২৬৪৫

পরিচ্ছেদঃ ৭. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - কুরবানীর পশুর বর্ণনা

২৬৪৫-[১৯] নুবায়শাহ্ আল হুযালী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (বিগত বছর) আমি তোমাদেরকে তিন দিনের বেশি কুরবানীর মাংস (গোসত/মাংস) রেখে খেতে নিষেধ করেছিলাম যাতে তোমাদের সকলকে শামিল করে। এ বছর আল্লাহ তা’আলা স্বচ্ছলতা দান করেছেন। সুতরাং এ বছর তোমরা খাও ও জমা রাখো এবং (দান করে) সাওয়াব হাসিল করো। তবে জেনে রাখো, (ঈদের) এ দিনগুলো হলো খাবার দাবার ও আল্লাহর যিকিরের দিন। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ نُبَيْشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عَلَيْهِ وَسلم: «إِن كُنَّا نهينَا عَنْ لُحُومِهَا أَنْ تَأْكُلُوهَا فَوْقَ ثَلَاثٍ لِكَيْ تسَعْكم. جاءَ اللَّهُ بالسَّعَةِ فكُلوا وادَّخِرُوا وأْتَجِروا. أَلَا وَإِنَّ هَذِهِ الْأَيَّامَ أَيَّامُ أَكْلٍ وَشُرْبٍ وذِكْرِ اللَّهِ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

ব্যাখ্যা: হাদীসের বক্তব্য হলো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমাদেরকে কুরবানী গোশ্‌ত (গোসত/গোশত) তিন দিনের অধিক খেতে নিষেধ করা হয়েছিল যাতে যারা কুরবানী দিয়েছে আর যারা দিতে পারেনি সকলেই এর গোশ্‌ত (গোসত/গোশত) পায়। আল্লাহ তা‘আলা এখন প্রশস্ততা দিয়েছেন তাই তোমরা তা খাও, জমা করে রাখ এবং সাদাকা করার মাধ্যমে সাওয়াব অন্বেষণ কর, অর্থাৎ- সাদাকা কর। জেনে রাখ, তাশরীক্বের দিনসমূহ (যিলহজ্জ মাসের ১১, ১২ ও ১৩) খাওয়া, পান করা এবং আল্লাহর স্মরণের দিন। তাই এ দিনসমূহে সিয়াম পালন করা বৈধ নয়। এর কারণ বর্ণনা করতে গিয়ে ‘আলী (রাঃ) বলেছেন, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষেরা আল্লাহর সাক্ষাতের জন্য আগমন করে এবং তারা এ দিনসমূহে তার আতিথেয়তায় থাকে। আর কোন মেহমানের জন্য মেজবানের অনুমতি ব্যতীত সিয়াম পালন করা ঠিক নয়। ইমাম বায়হাক্বী আসারটি মাক্ববুল সনদে বর্ণনা করেছেন।

অন্য একদল লোকেরা বলেছেন, এর রহস্য হলো আল্লাহ তা‘আলা তার বান্দাদেরকে তার গৃহ পরিদর্শনের আহবান জানালেন, তারা তার ডাকে সাড়া দিল এবং প্রত্যেকে তার সাধ্যানুপাতে হাদী নিয়ে এসে সেগুলো কুরবানী করলে তিনি তাদের সে কুরবানী কবূল করে তাদের জন্য তিন দিনের আতিথেয়তা বরাদ্দ করলেন যে দিনগুলোতে তারা খাবে এবং পান করবে। আর রাজা বাদশাদের নিয়ম হলো তারা যখন অতিথিয়তা করে তখন গৃহের অভ্যন্তরের লোকদের যেমন খাওয়ায় তেমনভাবে দ্বারে দন্ডায়মান লোকদেরও ভক্ষণ করায়। কাবা হল গৃহ আর সমগ্র বিশ্বের প্রান্তগুলো গৃহের দ্বার। ফলে আল্লাহ তা‘আলা তার আতিথেয়তায় সকলকে অন্তর্ভুক্ত করে এ দিনগুলোর সিয়াম পালনে বারণ করেছেন। ‘আল্লামা যুরক্বানী বলেন, এখানে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাদ্য পানীয়ের পরে আল্লাহর যিকিরের বিষয়টি নিয়ে এসেছেন এজন্য যে, যাতে বান্দারা নিজেদের অংশ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে আল্লাহর হাক্ব ভুলে না যায়।

ইমাম খাত্ত্বাবী (রহঃ) বলেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উক্তি (أَيَّامُ أَكْلٍ وَشُرْبٍ) প্রমাণ করে যে, তাশরীকের দিনসমূহে সিয়াম পালন করা ঠিক নয়। কারণ তিনি এ দিনসমূহকে চিহ্নিত করেছেন খাওয়া এবং পান করার দ্বারা যেমনিভাবে ঈদের দিনকে সিয়াম ভঙ্গের দ্বারা চিহ্নিত করেছেন এবং সেদিন সিয়াম পালন বৈধতা দেননি। ঠিক অনুরূপ তাশরীকের দিনসমূহ সিয়াম পালন বৈধ নয়। চাই তা নফল সিয়াম হোক বা মানতের সিয়াম হোক বা তামাত্তু' হজ্জ/হজকারীর সিয়াম হোক।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ