয়োজন। নিষ্প্রয়োজন কাজ অপচয়, অপচয়কারী শয়তানের ভাই; সুতরাং চতুর্থ বিছানাটি মূলত শয়তানেরই বিছানা হয়ে যায়। অত্র হাদীসে সেই দিকেই ইশারা করা হয়েছে। অবশ্য জনসংখ্যা বা পরিবারের সদস্য যদি বেশি থাকে যাদের শয়নের জন্য তিনের অধিক বিছানার প্রয়োজন হয় তাহলে সেটা যে শয়তানের বিছানা হবে এমনটি নয়। স্ত্রীর জন্য আলাদা বিছানা তৈরি করা কোনই দোষের নয়, কেননা স্বামী-স্ত্রী প্রত্যেকেই অসুস্থতা বা অন্য কোন অনিবার্য কারণে পৃথক বিছানার মুখাপেক্ষী হয়ে পড়েন।

উপরে বর্ণিত হাদীসের ভিত্তিতে কেউ কেউ স্ত্রীর সাথে এক বিছানায় শয়ন করা স্বামীর জন্য আবশ্যক নয় বলে মনে করেন, কিন্তু এটি অত্যন্ত দুর্বল কথা। কেননা স্ত্রীর সাথে শয়ন করা যদিও ওয়াজিব নয় কিন্তু আরো অন্যান্য হাদীসের দলীল দ্বারা প্রমাণিত যে, ওযর ছাড়া স্ত্রীর সাথে একই বিছানায় শয়ন করা উত্তম। কেননা এ বিষয়ে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুস্পষ্ট ‘আমল রয়েছে। ‘আল্লামা ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) উত্তম হওয়ার প্রমাণ দিতে গিয়ে বলেন, স্ত্রীর প্রতি প্রবৃত্তির আকর্ষণ থাকা সত্ত্বেও রাত্রিতে তাহাজ্জুদের জন্য দণ্ডায়মান হওয়া কষ্টকরই বটে। বান্দা যখন স্ত্রীর পার্শ ছেড়ে তাহাজ্জুদে দণ্ডায়মান হয় আল্লাহ তখন ভীষণ খুশী হন। তিনি মালায়িকাহ্ (ফেরেশতাদের) ডেকে বলেন, আমার বান্দার দিকে লক্ষ্য কর, সে তার পরিবার ছেড়ে আমার কাছে যা রয়েছে তার প্রতি উৎসাহিত হয়ে সালাতে দাঁড়িয়েছে.......। (মুসনাদে আহমাদ ১/৪১২)

অতএব এ প্রশংসা পেতে নিশ্চয় তাকে স্ত্রীর পার্শ্ব থেকে উঠে তাহাজ্জুদে দাঁড়াতে হবে, তাহলে স্ত্রীর পাশে এক বিছানায় শয়ন কি উত্তম নয়?

(মিরক্বাতুল মাফাতীহ; শারহুন নাবাবী ১৪শ খন্ড, হাঃ ২০৮৫; ‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৪১৩৮)