৪১১৮

পরিচ্ছেদঃ ২. প্রথম অনুচ্ছেদ - যেসব প্রাণী খাওয়া হালাল ও হারাম

৪১১৮-[১৫] আবূ সায়িব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা আবূ সা’ঈদ আল খুদরী -এর নিকট গেলাম। আমরা তার কাছে বসেছিলাম, এমন সময় হঠাৎ তাঁর খাটের নিচে কোন কিছুর নড়াচড়া শুনতে পাই। তাকিয়ে দেখলাম, ঐখানে একটি সাপ। আমি তৎক্ষণাৎ তাকে মারার জন্য উঠে দাঁড়িয়ে গেলাম। সে সময় আবূ সা’ঈদ সালাত আদায় করছিলেন। তিনি আমাকে বসে থাকার জন্য ইঙ্গিত করলেন। আমি অমনি বসে পড়লাম। অতঃপর তিনি সালাত শেষ করে ঘরের একটি কক্ষের দিকে ইশারা করে বললেন, তুমি কি ঐ কক্ষটি দেখছ? আমি বললামঃ জ্বী হ্যাঁ। তখন তিনি বললেনঃ এ কক্ষে আমাদের বংশের এক যুবক থাকত। সে ছিল সদ্য বিবাহিত দম্পতি। তিনি আরো বলেন, উক্ত যুবকটিসহ আমরা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে খন্দাকের যুদ্ধে শরীক হয়েছিলাম। যুবকটি দ্বিপ্রহরে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট হতে অনুমতি নিয়ে বাড়িতে চলে যেত। (প্রতিদিনের নিয়মমাফিক) একদিন সে তাঁর নিকট অনুমতি চাইল। তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ তুমি তোমার হাতিয়ারখানা সঙ্গে নিয়ে যাও। কেননা আমি বানী কুরায়যার পক্ষ হতে তোমার ওপর আক্রমণের আশঙ্কা করি।

সুতরাং লোকটি নিজের হাতিয়ার সমেত বাড়ির দিকে প্রত্যাবর্তন করল। সে এসে দেখতে পেল, তার স্ত্রী (ঘরের) উভয় দ্বারের মাঝখানে দণ্ডায়মান। তাকে এ অবস্থায় দেখে তার আত্মসম্ভ্রমে আঘাত লাগল। ফলে সে তৎক্ষণাৎ তার দিকে বর্শা ছুড়ার জন্য উদ্যত হলো। তার উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে সে (স্ত্রী) বলে উঠল, তুমি তোমার বর্শা গুটিয়ে নাও। ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে দেখো, কিসে আমাকে বাহিরে আসতে বাধ্য করেছে। লোকটি গৃহে প্রবেশ করতেই দেখল, প্রকাণ্ড একটি সাপ বিছানার উপর জড়ো হয়ে রয়েছে। তৎক্ষণাৎ সে বর্শা দ্বারা তাকে আক্রমণ করল এবং বর্শার ফলকে তাকে গেঁথে ফেলল। অতঃপর ঘরের বাইরে এনে বর্শাটি মাটিতে গেড়ে রাখল। এ অবস্থায় সাপটি লাফিয়ে তার ওপর আক্রমণ করল। এরপর জানা যায়নি তাদের উভয়ের মধ্যে কে আগে মৃত্যুবরণ করেছে- সেই সাপ না যুবক।

বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর আমরা এসে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে ঘটনাটি জানালাম এবং জিজ্ঞেস করলাম, (হে আল্লাহর রসূল!) আল্লাহর কাছে তার জন্য দু’আ করুন, যেন তিনি তাকে আমাদের জন্য জীবিত করে দেন। তিনি বললেন, তোমরা তোমাদের সঙ্গীর জন্য আল্লাহর কাছে মাগফিরাত কামনা করো। অতঃপর তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এ সমস্ত গৃহে কিছু ’আওয়ামির (বসবাসকারী জীন) থাকে। অতএব যখনই তোমরা তাদেরকে ঘরের মধ্যে দেখতে পাও, তখনই তাদেরকে ঘর ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য তিনবার নির্দেশ দাও। এতে যদি চলে যায়, তবে উত্তম, অন্যথা তাদেরকে মেরে ফেলো। কেননা তা কাফির।

অতঃপর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকেদেরকে সম্বোধন করে বললেনঃ যাও, তোমরা তোমাদের সাথিকে দাফন করো। অপর এক রিওয়ায়াতে বর্ণিত আছে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মদীনায় বহু জীন আছে। তাদের অনেকেই ইসলাম গ্রহণ করেছে। সুতরাং যদি তোমরা তাদের কোন একটিকে ঘরের মধ্যে দেখতে পাও, তখন তিনদিন যাবৎ ঘর ছেড়ে চলে যেতে নির্দেশ দাও। আর এরপরও যদি দেখতে পাও, তাকে বধ করে ফেলো। কেননা তা শয়তান।
(মুসলিম)[1]

بَابُ مَا يَحِلُّ أَكْلُهُ وَمَا يَحْرُمُ

وَعَن أبي السَّائِب قَالَ: دَخَلْنَا عَلَى أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ فَبَيْنَمَا نحنُ جلوسٌ إِذ سمعنَا تَحت سَرِيره فَنَظَرْنَا فَإِذَا فِيهِ حَيَّةٌ فَوَثَبْتُ لِأَقْتُلَهَا وَأَبُو سَعِيدٍ يُصَلِّي فَأَشَارَ إِلَيَّ أَنِ اجْلِسْ فَجَلَسْتُ فَلَمَّا انْصَرَفَ أَشَارَ إِلَى بَيْتٍ فِي الدَّارِ فَقَالَ: أَتَرَى هَذَا البيتَ؟ فَقلت: نعم فَقَالَ: كَانَ فِيهِ فَتًى مِنَّا حَدِيثُ عَهْدٍ بِعُرْسٍ قَالَ: فَخَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى الْخَنْدَقِ فَكَانَ ذَلِكَ الْفَتَى يَسْتَأْذِنُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِأَنْصَافِ النَّهَارِ فَيَرْجِعُ إِلَى أَهْلِهِ فَاسْتَأْذَنَهُ يَوْمًا فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «خُذْ عَلَيْكَ سِلَاحَكَ فَإِنِّي أَخْشَى عَلَيْكَ قُرَيْظَةَ» . فَأَخَذَ الرَّجُلُ سِلَاحَهُ ثُمَّ رَجَعَ فَإِذَا امْرَأَتُهُ بَيْنَ الْبَابَيْنِ قَائِمَةٌ فَأَهْوَى إِلَيْهَا بِالرُّمْحِ لِيَطْعَنَهَا بِهِ وَأَصَابَتْهُ غَيْرَةٌ فَقَالَتْ لَهُ: اكْفُفْ عَلَيْكَ رُمْحَكَ وَادْخُلِ الْبَيْتَ حَتَّى تَنْظُرَ مَا الَّذِي أَخْرَجَنِي فَدَخَلَ فَإِذَا بِحَيَّةٍ عَظِيمَةٍ مُنْطَوِيَةٍ عَلَى الْفِرَاشِ فَأَهْوَى إِلَيْهَا بِالرُّمْحِ فَانْتَظَمَهَا بِهِ ثُمَّ خَرَجَ فَرَكَزَهُ فِي الدَّارِ فَاضْطَرَبَتْ عَلَيْهِ فَمَا يُدْرَى أَيُّهُمَا كَانَ أَسْرَعَ مَوْتًا: الْحَيَّةُ أَمِ الْفَتَى؟ قَالَ: فَجِئْنَا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَذَكَرْنَا ذَلِكَ لَهُ وَقُلْنَا: ادْعُ اللَّهَ يُحْيِيهِ لَنَا فَقَالَ: «اسْتَغْفِرُوا لِصَاحِبِكُمْ» ثُمَّ قَالَ: «إِنَّ لِهَذِهِ الْبُيُوتِ عَوَامِرَ فَإِذَا رأيتُم مِنْهَا شَيْئا فحرِّجوا عَلَيْهَا ثَلَاثًا فإنْ ذَهَبَ وَإِلَّا فَاقْتُلُوهُ فَإِنَّهُ كَافِرٌ» . وَقَالَ لَهُمْ: «اذْهَبُوا فَادْفِنُوا صَاحِبَكُمْ» وَفِي رِوَايَةٍ قَالَ: «إِنَّ بالمدينةِ جِنَّاً قد أَسْلمُوا فَإِذا رأيتُم مِنْهُم شَيْئًا فَآذِنُوهُ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ فَإِنْ بَدَا لَكُمْ بَعْدَ ذَلِكَ فَاقْتُلُوهُ فَإِنَّمَا هُوَ شَيْطَانٌ» . رَوَاهُ مُسلم

ব্যাখ্যাঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কথা তিনদিন ঘোষণা দাও, এরপর যদি আত্মপ্রকাশ করে তবে হত্যা করে ফেল। ‘উলামাগণ বলেছেন, যখন তিনদিন সতর্ক করার পরে না যাবে তখন মানতে হবে যে, তারা বাড়ীতে অবস্থানকারী জীন নয়। আর জীনদের মধ্য যারা ইসলাম কবুল করেছে তারাও নয়। বরং আত্মপ্রকাশকারী সাপটি শয়তান। সুতরাং সাপ হত্যা করতে আর কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। মুসলিম জীন এবং বাড়ীতে অবস্থানকারী জীন যে সুবিধা পাবে উক্ত সাপের জন্য তা আর থাকবে না। (শারহুন নাবাবী ১৪শ খন্ড, হাঃ ২২৩৬/১৩৯)