লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ
১৫৮৭। তোমরা খাদ্যকে ঠাণ্ডা কর। কারণ গরম খাদ্য বরকতধারী হয় না।
হাদীসটি দুর্বল।
হাদীসটিকে “আলজামেউস সাগীর” গ্রন্থে দায়লামীর উদ্ধৃতিতে ইবনু উমার (রাঃ) হতে এবং হাকিমের উদ্ধৃতিতে জাবের (রাঃ) ও আসমা (রাঃ) হতে এবং মুসাদ্দাদ সূত্রে আবু ইয়াহইয়া হতে বর্ণনা করেছেন। আর ত্ববারানী “আলআওসাত” গ্রন্থে আবু হুরাইরাহ (রাঃ) হতে ও আবু নুয়াইম “আলহিলইয়্যাহ” গ্রন্থে আনাস (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন।
আমি (আলবানী) বলছিঃ হাদীসটির তাখরীজ করার ব্যাপারে কিছু মন্তব্য রয়েছেঃ
১। আসমা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটির ভাষা হচ্ছে (إنه أعظم للبركة) অর্থাৎ ... কারণ বরকতের জন্য সেটিই বেশী উপযুক্ত। এ ভাষাটি আলোচ্য হাদীসটির ভাষার বিপরীত এবং এ ভাষায় হাদীসটি সহীহ। এ কারণে এটিকে “সিলসিলাহ সহীহাহ” গ্রন্থে (৬৫৯) উল্লেখ করেছি।
২। হাদীসটি গরম খাদ্যের ব্যাপারে বর্ণিত হয়নি। বরং হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে সেই খাদ্যের ব্যাপারে যার উত্তাপ এবং ধূয়া চলে যায়নি। আর এ দুয়ের মাঝে পার্থক্য রয়েছে। কারণ যার উত্তাপ চলে যায় সেটিও গরম থাকে।
৩। আনাস (রাঃ)-এর হাদীস সম্পর্কে আমি “ফিহরিসুল হিলইয়্যাহ” এর মধ্যে অবগত হইনি যাতে করে তার সম্পর্কে দৃষ্টি দিতে পারি। মানবী এটিকে বর্ণনা করেছেন নিম্নের ভাষায়ঃ
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এমন একটি (খাদ্যের) পিয়ালা নিয়ে আসা হলো যা উত্তাপ ছড়াচ্ছিল। এ সময় রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা থেকে তার হাত উঠিয়ে নিয়ে বললেনঃ আল্লাহ তা’য়ালা আমাদেরকে খাদ্য হিসেবে আগুন দেননি। অতঃপর তিনি উক্ত কথা উল্লেখ করেন।
আমি (আলবানী) বলছিঃ তিনি হাদীসটি সম্পর্কে কিছুই বলেননি।
৪। যে আবূ ইয়াহইয়া থেকে মুসাদ্দাদ বর্ণনা করেছেন আমি তাকে চিনি না। “জামেউস সাগীর” গ্রন্থে তার হাদীস থেকে আসলে হাদীসটিকে উল্লেখই করা হয়নি। মুসাদ্দাদ ও দায়লামীর বর্ণনা হতে ইবনু উমার (রাঃ) এর হাদীস থেকে উল্লেখ করা হয়েছে। (আল্লাহই বেশী জানেন)।
অতঃপর আমি হাদীসটিকে "আলহিলইয়াহ" গ্রন্থে আনাস (রাঃ) হতে খুবই দুর্বল সনদে দেখেছি সেই হাদীসের মধ্যে যেটি (১৫৯৮) নম্বরে আসবে। এছাড়াও এর সনদে দায়লামীর নিকট (১/১/১৮) বর্ণনাকারী হিসেবে ইসহাক ইবনু কা’ব রয়েছেন। মানবী বলেনঃ তার সম্পর্কে হাফিয যাহাবী বলেনঃ তাকে আব্দুস সামাদ ইবনু সুলাইমান হতে বর্ণনাকারী হিসেবে দুর্বল আখ্যা দেয়া হয়েছে। দারাকুতনী বলেনঃ কাযায়াহ ইবনু সুওয়াইদ হতে বর্ণনাকারী হিসেবে তিনি মাতরূক। ইমাম আহমাদ বলেনঃ তিনি মুযতারিবুল হাদীস। আৰূ হাতিম বলেনঃ তার দ্বারা দলীল গ্রহণ করা যায় না। তিনি আব্দুল্লাহ ইবনু দীনার হতে বর্ণনাকারী হিসেবে শক্তিশালী নন।
আমি (আলবানী) বলছিঃ হাকিমের নিকট জাবের (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসের ভাষা হচ্ছেঃ
أبردوا الطعام الحار، فإن الطعام الحار غير ذي بركة
তোমরা গরম খাদ্যকে ঠাণ্ডা কর। কারণ গরম খাদ্য বরকতধারী হয় না। তিনি এটিকে শাহেদ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু এটি শাহেদ হওয়ার যোগ্য নয়। কারণ এর সনদে মুহাম্মাদ ইবনু ওবাইদুল্লাহ আরযামী রয়েছেন, তিনি খুবই দুর্বল। হাফিয যাহাবী ও ইবনু হাজার আসকালানী বলেনঃ তিনি মাতরক।
আর আবু হুরাইরাহ (রাঃ)-এর হাদীসের সনদে আব্দুল্লাহ ইবনু ইয়াযীদ বিকরী রয়েছেন। হাইসামী তার সম্পর্কে (৫/২০) বলেনঃ তাকে আবু হাতিম দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন।
আমি (আলবানী) বলছিঃ তিনি যদি বলতেনঃ তাকে খুবই দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন তাহলে আবু হাতিমের ভাষার নিকটবর্তী হতো। কারণ তিনি বলেছেনঃ তিনি হাদীসের ক্ষেত্রে দুর্বল ও যাহেবুল হাদীস। যেমনটি তার ছেলের গ্রন্থে তার থেকে (২/২/২০১) বর্ণিত হয়েছে। তিনি য’ঈফুল হাদীসের (হাদীসের ক্ষেত্রে দুর্বল) ব্যাখ্যা করেছেন যাহেবুল হাদীস’ আখ্যা দেয়ার দ্বারা। যা তার খুবই দুর্বল হওয়ার ইঙ্গিত বহন করে। (আল্লাহই বেশী জানেন)।
মোটকথাঃ আলোচ্য হাদীসটি আমার (আলবানীর) নিকট দুর্বল। গ্রহণযোগ্য শাহেদ না থাকার কারণে। এ অধ্যায়ে আয়েশা (রাঃ) হতে নিম্নের ভাষায় হাদীস বর্ণিত হয়েছেঃ
"তোমরা তোমাদের খাদ্যকে ঠাণ্ডা কর, তাতে তোমাদের বরকত দেয়া হবে।"
কিন্তু এর সনদটি খুবই দুর্বল। যেমনটি (১৬৫৪) নম্বর হাদীসে আসবে।
أبردوا بالطعام، فإن الطعام الحار غير ذي بركة ضعيف - وقد عزاه في " الجامع الصغير " للديلمي عن ابن عمر والحاكم عن جابر وعن أسماء ومسدد عن أبي يحيى والطبراني في " الأوسط " عن أبي هريرة وأبو نعيم في " الحلية " عن أنس. قلت: وفي هذا التخريج ملاحظات أولا: أن حديث أسماء لفظه: " إنه أعظم للبركة "، وهذا خلاف قوله في حديث الترجمة: " غير ذي بركة "، كما لا يخفى ثانيا: أنه لم يرد في الطعام الحار، وإنما في الطعام الذي لم يذهب فوره ودخانه، وبينهما فرق، فإن الذي ذهب فوره لا يزال حارا ثالثا: حديث أنس، لم أقف عليه في " فهرس الحلية " لأنظر في إسناده، وقد ذكر المناوي أن لفظه: " أتي النبي صلى الله عليه وسلم بقصعة تفور، فرفع يده منها، وقال: إن الله لم يطعمنا نارا، ثم ذكره ". قلت: ولم يتكلم عليه بشيء. رابعا: أن أبا يحيى هذا الذي رواه عنه مسدد لم أعرفه، ولم يذكره في " الجامع الكبير " (5 / 2) من حديثه أصلا، وإنما ذكره من حديث ابن عمر من رواية مسدد والديلمي. والله أعلم ثم رأيت الحديث في " الحلية " عن أنس بإسناد ضعيف جدا في ضمن حديث سيأتي برقم (1598) . ثم إن في إسناده عند الديلمي (1 / 1 / 18 - مختصره) إسحاق بن كعب، قال المناوي: " قال الذهبي: " ضعف "، عن عبد الصمد بن سليمان. قال الدارقطني: متروك، عن قزعة بن سويد. قال أحمد: مضطرب الحديث. وأبو حاتم : لا يحتج به، عن عبد الله بن دينار، غير قوي قلت: ولفظ حديث جابر عند الحاكم: " أبردوا الطعام الحار، فإن الطعام الحار غير ذي بركة ". ذكره شاهدا، ولا يصلح لذلك، لأن فيه محمد بن عبيد الله العرزمي، وهو شديد الضعف، قال الذهبي والعسقلاني: " متروك ". وفي إسناد حديث أبي هريرة عبد الله بن يزيد البكري قال الهيثمي (5 / 20) : " وقد ضعفه أبو حاتم قلت: ولوقال: " ضعفه جدا " لكان أقرب إلى لفظ أبي حاتم، فإنه قال: " ضعيف الحديث، ذاهب الحديث " كما في كتاب ابنه عنه (2 / 2 / 201) فقد فسر قوله: " ضعيف الحديث " بقوله: " ذاهب الحديث "، وهو كناية عن شدة ضعفه والله أعلم. وبالجملة، فالحديث عندي ضعيف، لعدم وجود شاهد معتبر له. والله أعلم. وفي الباب عن عائشة بلفظ: " بردوا طعامكم يبارك لكم فيه ". ولكن إسناده ضعيف جدا، كما سيأتي تحقيقه برقم (1654)