২৯০৯

পরিচ্ছেদঃ ৯. প্রথম অনুচ্ছেদ - দেউলিয়া (দারিদ্র্য) হওয়া এবং ঋণীকে অবকাশ দান

২৯০৯-[১১] সালামাহ্ ইবনুল আক্ওয়া’ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে বসা ছিলাম। এমতাবস্থায় একটি জানাযা উপস্থিত করা হলো। লোকেরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জানাযার সালাত আদায়ের অনুরোধ করলো। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, মৃত লোকের ওপর কোনো ঋণ আছে কি? তারা বলল, না। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জানাযার সালাত আদায় করলেন। অতঃপর অপর একটি জানাযা আনা হলো। সেটির ব্যাপারেও তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, মৃত ব্যক্তির ওপর কোনো ঋণ আছে কি? তখন বলা হলো, হ্যাঁ, আছে। জিজ্ঞেস করলেন, (ঋণ পরিশোধে) কোনো কিছু রেখে গেছে কি? লোকেরা বলল, হ্যাঁ, তিনটি স্বর্ণমুদ্রা রেখে গেছে। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ জানাযার সালাত আদায় করলেন।

অতঃপর আরেকটি জানাযা উপস্থিত করা হলে সেটির ব্যাপারেও তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, তার ওপর কোনো ঋণ আছে কি? লোকেরা বলল, তিনটি স্বর্ণমুদ্রা তার ওপর ঋণ আছে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, কিছু রেখে গেছে কি? লোকেরা বলল, না। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমরা তোমাদের ভাইয়ের জানাযার সালাত আদায় করে নাও। আবূ কাতাদাহ (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রসূল! এ লোকের জানাযার সালাত আদায় করিয়ে দিন, আমি তার ঋণ পরিশোধের দায়িত্ব নিলাম। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার জানাযার সালাত আদায় করিয়ে দিলেন। (বুখারী)[1]

بَابُ الْإفْلَاسِ وَالْاِنْظَارِ

وَعَن سَلمَة بن الْأَكْوَع قَالَ: كُنَّا جُلُوسًا عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذْ أُتِيَ بِجِنَازَةٍ فَقَالُوا: صَلِّ عَلَيْهَا فَقَالَ: «هَلْ عَلَيْهِ دَيْنٌ؟» قَالُوا: لَا فَصَلَّى عَلَيْهَا ثُمَّ أُتِيَ بِجِنَازَةٍ أُخْرَى فَقَالَ: «هَل عَلَيْهِ دين؟» قَالُوا: نعم فَقَالَ: «فَهَلْ تَرَكَ شَيْئًا؟» قَالُوا: ثَلَاثَةَ دَنَانِيرَ فَصَلَّى عَلَيْهَا ثمَّ أُتِي بالثالثة فَقَالَ: «هَلْ عَلَيْهِ دَيْنٌ؟» قَالُوا: ثَلَاثَةُ دَنَانِيرَ قَالَ: «هَلْ تَرَكَ شَيْئًا؟» قَالُوا: لَا قَالَ: «صلوا على صَاحبكُم» قَالَ أَبُو قَتَادَة: صلى الله عَلَيْهِ وَسلم عَلَيْهِ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَعَلَيَّ دَيْنُهُ فَصَلَّى عَلَيْهِ. رَوَاهُ البُخَارِيّ

ব্যাখ্যা: দারাকুত্বনীতে ‘আলী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত রয়েছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কোনো জানাযায় যেতেন তখন মৃত ব্যক্তির ‘আমল সম্পর্কে কোনো কিছু জিজ্ঞেস করতেন না, বরং তিনি তার ঋণ আছে কিনা এটা জিজ্ঞেস করতেন, যদি বলা হত ঋণ আছে তবে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সে জানাযা হতে নিজেকে বিরত রাখতেন। আর যদি বলা হত তার কোনো ঋণ নেই, তবে তিনি জানাযার সালাত আদায় করতেন। একবার আগন্তুক এক জানাযায় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর তাকবীর দেয়া মুহূর্তে তাকে বলা হলো, তার দুই দিরহাম ঋণ রয়েছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানাযা থেকে বিরত হলেন এবং ‘আলী উক্ত ঋণের দায়িত্ব নিলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানাযা আদায় করলেন এবং ‘আলী -এর জন্য দু‘আ করলেন। ‘‘জাযা-কাল্লা-হু খইরান ওয়া ফাক্কাল্লা-হু রাহানাক’’ অর্থাৎ- আল্লাহ তোমাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন এবং আল্লাহ তোমার ঋণের বোঝা হালকা করুন।

ইবনুল বাত্ত্বল (রহঃ) বলেনঃ জুমহূর ‘উলামাগণের মতে ঋণের দায়িত্ব নেয়া বৈধ। কেউ দায়িত্ব নিলে এ ঋণ পরিশোধ মৃত ব্যক্তির পরিত্যক্ত সম্পদের দিকে বর্তাবে না। ইমাম মালিক (রহঃ)-এর মতে বর্তাবে। ইমাম আবূ হানীফাহ্ (রহঃ)-এর মতে মৃত ব্যক্তি ঋণ পরিশোধের মতো সম্পদ থাকলে ঋণের জিম্মাদার ব্যক্তি তা থেকে ঋণ পরিশোধ করতে পারবে। আর মৃত ব্যক্তির ঋণ পরিশোধের মতো সম্পদ না থাকলে, জিম্মাদারের নিজের পক্ষ হতে ঋণ পরিশোধ করতে হবে। (ফাতহুল বারী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ২২৮৯)