৩৪০৬

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

৩৪০৬-[১] ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অধিকাংশ সময় ’মুকল্লিবিল কুলূব’ (অন্তর পরিবর্তনকারী) বলে কসম করতেন। (বুখারী)[1]

اَلْفَصْلُ الْأَوَّلُ

عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا أَكْثَرُ مَا كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يحلف: «لَا ومقلب الْقُلُوب» . رَوَاهُ البُخَارِيّ

ব্যাখ্যা: হাদীসে সুস্পষ্ট প্রমাণিত হয়, যে হৃদয়ের ‘আমল যা ইচ্ছাশক্তি হতে আসে এবং সকল ‘আমল সবই আল্লাহরই সৃষ্টি। হাদীসে আরও বৈধতা প্রমাণিত হয় যে, এমন সিফাত যা আল্লাহর শানে প্রযোজ্য তা দিয়ে শুরু করা বৈধ।

হাদীসে আরও প্রমাণিত হয়, যে ব্যক্তি আল্লাহর সিফাত দ্বারা কসম করে পরে আবার তা ভঙ্গ করে তার জন্য কাফফারা বা জরিমানা অপরিহার্য- এ ব্যাপারে মূলত কোনো মতানৈক্য নেই। মতানৈক্য হলো কোনো সিফাত তথা গুণ দ্বারা কসম সংঘটিত হবে আর এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট সে কসমে তার সাথে অন্য কাউকে না বাড়ায়। যেমন- (مُقَلِّبِ الْقُلُوبِ) অন্তর নিয়ন্ত্রণ পরিবর্তনকারী প্রভু।

কাযী আবূ বাকর ইবনু ‘আরাবী বলেনঃ হাদীসে বৈধতা প্রমাণ করে আল্লাহর কার্যাবলী দ্বারা কসম করা বৈধ যখন গুণে পরিণত হয় আর যদিও তার নাম উল্লেখ না করে। আর হানাফীরা পার্থক্য করেন ক্ষমতা এবং জ্ঞানের মাঝে। তারা বলেন, আল্লাহর ক্ষমতা দ্বারা কসম করা বৈধ। আর জ্ঞান দ্বারা কসম করলে তা সংঘঠিত হবে না।
আর রাগিব বলেনঃ ‘‘আল্লাহর পরিবর্তন করা অন্তর ও চোখকে’’ এর অর্থ হলো এক সিদ্ধান্ত হতে আর এক সিদ্ধান্তে পরিবর্তন করা। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বাণী (সূরা আন্ নাহল ১৬ : ৪৬) : أَوْ يَأْخُذَهُمْ فِي تَقَلُّبِهِمْ আর বহুল পরিমাণে পরিবর্তনের কারণে কলবকে কলব বলা হয়।

কখনও কখনও এ অর্থ হতে বের হয়ে অন্যান্য নির্ধারিত কিছু অর্থে ব্যবহৃত হয়। যেমন রূহ, জ্ঞান, সাহসিকতা।

রূহের অর্থে الْقُلُوب الْحَنَاجِر আর জানা বা জ্ঞান অর্থে لِمَنْ كَانَ لَه قَلْبٌ সাহস অর্থে وَلِتَطْمَئِنَّ بِه قُلُوبُكُمْ।

কাযী আবূ বাকর বলেন, কলব হলো শরীরেরই অংশ যা আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন আর তা মানুষের জন্য জ্ঞান ও কথাবার্তা এবং অন্যান্য কিছুর বাতেনী তথা লুকায়িত সিফাতের স্থান আর শরীরের দৃশ্যমানকে কার্যক্রম ও বলার স্থান বানিয়েছেন।

আর অন্তরে মালাক (ফেরেশতা) নিয়োগ করে যে কল্যাণের পথে পরিচালিত করে আর শায়ত্বনকেও নিয়োগ করেছেন যে অকল্যাণের পথে পরিচালিত করে। আর আক্ল তার আলো দিয়ে তাকে হিদায়াতে পরিচালিত করে এবং প্রবৃত্তি তার অন্ধকার দিয়ে পথভ্রষ্টতার দিকে পরিচালিত করে। আর তাকদীর প্রত্যেকের ব্যাপৃত এবং কলব ভালো মন্দ ও দু’টোর মধ্যে পরিবর্তন হয়। কখনও বন্ধুত্ব মালায়িকার পক্ষ হতে কখনও শায়ত্বনের পক্ষ হতে আর তার হিফাযাত আল্লাহর পক্ষ হতেই। (ফাতহুল বারী ১১শ খন্ড, হাঃ ৬৬২৮)