৩২৪৭

পরিচ্ছেদঃ ১০. প্রথম অনুচ্ছেদ - স্ত্রীদের সাথে সদ্ব্যবহার এবং তাদের প্রত্যেকের (স্বামী-স্ত্রীর) পারস্পরিক হক ও অধিকার সংক্রান্ত

৩২৪৭-[১০] আসমা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈকা স্ত্রীলোক জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রসূল! আমার এক সতীন আছে। অতঃপর আমি যদি ঐ সতীনের নিকট আমার স্বামী যা আমাকে দেয়নি তা পেয়েছি বলে প্রকাশ করি, তাতে কি আমার গুনাহ হবে? তদুত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, না পেয়েও পেয়েছি বলে প্রকাশ করা যেন দ্বিগুণ মিথ্যুক, সে যেন মিথ্যার দু’খানা পোশাক পরিধানকারী। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ عِشْرَةِ النِّسَاءِ وَمَا لِكُلِّ وَاحِدَةِ مِّنَ الْحُقُوْقِ

وَعَنْ أَسْمَاءَ أَنَّ امْرَأَةً قَالَتْ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ لِي ضَرَّةً فَهَلْ عَلَيَّ جُنَاحٌ إِنْ تَشَبَّعْتُ مِنْ زَوْجِي غَيْرَ الَّذِي يُعْطِينِي؟ فَقَالَ: «الْمُتَشَبِّعُ بِمَا لَمْ يُعْطَ كَلَابِسِ ثَوْبَيْ زُورٍ»

ব্যাখ্যা: ‘আরবীতে ضَرَّةٌ এর অর্থ সতীন। ضَرَّةٌ আভিধানিক অর্থ ক্ষতি, অনিষ্ট, অপকারিতা ইত্যাদি। সতীন হলো স্বামীর অন্য স্ত্রী। একজন পুরুষের দু’জন স্ত্রী থাকলে স্ত্রীদ্বয় পরস্পর সতীন। একাধিক স্ত্রী পরস্পর একে অপরের জন্য ক্ষতির কারণ। সতীন হিংসা অথবা পরশ্রীকাতরতার কারণে অপরের ক্ষতি করে অথবা তাকে নিয়ে ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে, এজন্য ‘আরবেরা একাধিক স্ত্রীকে ضَرَّةٌ ‘ক্ষতি’ নামে নামাঙ্কিত করেছে, যার সহজ বাংলা রূপ হলো সতীন। অবশ্য মুবালাগাহ্ বা আধিক্য হিসেবে এটা বলা হয়েছে। ‘আরবেরা একে طَبَةٌ (ত্ববাহ্)-ও বলে থাকে যার অর্থ পারদর্শিতা। যেহেতু সতীন একজনের জন্য ক্ষতির ব্যাপারে পারদর্শী হয়ে থাকে বা তার থেকে ক্ষতির আশংকা থেকে থাকে, তাই তাকে বলা হয়। এটা এজন্য যে, সতীন সতীনের দোষ অনুসন্ধানে সচেতন, পারদর্শী ও বিচক্ষণও বটে।

মহিলাটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে জানতে চাইলেন তার স্বামী তাকে যা প্রদান করে তার সতীনের কাছে তার চেয়ে বেশি প্রকাশ করা বৈধ কিনা? এর উদ্দেশ্য হলো যাতে স্বামী তার নিজের কাছে অধিক প্রিয় হয় এবং সতীনের মধ্যে গোস্বা সৃষ্টি হয় ফলে এর দ্বারা সতীনের ক্ষতি হয় আর স্বামী তার প্রিয় হয়। এর উত্তরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা বলেছেন তা স্পষ্ট। তিনি বললেন, না পেয়ে পাওয়ার ভান করা বা মিথ্যা পরিতৃপ্ত হওয়ার আচ্ছাদন প্রদর্শন করার দৃষ্টান্ত হলো মিথ্যা দু’টি পোশাক পরিধান করা। এ পোশাক দু’টি হয় আমানত অথবা পরের কাছ থেকে ধার করা বা চেয়ে নেয়া পোশাক। মানুষ তাকে দেখে মনে করবে এই চাকচিক্য সুন্দর দৃষ্টি নন্দন পোশাকটি কতই না সুন্দর এ পোশাকটি হয় তো বা তার নিজের, কিন্তু মূলতঃ তার নয়। অথবা কোনো সাধারণ ব্যক্তি বড় কোনো আবিদ যাহিদ আল্লাহওয়ালার পরহেজগারীর আসকান, জুববা ইত্যাদি পরিধান করে নিজেকে মিছামিছি আল্লাহওয়ালা দরবেশ প্রমাণ করতে চাওয়া। এটা যেমন প্রতারণা এবং গুনাহের কাজ ঠিক তেমনি স্বামীর দেয়া কোনো কিছুকে বাড়িয়ে বলা ও প্রকাশ করাও প্রতারণা, বিশেষ করে অন্য সতীনের কাছে প্রকাশ করা গুনাহের কাজ। (ফাতহুল বারী ৯ম খঃ হাঃ ৫২১৯; শারহে মুসলিম ১৪শ খন্ড, হাঃ ২১৩০; মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ