২৬৫৭

পরিচ্ছেদঃ ৯. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - হজের কার্যাবলীতে আগ-পিছ করা বৈধতা প্রসঙ্গে

২৬৫৭-[৩] ’আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি এসে বললো, হে আল্লাহর রসূল! আমি মাথা মুন্ডনের আগে তাওয়াফে ইফাযাহ্ করেছি। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এতে কোন গুনাহ হবে না, এখন মাথার চুল কাটো বা ছাঁটো। তারপর আরেক ব্যক্তি এসে বললো, আমি পাথর মারার আগে কুরবানী করে ফেলেছি। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এতে কোন গুনাহ হবে না, এখন পাথর মারো। (বুখারী)[1]

عَن عَليّ قَالَ: أَتَاهُ رَجُلٌ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أَفَضْتُ قَبْلَ أَنْ أَحْلِقَ فَقَالَ: «احْلِقْ أَوْ قَصِّرْ وَلَا حَرَجَ» . وَجَاءَ آخَرُ فَقَالَ: ذَبَحْتُ قَبْلَ أَنْ أَرْمِيَ. قَالَ: «ارْمِ وَلَا حرج» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

ব্যাখ্যা: (أَتَاهُ) অর্থাৎ- নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আগমন করলো (إِنِّىْ أَفَضْتُ) অর্থাৎ- আমি তাওয়াফে ইফাযাহ্ করেছি।

‘আল্লামা মুল্লা ‘আলী কারী হানাফী (লহঃ) বলেন, ইফরাদ হজ্জকারীর ওপর কোন পাপ নেই এবং তাকে কোন ফিদিয়া-ও দিতে হবে না। আর কিরান ও তামাত্তু' হজ্জকারী তাদের যদি অনিচ্ছাকৃত ভুলটি হয়ে থাকে তাহলে তাদের কোন পাপ হবে না ঠিক তবে তাদের কাফফারা আবশ্যক হবে।

আমি ‘আল্লামা ‘উবায়দুল্লাহ মুবারকপূরী (রহঃ) বলি, ‘আল্লামা মুল্লা ‘আলী (রহঃ) উপরোক্ত ব্যাখ্যা করার কারণ হলো হানাফী মতানুসারে ইফরাদ হজ্জকারীর জন্য কোন কুরবানী আবশ্যক নয় এমনকি হজ্জের কর্মগুলো তারতীব (ধারাবাহিকতার) সাথে আদায় করাও তাদের নিকট আবশ্যক নয়। তবে শুধুমাত্র কংকর নিক্ষেপ ও মাথা মুন্ডানো ব্যতিরেকে।

অপরদিকে কিরান ও তামাত্তু' হজ্জকারী তাদের ওপর কংকর নিক্ষেপ, কুরবানী করা ও মাথা হলক করা ইত্যাদি কাজগুলোতে ترتيب বা ধারাবাহিকতা রক্ষা করা আবশ্যক।

ইমাম খিত্বাবী (রহঃ) বলেন, আসহাবে রায়ের যে সমস্ত ব্যক্তিরা হজ্জের কর্মসমূহে কোন হাজী আগে-পিছে করে ফেলে তাহলে ফিদিয়া দেয়া আবশ্যক এ মত পোষণ করে থাকেন তারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কথা (ارْمِ وَلَا حَرَجَ) কংকর নিক্ষেপ কর কোন অসুবিধা নেই- এ কথার ব্যাখ্যায় বলেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কথা দ্বারা উদ্দেশ্য হলো তোমার কোন পাপ হবে না ঠিক তবে ফিদিয়া দেয়া লাগবে।

তারা আরো বলেন, সম্ভবত ঐ প্রশ্নকারী ইফরাদ হজ্জকারী ছিলেন। সুতরাং তার জন্য ফিদিয়া কুরবানী দেয়া আবশ্যক নয়। আর অনাবশ্যক কুরবানী আগে-পিছে করার কারণে তার ওপর আর কিছুই আবশ্যক হবে না।

ইমাম খিত্বাবী (রহঃ) বলেন, আমি বলব, আসহাবে রায়ের এ মত ঠিক নয়, কারণ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কথা لَا حَرَجَ পাপ ও ফিদিয়া দু’টিকেই অন্তর্ভুক্ত করে, কেননা এটি একটি ‘আম্ তথা ব্যাপক কথা। আর সহাবায়ে কিরাম তামাত্তু' করেছিলেন অথবা কিরান হজ্জ/হজ করেছিলেন যা এ ব্যাপারে বর্ণিত হাদীস দ্বারা বুঝা যায়। আর ‘‘ক্বারিন’’ ও ‘‘মুতামাত্তী’’ উভয়ের ওপর কুরবানী করা আবশ্যক। পাশাপাশি এ বিষয়টিও প্রণিধানযোগ্য যে, এখানে (এ বিষয়টি নিয়ে) যারা প্রশ্নকারী তারা ছিলেন একদল। তারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেনি যেমনটি উসামাহ্ বিন শারীক (রাঃ)-এর হাদীসে রয়েছে। সুতরাং সবাইকে ইফরাদকারী ধরে সকলের ওপর এক হুকুম লাগানো, যেটা আসহাবে রায়ের লোকেরা করেছেন তা সঠিক হয়নি। আর এই আপত্তিটা ছিল অনাবশ্যকীয়।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ