২৯৮৬

পরিচ্ছেদঃ ২০. নবী (ﷺ) গানীমাতের মাল থেকে যে এক-পঞ্চমাংশ নিতেন তা কোথায় ব্যয় করতেন এবং নিকটাত্মীয়দের অংশ সম্পর্কে

২৯৮৬। আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বদর যুদ্ধের দিন গানীমাত হিসেবে ভাগে একটি মোটাতাজা উষ্ট্রী পাই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেদিন অবশিষ্ট এক-পঞ্চমাংশ থেকে আমাকে আরেকটি মোটাতাজা উষ্ট্রী দেন। তখন আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কন্যা ফাতিমাহর সঙ্গে বাসর যাপনের ইচ্ছা করি। এজন্য আমি কাইনুকা গোত্রের এক স্বর্ণকারকে আমার সঙ্গে নিয়ে ইযাখির নামক সুগন্ধি ঘাস আনার মনস্থ করি। ইচ্ছা ছিলো ওগুলো স্বর্ণকারদের নিকট বিক্রি করে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে আমার বিবাহভোজে কিছুটা সাহায্য হবে। আমি আমার উষ্ট্রী, হাওদা, ঘাসের জাল, দড়ি ইত্যাদি সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। উষ্ট্রী দু’টি এক আনসারীর ঘরের পাশে শোয়া ছিলো। সব কিছু সংগ্রহ করে ফিরে এসে দেখি আমার উষ্ট্রী দু’টি কুঁজ কেটে ফেলা হয়েছে এবং পেট ফেঁড়ে কলিজা বের করা হয়েছে।

এ দৃশ্য দেখে আমি আমার অশ্রু সংবরণ করতে পারলাম না। আমি জিজ্ঞেস করলাম, কে এ নিষ্ঠুর কাজ করেছে? লোকেরা বললো, হামযাহ ইবনু আব্দুল মুত্তালিব এ অপকর্ম করেছে। সে আনসারদের কতিপয় মদ্যপায়ীর সাথে এ ঘরে রয়েছে। তাকে ও তার সঙ্গীদের এক ক্রীতদাসী গান গেয়ে শুনিয়েছে। সে গানের মধ্যে বলেছে, ’সাবধান হে হামযাহ! মোটাতাজা উষ্ট্রীর দিকে লক্ষ্য করো।’ এতে উত্তেজিত হয়ে তিনি তার তরবারির দিকে ছুটে উষ্ট্রী দু’টির কুঁজ কাটেন এবং পেট ফেঁড়ে কলিজা বের করেন। আলী (রাঃ) বলেন, আমি সেখান থেকে সোজা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট গিয়ে উপস্থিত হই। তখন তাঁর নিকট যায়িদ ইবনু হারিসাহ (রাঃ) উপস্থিত ছিলেন।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার চেহারা দেখেই বুঝে ফেললেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমার কি হয়েছে? আলী (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমার জন্য আজকের মতো দুর্দিন আর কখনো আসেনি। হামযাহ আমার উষ্ট্রী দু’টিকে অত্যাচার করেছে। সে এর কুঁজ কেটেছে এবং পেটের দু’পাশ ফেঁড়ে কলিজা বের করে নিয়েছে। সে এখনো একটি ঘরের মধ্যে মদ্যপায়ীদের সাথে মত্ত রয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর চাঁদর চেয়ে তা গায়ে জড়িয়ে রওয়ানা হলেন। আমি এবং যায়িদ ইবনু হারিসাহ তার অনুসরণ করি। হামযাহ যে ঘরে অবস্থান করছিলেন তিনি সেখানে পৌঁছলে ভিতরে প্রবেশের অনুমতি চাইলেন। তাঁকে অনুমতি দেয়া হলে ঘরে ঢুকে তিনি লোকদেরকে মাতাল অবস্থায় পেলেন।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হামযাহকে তার কৃতকর্মের জন্য র্ভৎসনা করতে লাগলেন। তখন হামযাহ ছিলেন নেশায় বিভোর, নেশার কারণে তার চোখ লাল হয়ে ছিলো। তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দিকে তাকিয়ে দৃষ্টি ফিরিয়ে নিয়ে তাঁর হাঁটুদ্বয়ের প্রতি তাকালেন, কিছুক্ষণ পর আবার দৃষ্টি সরিয়ে তাঁর নাভির দিকে লক্ষ্য করলেন; পুনরায় দৃষ্টি সরিয়ে তাঁর চেহারার দিকে তাকালেন; অতঃপর বললেন, তোমরা আমার পিতার গোলাম ছাড়া কিছু নও। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বুঝতে পারলেন, হামযাহ এখন নেশাগ্রস্ত। মাতাল অবস্থায় তার ক্রোধ আরো বাড়তে পারার আশঙ্কায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখান থেকে ফিরে গেলেন। ফলে ’আমরাও তাঁর সাথে বেরিয়ে আসি।[1]

بَابٌ فِي بَيَانِ مَوَاضِعِ قَسْمِ الْخُمُسِ، وَسَهْمِ ذِي الْقُرْبَى

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ، حَدَّثَنَا عَنْبَسَةُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَخْبَرَنِي عَلِيُّ بْنُ حُسَيْنٍ، أَنَّ حُسَيْنَ بْنَ عَلِيٍّ، أَخْبَرَهُ أَنَّ عَلِيَّ بْنَ أَبِي طَالِبٍ، قَالَ: كَانَتْ لِي شَارِفٌ مِنْ نَصِيبِي مِنَ الْمَغْنَمِ يَوْمَ بَدْرٍ، وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، أَعْطَانِي شَارِفًا مِنَ الخُمُسِ يَوْمَئِذٍ، فَلَمَّا أَرَدْتُ أَنْ أَبْنِيَ بِفَاطِمَةَ بِنْتِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَاعَدْتُ رَجُلًا صَوَّاغًا مِنْ بَنِي قَيْنُقَاعٍ أَنْ يَرْتَحِلَ مَعِي، فَنَأْتِيَ بِإِذْخِرٍ، أَرَدْتُ أَنْ أَبِيعَهُ مِنَ الصَّوَّاغِينَ فَأَسْتَعِينَ بِهِ فِي وَلِيمَةِ عُرْسِي، فَبَيْنَا أَنَا أَجَمْعُ لِشَارِفَيَّ مَتَاعًا مِنَ الأَقْتَابِ وَالْغَرَائِرِ وَالْحِبَالِ، وَشَارِفَايَ مُنَاخَانِ إِلَى جَنْبِ حُجْرَةِ رَجُلٍ مِنَ الْأَنْصَارِ، أَقْبَلْتُ حِينَ جَمَعْتُ مَا جَمَعْتُ، فَإِذَا بِشَارِفَيَّ قَدِ اجْتُبَّتْ أَسْنِمَتُهُمَا، وَبُقِرَتْ خَوَاصِرُهُمَا، وَأُخِذَ مِنْ أَكْبَادِهِمَا فَلَمْ أَمْلِكْ عَيْنَيَّ حِينَ رَأَيْتُ ذَلِكَ الْمَنْظَرَ، فَقُلْتُ: مَنْ فَعَلَ هَذَا؟ قَالُوا: فَعَلَهُ حَمْزَةُ بْنُ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ، وَهُوَ فِي هَذَا الْبَيْتِ فِي شَرْبٍ مِنَ الْأَنْصَارِ غَنَّتْهُ قَيْنَةٌ وَأَصْحَابَهُ، فَقَالَتْ: فِي غِنَائِهَا: [البحر الوافر] أَلَا يَا حَمْزُ لِلشُّرُفِ النِّوَاءِ فَوَثَبَ إِلَى السَّيْفِ فَاجْتَبَّ أَسْنِمَتَهُمَا، وَبَقَرَ خَوَاصِرَهُمَا وَأَخَذَ مِنْ أَكْبَادِهِمَا، قَالَ عَلِيٌّ: فَانْطَلَقْتُ حَتَّى أَدْخُلَ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَعِنْدَهُ زَيْدُ بْنُ حَارِثَةَ، قَالَ: فَعَرَفَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الَّذِي لَقِيتُ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَا لَكَ؟ قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، مَا رَأَيْتُ كَالْيَوْمِ، عَدَا حَمْزَةُ عَلَى نَاقَتَيَّ، فَاجْتَبَّ أَسْنِمَتَهُمَا، وَبَقَرَ خَوَاصِرَهُمَا، وَهَا هُوَ ذَا فِي بَيْتٍ مَعَهُ شَرْبٌ، فَدَعَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِرِدَائِهِ فَارْتَدَاهُ، ثُمَّ انْطَلَقَ يَمْشِي، وَاتَّبَعْتُهُ أَنَا وَزَيْدُ بْنُ حَارِثَةَ، حَتَّى جَاءَ الْبَيْتَ الَّذِي فِيهِ حَمْزَةُ، فَاسْتَأْذَنَ فَأُذِنَ لَهُ، فَإِذَا هُمْ شَرْبٌ فَطَفِقَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَلُومُ حَمْزَةَ فِيمَا فَعَلَ، فَإِذَا حَمْزَةُ، ثَمِلٌ مُحْمَرَّةٌ عَيْنَاهُ، فَنَظَرَ حَمْزَةُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثُمَّ صَعَّدَ النَّظَرَ فَنَظَرَ إِلَى رُكْبَتَيْهِ، ثُمَّ صَعَّدَ النَّظَرَ فَنَظَرَ إِلَى سُرَّتِهِ، ثُمَّ صَعَّدَ النَّظَرَ فَنَظَرَ إِلَى وَجْهِهِ، ثُمَّ قَالَ حَمْزَةُ: وَهَلْ أَنْتُمْ إِلَّا عَبِيدٌ لِأَبِي، فَعَرَفَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، أَنَّهُ ثَمِلٌ فَنَكَصَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، عَلَى عَقِبَيْهِ الْقَهْقَرَى فَخَرَجَ وَخَرَجْنَا مَعَهُ صحيح


‘Ali bin Abi Talib said “I had an old she Camel that I got as my share from the booty on the day of Badr. The Apostle of Allaah(ﷺ) also gave me an old she camel from the fifth that day. When I intended to cohabit with Fathimah daughter of the Apostle of Allaah(ﷺ), I made arrangement with a man who was a goldsmith belonging to Banu Qainuqa’ to go with me so that we may bring grass. I intended to sell it to the goldsmith there by seeking help in my wedding feast. While I was collecting for my old Camels saddles, baskets and ropes both of she Camels were seated in a corner of the apartment of a man of the Ansar. When I collected what I collected (i.e., equipment) I turned (towards them). I suddenly found that the humps of she Camels were cut off and their hips were pierced and their lives were taken out. I could not control my eyes (to weep) when I saw that scene. I said “Who has done this?” They (the people) replied “Hamzah bin ‘Abd Al Muttalib”. He is among the drunkards of the Ansar in this house. A singing girl is singing for him and his Companions. While singing she said “Oh Hamza, rise to these plumpy old she Camels. So he jumped to the sword and cut off their humps, pierced their hips and took out their livers.” ‘Ali said “I went till I entered upon the Apostle of Allaah(ﷺ) while Zaid bin Harithah was with him.” The Apostle of Allaah(ﷺ) realized what I had met with. The Apostle of Allaah(ﷺ) aid “What is the matter with you?” I said Apostle of Allaah(ﷺ), I never saw the thing that happened with me today. Hamzah wronged my she Camels, he cut off their humps, pierced their hips. Lo! He is in a house with drunkards. The Apostle of Allaah(ﷺ) asked for his cloak. It was brought to him. He then went out, I and Zaid bin Harithah followed him until we reached the house where Hamzah was. He asked permission ( to entre). He was permitted. He found drunkards there. The Apostle of Allaah(ﷺ) began to rebuke him (Hamzah) for his action. Hamzah was intoxicated and his eyes were reddish. Hamzah looked at the Apostle of Allaah(ﷺ). He then raised his eyes and looked at his knees, he then raised his eyes and looked at his navel and he then raised his eyes and looked at his face. Hamzah then said “Are you but the salves of my father? Then the Apostle of Allaah(ﷺ) knew that he was intoxicated. So the Apostle of Allaah(ﷺ) moved backward. He then went out and we also went out with him.”