৯১০

পরিচ্ছেদঃ

৯১০। হে জিবরীল আপনি আমাকে আগুনের রূপ বর্ণনা করুন। আমাকে আপনি জাহান্নামের বিবরণ দিন। জিবরীল বললেনঃ আল্লাহ তা’আলা জাহান্নামকে নির্দেশ দিলেন ফলে আগুনের উপর এক হাজার বছর সাদা না হওয়া পর্যন্ত জ্বলতে থাকলো। আবার তাকে নির্দেশ দিলেন ফলে সে তার উপর এক হাজার বছর লাল না হওয়া পর্যন্ত জ্বলতে থাকলো। আবার তাকে নির্দেশ দিলেন ফলে সে তার উপর এক হাজার বছর কালো না হওয়া পর্যন্ত জ্বলতে থাকলো। সেটি কালো অন্ধকার। তার অগ্নিস্ফুলিঙ্গ কখনও আলোকিত হবে না এবং তার প্রজ্জ্বলিত হওয়া কখনও নিভে যাবে না। সেই সত্তার শপথ যিনি আপনাকে সত্য সহকারে প্রেরণ করেছেন যদি জাহান্নামের একজন পাহাদার দুনিয়াবাসীদের নিকট প্রকাশ পেত আর তারা তার দিকে দৃষ্টি দিত তাহলে তার চেহারার বীভৎসতা ও তার দুর্গন্ধের ভয়াবহতার কারণে দুনিয়ার সকল বসবাসকারীই মারা যেত।

সেই সত্তার শপথ যিনি আপনাকে সত্য সহকারে প্রেরণ করেছেন যদি জাহান্নামীদের বালাগুলোর একটি বালা দুনিয়ার পাহাড়গুলোর উপর রেখে দেয়া হতো যেগুলো সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা তার গ্রন্থে আলোচনা করেছেন, তাহলে সেগুলো ছিন্নভিন্ন হয়ে যেত আর যমীনের সর্বনিম্ন স্তরে না পোঁছা পর্যন্ত স্থিতিশীল হতো না।

অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যথেষ্ট হয়েছে হে জিবরীল! আমার হৃদয় যেন না ফেটে যায়, ফলে আমি মৃত্যু বরণ করি। বর্ণনাকারী বলেনঃ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিবরীলকে কাঁদতে দেখে বললেনঃ হে জিবরীল! আপনি কাঁদছেন অথচ আপনার অবস্থান আল্লাহর কাছে যেখানে আপনি আছেন সেখানেই। তখন তিনি উত্তরে বললেনঃ আমার কী হয়েছে আমি কাদবো না? আমিই তো কাঁদার বেশী উপযোগী হতে পারে আমাকে পরীক্ষায় পড়তে হতে হবে যেভাবে ইবলীসকে পরীক্ষায় পড়তে হয়েছিল। সে ছিল ফেরেশতাদের একজন। জানি না আমাকে হয়তো সেরূপ পরীক্ষায় পড়তে হতে পারে যেরূপ হারূত মারূত পরীক্ষায় পড়েছিল।

বর্ণনাকারী বললেনঃ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাঁদতে শুরু করলেন আর জিবরীলও কাঁদতে শুরু করলেন। তারা দু’জনে কাঁদা অব্যাহত রাখলো এমতাবস্থায় উভয়কেই ডাক দেয়া হলোঃ হে জিবরীল, হে মুহাম্মাদ! আল্লাহ তা’আলা তোমাদের দু’জনকে তাঁর নাফারমানী করা হতে নিরাপদে রেখেছেন। অতঃপর জিবরীল উঠে চলে গেলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও বেরিয়ে আসলেন। তারপর তিনি আনসারদের একটি সম্প্রদায়কে অতিক্রম করছিলেন যারা হাসছিল এবং খেলাধুলা করছিল। তিনি তাদেরকে লক্ষ্য করে বললেনঃ তোমরা হাসছ আর তোমাদের পিছনে জাহান্নাম? আমি যা জানি তোমরা যদি তা জানতে তাহলে অবশ্যই তোমরা হাসতে কম আর কাঁদতে বেশী। আর খাদ্য ও পানীয়কে কখনও সুস্বাদু পেতে না। তোমরা উঁচু স্থানের সন্ধানে বেরিয়ে যেতে আল্লাহ তা’আলার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করতে। ডাক দেয়া হলোঃ হে মুহাম্মাদ। আপনি আমার বান্দাদেরকে নিরাশ করবেন না। আমি আপনাকে সরল করে প্রেরণ করেছি, কঠোরতা প্রদর্শনকারী হিসাবে প্রেরণ করিনি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা সৎপথ প্রদর্শন করো আর পরস্পরে নিকটবর্তী হও।

হাদীছটি জাল।

এটি তাবারানী “আল-আওসাত” গ্রন্থে তার সনদে উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন। হায়ছামী "আল-মাজমা" (১০/৩৮৭) গ্রন্থে হাদীছটির সমস্যা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেনঃ তাতে সাল্লাম আত-তাবীল রয়েছেন, তার দুর্বল হওয়ার বিষয়ে সকলে একমত।

আমি (আলবানী) বলছিঃ কারণ তিনি একজন মিথ্যুক ছিলেন যেমনটি ইবনু খাররাশ বলেছেন।

ইবনু হিব্বান (১/৩৩৫-৩৩৬) বলেনঃ তিনি নির্ভরযোগ্যদের উদ্ধৃতিতে বানোয়াট হাদীছ বর্ণনা করেছেন। তিনি যেন তা ইচ্ছাকৃতই করতেন। হাকিম শিথিলতা প্রদর্শনকারী হওয়া সত্ত্বেও বলেছেনঃ তিনি কতিপয় বানোয়াট হাদীছ বর্ণনা করেছেন। এটি নিঃসন্দেহে সেগুলোর অন্তর্ভুক্ত।

হাদীছটি দুটি স্থানে কুরআনের বিরোধীঃ

১। বলা হয়েছে যে, ইবলীস ছিল ফেরেশতাদের অন্তর্ভুক্ত। অথচ আল্লাহ তা’আলা বলছেন যে, সে ছিল জিন সম্প্রদায়ভুক্ত। এর প্রমাণ এই যে তাকে আগুন হতে সৃষ্টি করা হয়েছে যেমনটি কুরআনে এসেছে আর ফেরেশতাদেরকে নূর দ্বারা সৃষ্টি করা হয়েছে যেমনটি সহীহ মুসলিমে এসেছে।

২। হাদীছটিতে বলা হয়েছে, যেরূপ হারূত মারূত পরীক্ষায় পড়েছিল। কোন কোন তাফসীর গ্রন্থে এসেছে তাদের দু’জনকে যমীনে নামানো হয়েছিল। তারা উভয়ে মদ পান করেছিল, যেনা করেছিল, না হকভাবে একজনকে হত্যা করেছিল। এগুলো ফেরেশতাদের শানে বর্ণিত আল্লাহর কালাম বিরোধী। কারণ আল্লাহ তা’আলা বলেছেনঃ

لَّا يَعْصُونَ اللَّهَ مَا أَمَرَهُمْ وَيَفْعَلُونَ مَا يُؤْمَرُونَ

"আল্লাহ্‌ তা’আলা তাদেরকে যে বিষয়ে নির্দেশ দেন তারা তার নাফারমানী করেন না এবং তারা তাই করেন যা তাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়।"

يا جبريل صف لي النار، وانعت لي جهنم، فقال جبريل: إن الله تبارك وتعالى أمر بجهنم فأو قد عليها ألف عام حتى ابيضت، ثم أمر بها فأو قد عليها ألف عام حتى احمرت، ثم أمر فأو قد عليها ألف عام حتى اسودت، فهي سوداء مظلمة، لا يضيء شررها، ولا يطفأ لهبها، والذي بعثك بالحق لوأن خازنا من خزنة جهنم برز إلى أهل الدنيا فنظروا إليه لمات من في الأرض كلهم من قبح وجهه، ومن نتن ريحه، والذي بعثك بالحق لوأن حلقة من حلق سلسلة أهل النار التي نعت الله في كتابه وضعت على جبال الدنيا لارفضت وما تقارت حتى تنتهي إلى الأرض السفلى، فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: حسبي يا جبريل لا يتصدع قلبي، فأموت، قال: فنظر رسول الله صلى الله عليه وسلم إلى جبريل وهو يبكي، فقال: تبكي يا جبريل وأنت من الله بالمكان الذي أنت به، فقال: مالي لا أبكي؟ أنا أحق بالبكاء! لعلي ابتلى بما ابتلي به إبليس، فقد كان من الملائكة، وما أدري لعلي ابتلي مثل ما ابتلي به هاروت وماروت، قال: فبكى رسول الله صلى الله عليه وسلم وبكى جبريل عليه السلام، فما زالا يبكيان حتى نوديا: أن يا جبريل ويا محمد إن الله عز وجل قد أمنكما أن تعصياه، فارتفع جبريل عليه السلام، وخرج رسول الله صلى الله عليه وسلم فمر بقوم من الأنصار يضحكون ويلعبون، فقال: أتضحكون ووراءكم جهنم؟! لوتعلمون ما أعلم لضحكتم قليلا ولبكيتم كثيرا، ولما أسغتم الطعام والشراب، ولخرجتم إلى الصعدات تجأرون إلى الله عز وجل.. فنودي: يا محمد! لا تقنط عبادي، إنما بعثتك ميسرا ولم أبعثك معسرا فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: سددوا وقاربوا موضوع - أخرجه الطبراني في " الأوسط " بسنده عن عمر بن الخطاب قال: " جاء جبريل إلى النبي صلى الله عليه وسلم في حين غير حينه الذي كان يأتيه فيه، فقام إليه رسول الله صلى الله عليه وسلم فقال: يا جبريل: مالي أراك متغير اللون؟ فقال: ما جئتك حتى أمر الله بمفاتيح النار، فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: يا جبريل صف لي النار. الحديث، أورده المنذري في " الترغيب والترهيب " (4 / 225 - 226) وأشار لضعفه أو وضعه، وقد بين علته الهيثمي في " المجمع " فقال (10 / 387) : " وفيه سلام الطويل وهو مجمع على ضعفه قلت: وذلك لأنه كان كذابا كما قال ابن خراش، وقال ابن حبان: (1 / 335 - 336) : " روى عن الثقات الموضوعات، كأنه كان المعتمد لها ". وقال الحاكم - على تساهله -: " روى أحاديث موضوعة قلت: وهذا منها بلا شك فإن التركيب والصنع عليه ظاهر، ثم إن فيه ما هو مخالف للقرآن الكريم في موضعين منه الأول: قوله في إبليس: " كان من الملائكة " والله عز وجل يقول فيه: (كان من الجن ففسق عن أمر ربه) ، وما يروى عن ابن عباس في تفسير قوله: (من الجن) أي من خزان الجنان، وأن إبليس كان من الملائكة، فمما لا يصح إسناده عنه، ومما يبطله أنه خلق من نار كما ثبت في القرآن الكريم، والملائكة خلقت من نور كما في " صحيح مسلم " عن عائشة مرفوعا، فكيف يصح أن يكون منهم خلقة، وإنما دخل معهم في الأمر بالسجود لآدم عليه السلام لأنه كان قد تشبه بهم وتعبد وتنسك، كما قال الحافظ ابن كثير، وقد صح عن الحسن البصري أنه قال: " ما كان إبليس من الملائكة طرفة عين قط وإنه لأصل الجن، كما أن آدم عليه السلام أصل البشر الموضع الثاني: قوله: " ابتلي به هاروت وماروت ". فإن فيه إشارة إلى ما ذكر في بعض كتب التفسير أنهما أنزلا إلى الأرض، وأنهما شربا الخمر وزنيا وقتلا النفس بغير، فهذا مخالف لقول الله تعالى في حق الملائكة: (لا يعصون الله ما أمرهم ويفعلون ما يؤمرون) ، ولم يرد ما يشهد لما ذكر، إلا في بعض الإسرائيليات التي لا ينبغي أن يوثق بها، وإلا في حديث مرفوع، قد يتوهم - بل أوهم - بعضهم صحته، وهو منكر بل باطل كما سبق تحقيقه برقم 170، ويأتي بعد حديث من وجه آخر


হাদিসের মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ