২৩৮৫

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - সকাল সন্ধ্যা ও শয্যা গ্রহণকালে যা বলবে

২৩৮৫-[৫] বারা ইবনু ’আযিব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিছানায় ডান কাত হয়ে ঘুমাতেন। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলতেন,

’’আল্ল-হুম্মা আস্‌লামতু নাফসী ইলায়কা ওয়া ওয়াজ্জাহতু ওয়াজহী ইলায়কা ওয়া ফাও্ওয়াযতু আমরী ইলায়কা ওয়া আলজা’তু যহরী ইলায়কা রগবাতান ওয়া রহ্বাতান ইলায়কা লা- মালজাআ ওয়ালা- মানজা- মিনকা ইল্লা- ইলায়কা আ-মানতু বিকিতা-বিকাল্লাযী আনযালতা ওয়া নাবিয়্যিকাল্লাযী আরসালতা’’

(অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আত্মসমর্পণ করলাম, তোমার দিকে চেয়ে থাকলাম, আমার কাজ তোমার ওপর সমর্পণ করলাম এবং ভয়ে ও আগ্রহ ভরে তোমার সাহায্যের উপর ভরসা করলাম। তুমি ছাড়া আর কারো কাছে আশ্রয় ও মুক্তি পাওয়ার কোন স্থান নেই। যে কিতাব তুমি অবতীর্ণ করেছ ও যে নবী তুমি পাঠিয়েছ, সম্পূর্ণরূপে আমি এর উপর বিশ্বাস স্থাপন করি।)। অতঃপর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি এ দু’আ পড়বে তারপর ঐ রাতেই মারা যাবে, সে ইসলামের উপর মৃত্যুবরণ করবে।

অন্য এক বর্ণনায় আছে, বর্ণনাকারী [বারা (রাঃ)] বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈক ব্যক্তিকে বললেন, হে অমুক! তুমি বিছানায় ঘুমানোর সময় সালাতের ওযূর মতো ওযূ করবে এবং ডান কাত হয়ে ঘুমাবে, অতঃপর বলবে, ’’আল্ল-হুম্মা আস্‌লামতু নাফসী ইলায়কা.....আরসালতা’’ (অর্থাৎ- ’হে আল্লাহ! আমি আমার নিজেকে আপনার কাছে আত্মসমর্পণ করলাম ...... পাঠিয়েছ’ পর্যন্ত।) অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যদি তুমি এ রাতেই মৃত্যুবরণ করো, তাহলে ইসলামের উপর মৃত্যুবরণ করবে। আর যদি ভোরে (জীবিত) ওঠো, তাহলে কল্যাণের উপর উঠবে। (বুখারী, মুসলিম)[1]

بَابُ مَا يَقُوْلُ عِنْدَ الصَّبَاحِ وَالْمَسَاءِ وَالْمَنَامِ

وَعَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا أَوَى إِلَى فِرَاشِهِ نَامَ عَلَى شِقِّهِ الْأَيْمَنِ ثُمَّ قَالَ: «اللَّهُمَّ أَسْلَمْتُ نَفَسِي إِلَيْكَ وَوَجَّهْتُ وَجْهِي إِلَيْكَ وَفَوَّضْتُ أَمْرِي إِلَيْكَ وَأَلْجَأْتُ ظَهْرِي إِلَيْكَ رَغْبَةً وَرَهْبَةً إِلَيْكَ لَا مَلْجَأَ وَلَا مَنْجَا مِنْكَ إِلَّا إِلَيْكَ آمَنْتُ بِكِتَابِكَ الَّذِي أَنْزَلْتَ وَنَبِيِّكَ الَّذِي أَرْسَلْتَ» . وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ قَالَهُنَّ ثُمَّ مَاتَ تَحْتَ لَيْلَتِهِ مَاتَ عَلَى الْفِطْرَةِ» وَفِي رِوَايَةٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِرَجُلٍ: يَا فُلَانُ إِذَا أَوَيْتَ إِلَى فِرَاشِكَ فَتَوَضَّأْ وُضُوءَكَ لِلصَّلَاةِ ثُمَّ اضْطَجِعْ عَلَى شِقِّكَ الْأَيْمَنِ ثُمَّ قُلِ: اللَّهُمَّ أَسْلَمْتُ نَفَسِي إِلَيْكَ إِلَى قَوْلِهِ: أَرْسَلْتَ وَقَالَ: «فَإِنْ مِتَّ مِنْ لَيْلَتِكَ مِتَّ عَلَى الْفِطْرَةِ وإِن أصبحتَ أصبتَ خيرا»

ব্যাখ্যা: তিরমিযীতে রাফি' ইবনু খাদীজ (রাঃ)-এর বর্ণিত হাদীসে রয়েছে যে, (ইমাম আত্ তিরমিযী উক্ত হাদীসটিকে হাসান বলেছেন) যদি ঐ রাতে সে মারা যায় তবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।

আহমাদ-এর অপর বর্ণনায় আলোচ্য হাদীসে উল্লেখিত শব্দের পরিবর্তে রয়েছে সে ফিতরাতের উপর মৃত্যুবরণ করবে, তার জন্য জান্নাতে ঘর নির্মাণ করা হবে।

‘আল্লামা নাবাবী (রহঃ) বলেনঃ আলোচ্য হাদীসে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত রয়েছে যা পালন করা মুস্তাহাব, ওয়াজিব নয়।

১. ঘুমানোর সময় উযূ করা। যদি সে উযূ অবস্থায় থাকে তবে সে উযূই তার যথেষ্ট। কেননা রাতে মৃত্যুর আশংকায় পবিত্র অবস্থায় ঘুমানো উদ্দেশ্য, যাতে সত্য স্বপ্ন দেখা যায় এবং ঘুমন্ত অবস্থায় শয়তানের খেলনা হওয়া থেকে বেঁচে থাকা যায়।

২. ডান কাতে ঘুমানো। কেননা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতিটি কাজ ডান দিক থেকে করা ভালবাসতেন।

৩. ঘুমানোর সময় আল্লাহর জিকির করা, যাতে জিকিরই তাঁর শেষ ‘আমল হয়।