৩৯১

পরিচ্ছেদঃ

৩৯১। উবাইদুল্লাহ বিন আবদুল্লাহ বিন উতবা বিন মাসউদ থেকে বর্ণিত আছে যে, ইবনুল আব্বাস তাকে জানিয়েছেন, আবদুর রহমান ইবনে আওফ তার মালপত্রের কাছে ফিরে এলেন। ইবনুল আব্বাস বলেন, আমি তখন আবদুর রহমান বিন আউফকে আল কুরআন পড়াতাম। তিনি আমাকে উপস্থিত পেলেন। আমি তার জন্য অপেক্ষমান ছিলাম। উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) এর শেষ হজ্জে মীনায় এ ঘটনা ঘটে। আবদুর রহমান বিন আওফ বলেন, এক ব্যক্তি উমার ইবনুল খাত্তাবের কাছে এল। সে বললোঃ অমুক ব্যক্তি বলে, উমার যদি মারা যেত, তাহলে আমি অমুকের নিকট বাইয়াত করতাম। (অর্থাৎ তাকে পরবর্তী খালীফা মেনে নিতাম) এ কথা শুনে উমার বললেন, আজ সন্ধ্যায় আমি জনগণের সামনে ভাষণ দিয়ে তাদেরকে সেই সব লোক থেকে সতর্ক করবো, যারা জনগণের শাসন ক্ষমতা জোরপূর্বক কেড়ে নেয়ার ফন্দি আঁটছে।

আবদুর রহমান বলেন, আমি বললামঃ হে আমীরুল মুমিনীন, এ কাজটি করবেন না। কেননা হজ্জের মৌসুমে নানা রকমের বখাটে ও নির্বোধ লোক সমবেত হয়ে থাকে। আপনি যখন জনগণের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন, তখন তারাই আপনার সমাবেশে পরাক্রমশালী থাকবে। আমার আশঙ্কা হয়, আপনি এমন কোন কথা বলে ফেলবেন, যা নিয়ে তারা প্রচারণায় নেমে পড়বে, তার সঠিক অর্থ উপলব্ধি করবে না এবং যথাস্থানে তা উপস্থাপন করবে না। তবে আপনি মদীনায় যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। কারণ মদীনা হচ্ছে হিজরত ও সুন্নাতের নগরী। সেখানে আপনি এককভাবে জ্ঞানীগুণী ও ভদ্র শ্রেণীর লোকদের সাথে মিলিত হতে পারবেন। তখন আপনি শক্তিশালী অবস্থান থেকে কথা বলতে পারবেন। লোকেরা সে কথা উপলব্ধি করবে ও যথাস্থানে উপস্থাপন করবে।

উমার (রাঃ) বললেন, আমি যদি নিরাপদে ও সুস্থভাবে মদীনায় পৌছি, তাহলে সর্বপ্রথম যে স্থানে জনতার উদ্দেশ্যে ভাষণ দেয়ার সুযোগ পাবো, সে স্থানেই ভাষণ দেবো। এরপর যখন জিলহজ্জ মাসের শেষের দিকে আমরা মদীনায় উপস্থিত হলাম, সেদিন ছিল শুক্রবার। তখন আমি অন্ধ লোকের যাত্রার মত ত্বরিত গতিতে যাত্রা করলাম। (আমি এই হাদীসের মধ্যবর্তী অন্যতম বর্ণনাকারী মালিককে জিজ্ঞেস করলাম, অন্ধ লোকের যাত্রার মত অর্থ কী? তিনি বললেন, এর অর্থ হলোঃ (যে ব্যক্তি) কোন সময়ে যাত্রা শুরু করলো এবং ঠাণ্ডা, গরম বা অনুরূপ কোন কিছুর তোয়াক্কা করে না।) আমি মসজিদে নববীর পার্শ্বে সাঈদ বিন যায়িদকে পেলাম। সে আমার আগেই পৌছে গেছে। আমি তার পার্শ্বেই তার হাটুর সাথে হাটু লাগিয়ে বসলাম।

কিছুক্ষণ পরেই উমার (রাঃ) আবির্ভূত হলেন। আমি তাকে দেখেই বললাম, আজ সন্ধ্যায় উনি এমন এক ভাষণ দেবেন, যা তার আগে আর কেউ দেয়নি। এরপর উমার (রাঃ) মিম্বারে বসলেন। মুয়াযযিনের আযান দেয়া শেষ হলে উমার দাঁড়ালেন এবং আল্লাহর যথোপযুক্ত প্রশংসা করলেন। তারপর বললেনঃ হে জনতা, আমি আজ এমন একটা কথা বলতে যাচ্ছি, যা নেহাৎ ভাগ্যক্রমেই আমি বলার সুযোগ পাচ্ছি। জানিনা, হয়তো আমার আয়ুষ্কালের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়েই এটা বলতে পারছি। যারা আমার এ বক্তব্যকে মনে রাখবে ও বুঝবে, তারা যেন তাদের যাত্রার শেষ প্রান্ত পর্যন্ত গিয়েও তা প্রচার করে। আর যে মনে রাখতে পারবে না ও বুঝবে না সে আমার নামে মিথ্যা প্রচার করুক -এটা আমি অনুমোদন করি না।

নিশ্চয় আল্লাহ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সত্যসহকারে পাঠিয়েছেন এবং তার ওপর কিতাব নাযিল করেছেন। তার ওপর যা কিছু নাযিল করেছেন, রজম সংক্রান্ত আয়াতও তার অন্তর্ভুক্ত ছিল। আমরা তা পড়েছি ও বুঝেছি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও রজম করেছেন, তার পরে আমরাও করেছি। আমার আশঙ্কা হয় যে, দীর্ঘকাল অতিবাহিত হবার পর এক সময় লোকেরা বলতে পারে, আল্লাহর কিতাবে আমরা রজম সংক্রান্ত আয়াত পাইনা। এভাবে আল্লাহর নাযিল করা একটা ফারয বর্জন করে তারা বিপথগামী হয়ে যাবে। বস্তুতঃ বিবাহিত নারী ও পুরুষ ব্যভিচার করলে তার ওপর রজম চালু করা আল্লাহর কিতাবের আওতাভুক্ত একটা অকাট্য সত্য বিধি, যখন তার ওপর সাক্ষ্য, স্বীকারোক্তি বা গর্ভধারণ পাওয়া যাবে।

জেনে রাখ, আমরা পড়তামঃ তোমরা তোমাদের পিতৃপুরুষদের প্রতি বিমুখ হয়ো না। কেননা পিতৃপুরুষদের প্রতি বিমুখ হওয়া তোমাদের জন্য কুফরী। জেনে রাখ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ঈসা ইবনে মারইয়ামকে নিয়ে যেমন লোকেরা বাড়াবাড়ি ও অতিরঞ্জন করেছে, তেমনি আমাকে নিয়ে বাড়াবাড়ি ও অতিরঞ্জন করো না। আমি তো আল্লাহর বান্দা। কাজেই তোমরা আমাকে বলবেঃ আল্লাহর বান্দা ও রাসূল। আমি জানতে পেরেছি যে, তোমাদের কোন একজন বলেছে, উমার যদি মারা যেতেন, তবে আমি অমুকের হাতে বাইআত হতাম, তোমাদের কেউ যেন এতদূর ধৃষ্টতা না দেখায় যে, আবু বাকরের খিলাফাতকে অপ্রত্যাশিত ব্যাপার বলবে। ওটা অপ্রত্যাশিত ছিল বটে। তবে আল্লাহ তাকে সব অনিষ্ট থেকে রক্ষা করেছেন। (অর্থাৎ তাকে সফল করেছেন) আজ আমাদের মধ্যে আবু বকরের মত কেউ নেই। তার সমকক্ষ কেউ হতে পারে না।

শোন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তিকালের সময় আমাদের নিকট সংবাদ এসেছিল যে, আলী, যুবাইর ও তাঁদের উভয়ের সহযোগীরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কন্যা ফাতিমা (রাঃ) এর বাড়িতে বসে ছিলেন। আর সমগ্র আনসার গোষ্ঠী আমাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে সাকীফায়ে বানু সায়েদায় এবং মুহাজিরগণ আবু আমরা আমাদের আনসার ভাইদের কাছে যাই। অতঃপর তাদের নেতৃত্ব দিতে আমরা রওনা হয়ে গেলাম। পথে দু’জন সৎ লোকের সাথে আমাদের সাক্ষাত হলো। তারা উভয়ে আমাদের কাছে জনতার আচরণ কেমন ছিল, তার বিবরণ দিল। তারা বললেনঃ হে মুহাজিরগণ, আপনারা কোথায় যাত্রা করেছেন? আমি বললামঃ আমাদের আনসার ভাইদের কাছে যাচ্ছি। তারা উভয়ে বললেনঃ আপনাদের কোন উদ্বেগের কারণ নেই। ওদের কাছে যাবেন না। হে মুহাজিরগণ, আপনাদের যা করণীয়, তা আপনরারা করে ফেলুন। আমি বললাম, আল্লাহর কসম, আমরা ওদের নিকট যাবোই।

অতঃপর আমরা রওনা হলাম এবং বনু সায়েদা গোত্রের সাকীফায় (চত্বরে) তাদের নিকট গেলাম। দেখলাম, তারা সবাই সেখানে সমবেত। তাদের মাঝে এক ব্যক্তি কম্বল আচ্ছাদিত। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এ ব্যক্তি কে? লোকেরা বললো, সা’দ বিন উবাদা। আমি বললামঃ ওর কী হয়েছে? লোকেরা বললোঃ ব্যথা। আমরা যখন বসলাম, তখন তাদের (আনসারদের) জনৈক বক্তা দাড়ালো। প্রথমে আল্লাহর যথোপযুক্ত প্রশংসা করলো। তারপর বললোঃ আমরা হচ্ছি আল্লাহর আনসার (সাহায্যকারী) ও ইসলামের সৈনিক। আর হে মুহাজিরগণ, আপনারা আমাদেরই একটি গোষ্ঠী। অথচ আপনাদের পক্ষ থেকে তোড়জোড় শুরু হয়েছে আমাদেরকে আমাদের মূল থেকে বিচ্ছিন্ন করার ও সামষ্টিক তৎপরতা থেকে দূরে সরিয়ে দেয়ার জন্য। এরপর এই বক্তা যখন ক্ষ্যান্ত হলো, তখন আমি কথা বলতে ইচ্ছা করলাম। আমি একটা চমকপ্রদ ভাষণ তৈরি করেছিলাম, যা আবু বাকরের সামনে দিতে চেয়েছিলাম।

ইতিপূর্বে আবু বাকরের সাথে আমি কিছুটা হৃদ্যতা বজায় রাখতাম। তিনি আমার চেয়ে সহিষ্ণু ও সম্মানী ব্যক্তি ছিলেন। আবু বাকর আমাকে বললেন, একটু ধৈর্য ধারণ কর। তখন তাকে রাগান্বিত করা আমার ভালো লাগলো না। কারণ তিনি আমার চেয়ে জ্ঞানী ও সম্মানী ব্যক্তি ছিলেন। আল্লাহর কসম, আমার তৈরি করা চমকপ্রদ ভাষণে যা যা ছিল, তার একটি কথাও তিনি বলতে বাদ রাখলেন না বরঞ্চ আরো উত্তম কথা তাৎক্ষণিকভাবে ও কোন পূর্ব প্রস্তুতি ছাড়াই বললেন, অতঃপর নীরব হলেন। তিনি বললেন, তোমরা যেসব উত্তম কথা বলেছ, তোমরা যথার্থই তার উপযুক্ত। আরবরা তাদের নেতৃত্বদানের কাজটা কুরাইশদের এই গোষ্ঠীটার জন্য নির্দিষ্ট বলেই জানে। বংশ মর্যাদার ও পারিবারিক আভিজাত্যেরদিক দিয়ে এ গোষ্ঠীটা মধ্যম ধরনের সন্ত্রান্ত।

আমি তোমাদের জন্য এই দুই ব্যক্তির মধ্যে যে কোন একজনের প্রতি সন্তুষ্ট। তোমরা এদের মধ্য থেকে যাকে চাও গ্রহণ কর। এই বলে তিনি আমার [উমার (রাঃ)] ও আবু উবাইদা ইবনুল জাররাহর হাত ধরলেন। এ ছাড়া আর, যা কিছু তিনি বললেন, তা আমি অপছন্দ করিনি। আল্লাহর কসম, পরিস্থিতি এমন ছিল যে, আমাকে প্রথমে এগিয়ে দেয়া হলে আমাকে হত্যা করা হতো, যে জনগোষ্ঠীতে আবু বাকর আছে, সেই জনগোষ্ঠীর ওপর আমি নেতৃত্ব করবো, এটা আমার কাছে গুনাহর কাজ মনে হয়। অবশ্য মৃত্যুর সময় আমার ভেতরে কোন পরিবর্তন এলে সেটা ভিন্ন কথা। এই সময় জনৈক আনসার বলে উঠলো, “আমি একজন প্রাজ্ঞ ও বিচক্ষণ বক্তি। হে কুরাইশ, আমাদের মধ্য হতে একজন নেতা হবেন, আর তোমাদের মধ্য হতে একজন আমীর হবেন।

অতঃপর কথাবার্তা বাড়লো এবং আওয়ায উচ্চতর হলো। আমার আশঙ্কা হলো যে, মতভেদ সৃষ্টি হতে পারে। তাই আমি বললাম, হে আবু বাকর, আপনার হাত বাড়িয়ে দিন। তিনি হাত বাড়ালেন। অমনি আমি তার নিকট বাইয়াত করলাম। সকল মুহাজির তার নিকট বাইয়াত করলো। তারপর আনসারগণও তার নিকট বাইয়াত করলো। এরপর আমরা সা’দ বিন উবাদার নিকট গেলাম। তাদের একজন বললো, তোমরা সা’দকে হত্যা করলে! আমি বললাম, আল্লাহ সা’দকে হত্যা করেছেন।

উমার (রাঃ) বললেনঃ আমাদের এই সমাবেশে আবু বকরের হাতে বাইয়াত করার চেয়ে যুক্তিযুক্ত আর কোন কাজ আমরা পাইনি। আমরা কোন বাইয়াত না করে যদি চলে যেতাম, তবে আশঙ্কা ছিল যে, লোকেরা আমাদের পরে নতুন কোন বাইয়াত উদ্ভাবন করে নিত। তখন সেটা আমাদের অপছন্দ হওয়া সত্ত্বেও হয়তো আমাদের মেনে নিতে হতো, নচেত তার বিরোধিতা করতে হতো এবং তার ফলে গোলযোগ ছড়িয়ে পড়তো। মুসলিমদের সাথে পরামর্শ না করে যে ব্যক্তি কোন নেতার হাতে বাইয়াত করবে, তার বাইয়াত হবে না, যে ব্যক্তি বাইয়াত নেবে, তারও বাইয়াত হবে না। এমনকি এতে উভয়ের নিহত হবারও ঝুঁকি রয়েছে।

অন্যতম বর্ণনাকার মালিক বলেন, যে দুজন আবু বকর ও উমারের সাথে দেখা করেছিলো, তারা হলেন উমাইর বিন সায়েদা ও মা’ন বিন আদী।

ইবনে শিহাব বলেন, সাঈদ বিন মুসাইয়াব আমাকে জানিয়েছেন যে, যে ব্যক্তি বলেছিল, আমি সুচতুর, সে ছিল হুবাব ইবনুল মুনযির।

[বুখারী, মুসলিম, ইবনু হিব্বান, মুসনাদে আহমাদ-১৫৪, ১৫৬, ২৪৯]

حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ عِيسَى الطَّبَّاعُ، حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، حَدَّثَنِي ابْنُ شِهَابٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ بْنِ مَسْعُودٍ أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ أَخْبَرَهُ: أَنَّ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ عَوْفٍ رَجَعَ إِلَى رَحْلِهِ، قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ: وَكُنْتُ أُقْرِئُ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ عَوْفٍ، فَوَجَدَنِي، وَأَنَا أَنْتَظِرُهُ، وَذَلِكَ بِمِنًى فِي آخِرِ حَجَّةٍ حَجَّهَا عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ، قَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ: إِنَّ رَجُلًا أَتَى عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ، فَقَالَ: إِنَّ فُلَانًا يَقُولُ: لَوْ قَدْ مَاتَ عُمَرُ بَايَعْتُ فُلَانًا، فَقَالَ عُمَرُ: إِنِّي قَائِمٌ الْعَشِيَّةَ فِي النَّاسِ فَمُحَذِّرُهُمْ هَؤُلَاءِ الرَّهْطَ الَّذِينَ يُرِيدُونَ أَنْ يَغْصِبُوهُمْ أَمْرَهُمْ، قَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ: فَقُلْتُ: يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ، لَا تَفْعَلْ، فَإِنَّ الْمَوْسِمَ يَجْمَعُ رَعَاعَ النَّاسِ وَغَوْغَاءَهُمْ، وَإِنَّهُمُ الَّذِينَ يَغْلِبُونَ عَلَى مَجْلِسِكَ إِذَا قُمْتَ فِي النَّاسِ، فَأَخْشَى أَنْ تَقُولَ مَقَالَةً يَطِيرُ بِهَا أُولَئِكَ فَلَا يَعُوهَا، وَلَا يَضَعُوهَا عَلَى مَوَاضِعِهَا، وَلَكِنْ حَتَّى تَقْدَمَ الْمَدِينَةَ، فَإِنَّهَا دَارُ الْهِجْرَةِ وَالسُّنَّةِ، وَتَخْلُصَ بِعُلَمَاءِ النَّاسِ وَأَشْرَافِهِمْ، فَتَقُولَ مَا قُلْتَ مُتَمَكِّنًا، فَيَعُونَ مَقَالَتَكَ، وَيَضَعُونَهَا مَوَاضِعَهَا، فَقَالَ عُمَرُ: لَئِنْ قَدِمْتُ الْمَدِينَةَ صَالِحًا لَأُكَلِّمَنَّ بِهَا النَّاسَ فِي أَوَّلِ مَقَامٍ أَقُومُه فَلَمَّا قَدِمْنَا الْمَدِينَةَ فِي عَقِبِ ذِي الْحِجَّةِ، وَكَانَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ، عَجَّلْتُ الرَّوَاحَ صَكَّةَ الْأَعْمَى - فَقُلْتُ لِمَالِكٍ: وَمَا صَكَّةُ الْأَعْمَى؟ قَالَ: إِنَّهُ لَا يُبَالِي أَيَّ سَاعَةٍ خَرَجَ، لَا يَعْرِفُ الْحَرَّ وَالْبَرْدَ وَنَحْوَ هَذَا - فَوَجَدْتُ سَعِيدَ بْنَ زَيْدٍ عِنْدَ رُكْنِ الْمِنْبَرِ الْأَيْمَنِ قَدْ سَبَقَنِي، فَجَلَسْتُ حِذَاءَهُ تَحُكُّ رُكْبَتِي رُكْبَتَهُ، فَلَمْ أَنْشَبْ أَنْ طَلَعَ عُمَرُ، فَلَمَّا رَأَيْتُهُ قُلْتُ: لَيَقُولَنَّ الْعَشِيَّةَ عَلَى هَذَا الْمِنْبَرِ مَقَالَةً مَا قَالَهَا عَلَيْهِ أَحَدٌ قَبْلَهُ، قَالَ: فَأَنْكَرَ سَعِيدُ بْنُ زَيْدٍ ذَلِكَ، فَقَالَ: مَا عَسَيْتَ أَنْ يَقُولَ مَا لَمْ يَقُلْ أَحَدٌ؟ فَجَلَسَ عُمَرُ عَلَى الْمِنْبَرِ، فَلَمَّا سَكَتَ الْمُؤَذِّنُ، قَامَ فَأَثْنَى عَلَى اللهِ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ، ثُمَّ قَالَ: أَمَّا بَعْدُ، أَيُّهَا النَّاسُ، فَإِنِّي قَائِلٌ مَقَالَةً قَدْ قُدِّرَ لِي أَنْ أَقُولَهَا، لَا أَدْرِي لَعَلَّهَا بَيْنَ يَدَيْ أَجَلِي، فَمَنْ وَعَاهَا وَعَقَلَهَا فَلْيُحَدِّثْ بِهَا حَيْثُ انْتَهَتْ بِهِ رَاحِلَتُهُ، وَمَنْ لَمْ يَعِهَا فَلَا أُحِلُّ لَهُ أَنْ يَكْذِبَ عَلَيَّ: إِنَّ اللهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى بَعَثَ مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالْحَقِّ، وَأَنْزَلَ عَلَيْهِ الْكِتَابَ، وَكَانَ مِمَّا أَنْزَلَ عَلَيْهِ آيَةُ الرَّجْمِ، فَقَرَأْنَاهَا وَوَعَيْنَاهَا، وَرَجَمَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَرَجَمْنَا بَعْدَهُ، فَأَخْشَى إِنْ طَالَ بِالنَّاسِ زَمَانٌ أَنْ يَقُولَ قَائِلٌ: لَا نَجِدُ آيَةَ الرَّجْمِ فِي كِتَابِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ، فَيَضِلُّوا بِتَرْكِ فَرِيضَةٍ قَدْ أَنْزَلَهَا اللهُ عَزَّ وَجَلَّ، فَالرَّجْمُ فِي كِتَابِ اللهِ حَقٌّ عَلَى مَنْ زَنَى إِذَا أُحْصِنَ مِنَ الرِّجَالِ وَالنِّسَاءِ إِذَا قَامَتِ الْبَيِّنَةُ أَوِ الْحَبَلُ أَوِ الِاعْتِرَافُ، أَلَا وَإِنَّا قَدْ كُنَّا نَقْرَأُ: لَا تَرْغَبُوا عَنْ آبَائِكُمْ، فَإِنَّ كُفْرًا بِكُمْ أَنْ تَرْغَبُوا عَنْ آبَائِكُم أَلَا وَإِنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: " لَا تُطْرُونِي كَمَا أُطْرِيَ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ، فَإِنَّمَا أَنَا عَبْدُ اللهِ، فَقُولُوا عَبْدُ اللهِ وَرَسُولُهُ وَقَدْ بَلَغَنِي أَنَّ قَائِلًا مِنْكُمْ يَقُولُ: لَوْ قَدْ مَاتَ عُمَرُ، بَايَعْتُ فُلانًا، فَلا يَغْتَرَّنَّ امْرُؤٌ أَنْ يَقُولَ: إِنَّ بَيْعَةَ أَبِي بَكْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ كَانَتْ فَلْتَةً، أَلا وَإِنَّهَا كَانَتْ كَذَلِكَ، إلا أَنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ وَقَى شَرَّهَا، وَلَيْسَ فِيكُمُ الْيَوْمَ مَنْ تُقْطَعُ إِلَيْهِ الْأَعْنَاقُ مِثْلُ أَبِي بَكْرٍ، أََلَا وَإِنَّهُ كَانَ مِنْ خَبَرِنَا حِينَ تُوُفِّيَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَنَّ عَلِيًّا وَالزُّبَيْرَ، وَمَنْ كَانَ مَعَهُمَا، تَخَلَّفُوا فِي بَيْتِ فَاطِمَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا بِنْتِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَتَخَلَّفَتْ عَنَّا الْأَنْصَارُ بِأَجْمَعِهَا فِي سَقِيفَةِ بَنِي سَاعِدَةَ، وَاجْتَمَعَ الْمُهَاجِرُونَ إِلَى أَبِي بَكْرٍ، فَقُلْتُ لَهُ: يَا أَبَا بَكْرٍ، انْطَلِقْ بِنَا إِلَى إِخْوَانِنَا مِنَ الْأَنْصَارِ، فَانْطَلَقْنَا نَؤُمُّهُمْ حَتَّى لَقِيَنَا رَجُلانِ صَالِحَانِ، فَذَكَرَا لَنَا الَّذِي صَنَعَ الْقَوْمُ، فَقَالا: أَيْنَ تُرِيدُونَ يَا مَعْشَرَ الْمُهَاجِرِينَ؟ فَقُلْتُ: نُرِيدُ إِخْوَانَنَا هَؤُلاءِ مِنَ الْأَنْصَارِ، فَقَالا: لَا عَلَيْكُمْ أَنْ لَا تَقْرَبُوهُمْ، وَاقْضُوا أَمْرَكُمْ يَا مَعْشَرَ الْمُهَاجِرِينَ، فَقُلْتُ: وَاللهِ لَنَأْتِيَنَّهُم فَانْطَلَقْنَا حَتَّى جِئْنَاهُمْ فِي سَقِيفَةِ بَنِي سَاعِدَةَ، فَإِذَا هُمْ مُجْتَمِعُونَ، وَإِذَا بَيْنَ ظَهْرَانَيْهِمْ رَجُلٌ مُزَمَّلٌ، فَقُلْتُ: مَنْ هَذَا؟ فَقَالُوا: سَعْدُ بْنُ عُبَادَةَ، فَقُلْتُ: مَا لَهُ؟ قَالُوا: وَجِعٌ، فَلَمَّا جَلَسْنَا قَامَ خَطِيبُهُمْ فَأَثْنَى عَلَى اللهِ عَزَّ وَجَلَّ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ، وَقَالَ: أَمَّا بَعْدُ، فَنَحْنُ أَنْصَارُ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ، وَكَتِيبَةُ الْإِسْلامِ، وَأَنْتُمْ يَا مَعْشَرَ الْمُهَاجِرِينَ رَهْطٌ مِنَّا، وَقَدْ دَفَّتْ دَافَّةٌ مِنْكُمْ يُرِيدُونَ أَنْ يَخْزِلُونَا مِنْ أَصْلِنَا، وَيَحْضُنُونَا مِنَ الْأَمْرِ، فَلَمَّا سَكَتَ أَرَدْتُ أَنْ أَتَكَلَّمَ، وَكُنْتُ قَدْ زَوَّرْتُ مَقَالَةً أَعْجَبَتْنِي، أَرَدْتُ أَنْ أَقُولَهَا بَيْنَ يَدَيْ أَبِي بَكْرٍ، وَقَدْ كُنْتُ أُدَارِي مِنْهُ بَعْضَ الْحَدِّ، وَهُوَ كَانَ أَحْلَمَ مِنِّي وَأَوْقَرَ، فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ: عَلَى رِسْلِكَ. فَكَرِهْتُ أَنْ أُغْضِبَهُ، وَكَانَ أَعْلَمَ مِنِّي وَأَوْقَرَ، وَاللهِ مَا تَرَكَ مِنْ كَلِمَةٍ أَعْجَبَتْنِي فِي تَزْوِيرِي إِلَّا قَالَهَا فِي بَدِيهَتِهِ وَأَفْضَلَ، حَتَّى سَكَتَ، فَقَالَ: أَمَّا بَعْدُ، فَمَا ذَكَرْتُمْ مِنْ خَيْرٍ فَأَنْتُمْ أَهْلُهُ، وَلَمْ تَعْرِفِ الْعَرَبُ هَذَا الْأَمْرَ إِلَّا لِهَذَا الْحَيِّ مِنْ قُرَيْشٍ، هُمْ أَوْسَطُ الْعَرَبِ نَسَبًا وَدَارًا، وَقَدْ رَضِيتُ لَكُمْ أَحَدَ هَذَيْنِ الرَّجُلَيْنِ أَيَّهُمَا شِئْتُمْ. وَأَخَذَ بِيَدِي وَبِيَدِ أَبِي عُبَيْدَةَ بْنِ الْجَرَّاحِ، فَلَمْ أَكْرَهْ مِمَّا قَالَ غَيْرَهَا، وَكَانَ وَاللهِ أَنْ أُقَدَّمَ فَتُضْرَبَ عُنُقِي، لَا يُقَرِّبُنِي ذَلِكَ إِلَى إِثْمٍ، أَحَبَّ إِلَيَّ مِنْ أَنْ أَتَأَمَّرَ عَلَى قَوْمٍ فِيهِمْ أَبُو بَكْرٍ، إِلَّا أَنْ تَغَيَّرَ نَفْسِي عِنْدَ الْمَوْتِ، فَقَالَ قَائِلٌ مِنَ الْأَنْصَارِ: أَنَا جُذَيْلُهَا الْمُحَكَّكُ، وَعُذَيْقُهَا الْمُرَجَّبُ، مِنَّا أَمِيرٌ وَمِنْكُمْ أَمِيرٌ يَا مَعْشَرَ قُرَيْشٍ - فَقُلْتُ لِمَالِكٍ: مَا مَعْنَى " أَنَا جُذَيْلُهَا الْمُحَكَّكُ، وَعُذَيْقُهَا الْمُرَجَّبُ "؟ قَالَ: كَأَنَّهُ يَقُولُ: أَنَا دَاهِيَتُهَا قَالَ: وَكَثُرَ اللَّغَطُ، وَارْتَفَعَتِ الْأَصْوَاتُ، حَتَّى خَشِيتُ الِاخْتِلافَ، فَقُلْتُ: ابْسُطْ يَدَكَ يَا أَبَا بَكْرٍ، فَبَسَطَ يَدَهُ فَبَايَعْتُهُ، وَبَايَعَهُ الْمُهَاجِرُونَ، ثُمَّ بَايَعَهُ الْأَنْصَارُ، وَنَزَوْنَا عَلَى سَعْدِ بْنِ عُبَادَةَ، فَقَالَ قَائِلٌ مِنْهُمْ: قَتَلْتُمْ سَعْدًا، فَقُلْتُ: قَتَلَ اللهُ سَعْدًا وَقَالَ عُمَرُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ: أَمَا وَاللهِ مَا وَجَدْنَا فِيمَا حَضَرْنَا أَمْرًا هُوَ أَقْوَى مِنْ مُبَايَعَةِ أَبِي بَكْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ، خَشِينَا إِنْ فَارَقْنَا الْقَوْمَ، وَلَمْ تَكُنْ بَيْعَةٌ، أَنْ يُحْدِثُوا بَعْدَنَا بَيْعَةً، فَإِمَّا أَنْ نُتَابِعَهُمْ عَلَى مَا لَا نَرْضَى، وَإِمَّا أَنْ نُخَالِفَهُمْ فَيَكُونَ فِيهِ فَسَادٌ، فَمَنْ بَايَعَ أَمِيرًا عَنْ غَيْرِ مَشُورَةِ الْمُسْلِمِينَ فَلا بَيْعَةَ لَهُ، وَلا بَيْعَةَ لِلَّذِي بَايَعَهُ، تَغِرَّةَ أَنْ يُقْتَلا قَالَ مَالِكٌ: وَأَخْبَرَنِي ابْنُ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ: أَنَّ الرَّجُلَيْنِ اللَّذَيْنِ لَقِيَاهُمَا : عُوَيْمُ بْنُ سَاعِدَةَ، وَمَعْنُ بْنُ عَدِي قَالَ ابْنُ شِهَابٍ: وَأَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيِّبِ: أَنَّ الَّذِي قَالَ: أَنَا جُذَيْلُهَا الْمُحَكَّكُ وَعُذَيْقُهَا الْمُرَجَّبُ: الْحُبَابُ بْنُ الْمُنْذِرِ إسناد حديث السقيفة صحيح على شرط مسلم، رجاله ثقات رجال الشيخين غير إسحاق بن عيسى الطباع، فمن رجال مسلم. وهو في " الموطأ " 2 / 823 مختصراً بقصة الرجم فقط ومن طريق مالك أخرجه الدارمي (2322) و (2784) ، والبخاري (2462) و (3928) ، والنسائي في " الكبرى " (7157) و (7158) ، وابن حبان (414) وبعضهم يزيد فيه على بعض. وقرن البخاري والنسائي في الموضع الثاني بمالكٍ يونسَ بن يزيد الأيلي وأخرجه الحميدي (26) و (27) ، وابن أبي شيبة 10 / 75 - 76 و14 / 563 - 567، والبخاري (3445) و (4021) و (6829) و (6830) و (7323) ، ومسلم (1691) ، وأبو داود (4418) ، وابن ماجه (2553) ، والترمذي في " الشمائل " (323) ، والبزار (194) ، والنسائي (7156) و (7159) و (7160) وأبو يعلى (153) ، وابن حبان (413) و (6239) ، والبيهقي 8 / 211 من طرق عن الزهري، بهذا الإسناد. وانظر (331) و (352) قوله: " كانت فلتة "، قال ابن الأثير في " النهاية " 3 / 467: أراد بالفلتة: الفَجْأة، ومثل هذه البيعة جديرة بأن تكون مُهيِّجةً للشر والفتنة، فعَصَم الله من ذلك ووَقَى، والفلتة كلُّ شيء فُعل من غير رَوِيَّة، وإنما بُودِر بها خوف انتشار الأمر وقوله: " ويَحضُنونا من الأمر "، أي: يخرجونا منه وقوله: " زوَّرتُ ": هيَّأت والجُذيل: تصغير جِذْل، وهو العود الذي يُنصَب للإبل الجَرْبى لتحتكَّ به، وهو تصغير تعظيم، أي: أنا ممَّن يُستشفى برأيه كما تستشفي الإبل الجربى بالاحتكاك بهذا العود والعُذيق: تصغير العَذْق، وهو النخلة والمرجَّب: من الترجيب بالجيم، يقال: رَجَّبتُ النخلة، إذا أَسندتَها على خشبة ذات شُعبتين، لكثرة حملها، يريد أنه الذي ينبغي الرجوعُ إلى قوله