২৯৪০

পরিচ্ছেদঃ ১১. প্রথম অনুচ্ছেদ - কারো সম্পদে অন্যায় হস্তক্ষেপ, ঋণ ও ক্ষতিপূরণ

২৯৪০-[৩] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর জনৈকা সহধর্মিণীর ঘরে ছিলেন। তখন উম্মুল মু’মিনীনদের অপর একজন বড় পেয়ালায় করে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য কিছু খাদ্য পাঠালেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাঁর ঘরে ছিলেন তিনি খাদিমের হাতে আঘাত করলে তা পড়ে ভেঙ্গে গেল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পেয়ালার টুকরাগুলো একত্র করলেন এবং তাতে যে খাদ্য ছিল তা জমা করতে লাগলেন। আর বললেন, তোমাদের উম্মুল মু’মিনীন ঈর্ষান্বিত হয়েছেন। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) খাদিমকে ঐ পর্যন্ত আটকে রাখলেন যে পর্যন্ত না যাঁর ঘরে ছিলেন তাঁর ঘর হতে একটি ভালো পেয়ালা আনা হলো। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যাঁর পেয়ালা ভাঙ্গা হয়েছিল তাঁকে ভালো পেয়ালাটি দিলেন এবং ভাঙ্গাটি তাঁর জন্য রাখলেন যিনি তা ভেঙ্গেছেন। (বুখারী)[1]

بَابُ الْغَصْبِ وَالْعَارِيَةِ

وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عِنْدَ بَعْضِ نِسَائِهِ فَأَرْسَلَتْ إِحْدَى أُمَّهَاتِ الْمُؤْمِنِينَ بِصَحْفَةٍ فِيهَا طَعَامٌ فَضَرَبَتِ الَّتِي النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي بَيْتِهَا يَدَ الْخَادِمِ فَسَقَطَتِ الصَّحْفَةُ فَانْفَلَقَتْ فَجَمَعَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِلَقَ الصَّحْفَةِ ثُمَّ جَعَلَ يَجْمَعُ فِيهَا الطَّعَامَ الَّذِي كَانَ فِي الصَّحْفَةِ وَيَقُولُ: «غَارَتْ أُمُّكُمْ» ثُمَّ حَبَسَ الْخَادِمَ حَتَّى أُتِيَ بِصَحْفَةٍ مِنْ عِنْدِ الَّتِي هُوَ فِي بَيْتُهَا فَدَفَعَ الصَّحْفَةَ الصَّحِيحَةَ إِلَى الَّتِي كُسِرَتْ صَحْفَتُهَا وَأَمْسَكَ الْمَكْسُورَةَ فِي بَيْتِ الَّتِي كَسَرَتْ. رَوَاهُ البُخَارِيّ

ব্যাখ্যা: (غَارَتْ أُمُّكُمْ) যারা উপস্থিত ছিল তাদেরকে সম্বোধন করা হয়েছে, الأم তথা ‘‘মা’’ কথা দ্বারা ঐ নারী উদ্দেশ্য যিনি পেয়ালাটি ভেঙ্গে ছিলেন, আর তিনি হলেন মু’মিনদের মা ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)। দাঊদী বাড়াবাড়ী করে বলেন, (أمكم) উক্তি দ্বারা ‘‘সারাহ’’ উদ্দেশ্য, তাঁর নিকট কথাটির অর্থ এরূপ যে, অভিমান সংঘটিত হয়েছে তার দরুন তোমরা আশ্চর্যবোধ করো না, কেননা ইতিপূর্বে তোমাদের মা অভিমান করেছিল। পরিশেষে ইব্রাহীম (আঃ) তাঁর ছেলে ইসমা‘ঈল (আঃ)-কে বাড়ী হতে বের করে দেন। এমতাবস্থায় ইসমা‘ঈল ছোট শিশু তাঁর মাতার সাথে শস্যহীন উপত্যকার দিকে ছুটে যান। যদিও এর কতিপয় দিক রয়েছে, কিন্তু উদ্দেশ্য এর বিপরীত। আর উদ্দেশ্য হলো, পেয়ালা ভাংচুরকারিণী। যারা এ হাদীসের ব্যাখ্যা করেছে তারা সকলে এ অর্থই করেছেন। আর তারা বলেছেন, আত্ম-সম্মানবোধের কারণে যা কিছু ঘটে তাতে তাকে দায়ী না করার প্রতি ইঙ্গিত রয়েছে, কেননা ঐ মুহূর্তে ক্রোধের কারণে জ্ঞান বাধাপ্রাপ্ত হওয়ায় বিবেক জাগিয়ে তোলা কঠিন।

আবূ ইয়া‘লা (لا بأس به) ‘নির্দোষ’ সূত্রে ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে মারফূ‘ভাবে বর্ণনা করেন, ‘‘নিশ্চয় আত্ম-সম্মানবোধের কারণে রাগান্বিত ব্যক্তি উপত্যকার উপরাংশ অপেক্ষা নিম্নাংশের দিকে দৃষ্টি দেয় না।’’ এটা তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কোনো এক ঘটনায় বলেন।

‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস্‘ঊদ (রাঃ) হতে মারফূ‘ সূত্রে বর্ণিত, ‘‘নিশ্চয় আল্লাহ নারীদের ওপর আত্ম-সম্মানবোধ আবশ্যক করে দিয়েছেন। সুতরাং তাদের মধ্যে যে ধৈর্য ধারণ করবে তার জন্য একজন শাহীদের সাওয়াব থাকবে।’’ বায্যার একে সংকলন করে একে বিশুদ্ধতার দিকে ইঙ্গিত করেছেন। এর বর্ণনাকারীগণ নির্ভরযোগ্য তবে তাদের মাঝে ‘উবায়দ বিন সববাহ-এর ব্যাপারে মতানৈক্য করা হয়েছে। আর ‘‘সারাহ’’-এর ব্যাপারে দাঊদীর প্রয়োগ যে, ‘‘তিনি সম্বোধিতদের মা’’। এতে বিবেচনার বিষয় আছে, কেননা তারা যদি ইসমা‘ঈল (আঃ)-এর বংশধর হয় তাহলে তাদের মা হবে হাজেরা, সারাহ্ নয়; পক্ষান্তরে তারা বানু ইসরাঈল বংশধরের হওয়া সুদূর পরাহত। অতএব সারাহ্ তাদের ‘‘মা’’ হওয়া ‘‘বিশুদ্ধতার মাপকাঠিতে অসম্ভব।’’ (ফাতহুল বারী ১০ম খন্ড, হাঃ ৫২২৫)