৩৭৫৮

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - বিচারকার্য এবং সাক্ষ্যদান

’আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেনঃ বিচারকের নিকট যে মুকদ্দামাহ্ পেশ করা হয় তাকে বিচার বলে। আযহারী (রহঃ) বলেনঃ কোনো বিষয়ে বিচারকার্য শেষ করাকে কাযাউ বা বিচারকার্য বলা হয়।

কুরআন কারীমে আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ ’’আমি বনী ইসরাঈলের নিকট ফায়সালা করেছিলাম’’- (সূরা বনী ইসরাঈল ১৭ : ৪)। হাকিম-কে কাযী বলা হয় এ কারণে যে, তিনি আইন-কানুন মেনে বিচার ফায়সালা করে থাকেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


৩৭৫৮-[১] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ লোকেদের কোনো দাবির ভিত্তিতেই যদি তাদের পক্ষে রায় দেয়া হয়, তাহলে অনেকেই পরস্পরের মধ্যে লোকেদের জান ও মাল (মিথ্যা দাবি করে) আত্মহরণ করতে থাকবে। এজন্য বিবাদীর ওপর কসম অবধারিত। (মুসলিম)

তবে মুসলিম-এর শারহেন্ নববীতে আছে, তিনি বলেন, বায়হাক্বীর বর্ণনাতে হাসান অথবা সহীহ সানাদ দ্বারা আরো অতিরিক্ত শব্দ ইবনু ’আব্বাস থেকে মারফূ’ সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। আর তা হলো- সাক্ষ্য-প্রমাণ বাদী পক্ষ দাখিল করবে আর বিবাদী বা প্রতিপক্ষের ওপর কসম অত্যাবশ্যকীয় হবে।[1]

بَابُ الْأَقْضِيَةِ وَالشَّهَادَاتِ

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَوْ يُعْطَى النَّاسُ بِدَعْوَاهُمْ لَادَّعَى نَاسٌ دِمَاءَ رِجَالٍ وَأَمْوَالَهُمْ وَلَكِنَّ الْيَمِينَ عَلَى الْمُدَّعَى عَلَيْهِ» . رَوَاهُ مُسْلِمٌ وَفِي «شَرْحِهِ لِلنَّوَوِيِّ» أَنَّهُ قَالَ: وَجَاءَ فِي رِوَايَةِ «الْبَيْهَقِيِّ» بِإِسْنَادٍ حَسَنٍ أَوْ صَحِيحٍ زِيَادَةٌ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ مَرْفُوعًا: «لَكِنَّ الْبَيِّنَةَ على المدَّعي واليمينَ على مَنْ أنكر»

ব্যাখ্যা: হাদীসটি বিচারকার্য সম্পাদনের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ গাইডলাইন। এতে বলা হয়েছে, বিচারকার্যকে কোনো মানুষের ইচ্ছা-অনিচ্ছার উপর ছেড়ে দেয়া যাবে না, বরং বিচারকার্য সম্পাদনে বিচারকরা সম্পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করবেন।

হাদীস থেকে বুঝা যায়:

(ক) মনমত তথা মনে যা চায় সেরূপ বিচার করা বৈধ নয়।

(খ) বিচার হবে শারী‘আহ্নীতি অনুসরণের মাধ্যমে।

(গ) মানুষের রক্ত ও সম্পদ রক্ষা করা এক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।

(ঘ) যদি কেউ কোনো জিনিসের দাবী করে তাহলে তাকে অবশ্যই দলীল পেশ করতে হবে- আর যে অস্বীকার করবে তাকে শপথ করতে হবে।

অত্র হাদীসের ব্যাখ্যায় ইমাম নববী (রহঃ) বলেছেনঃ হাদীসটি একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম বলে দিচ্ছে বিচারকার্য সম্পাদনের ক্ষেত্রে। সুতরাং এ হাদীসে রয়েছে কোনো মানুষের শুধুমাত্র তার দাবীর প্রেক্ষিতেই তার স্বপক্ষে বিচার করা বৈধ হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত সে দলীল বা তার সঠিকতা প্রমাণ না করতে পারে। এর রহস্য বা কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই বলেছেন, যদি প্রমাণবিহীন ফায়সালা করা হয় তাহলে সবাই বিনা প্রমাণে অপর মানুষের রক্ত ও সম্পদ দাবী করে বসবে। (ফাতহুল বারী ৮ম খন্ড, হাঃ ৪৫৫২; শারহে মুসলিম ১২শ খন্ড, হাঃ ১৭১১; মিরকাতুল মাফাতীহ)