২৩৮১

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - সকাল সন্ধ্যা ও শয্যা গ্রহণকালে যা বলবে

الصباح বা সকাল হলো- ফজর উদিত হওয়া থেকে সূর্য উদিত হওয়া পর্যন্ত। আর সন্ধ্যা সূর্য অস্ত হওয়া থেকে। যেমনটি রাগিব (রহঃ) বর্ণনা করেছেন।

নাফি’ ইবনু আযরাক (রহঃ) ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) এর কাছে এসে বললেনঃ আপনি কুরআনুল কারীমে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত পেয়েছেন কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। অতঃপর তিলাওয়াত করলেনঃفَسُبْحَانَ اللهِ حِيْنَ تُمْسُوْنَ তিনি বলেন, এর দ্বারা মাগরিব ও ’ইশার সালাত উদ্দেশ্য।وَحِيْنَ تُصْبِحُوْنَ এর দ্বারা ফজরের সালাত উদ্দেশ্য, وَعَشِيًّا এর দ্বারা ’আসরের সালাত এবং وَحِيْنَ تُظْهِرُوْنَ এর দ্বারা যুহরের সালাত উদ্দেশ্য। (সূরা আর্ রূম ৩০ : ১৭-১৮)

আর এ হলো সাহাবায়ে কিরামদের صباح (সকাল) مساء (সন্ধ্যা)-এর ব্যাখ্যা। আর মুজাহিদ (রহঃ) হতে অনুরূপ বর্ণনা রয়েছে যে, সূর্য অস্ত যাওয়ার পর ব্যতীত المساء বা সন্ধ্যা হবে না। অতএব উক্ত সময়ের জিকিরগুলো(أَمْسَيْنَا وَأَمْسَى الْمُلْكُ لِلّٰهِ) এরূপ হবে। ’আল্লামা নাবাবী (রহঃ) এ অধ্যায়ের অধীনে উল্লেখিত জিকির-আযকার সম্পর্কে বলেনঃ আমি জানি যে, নিশ্চয় এ অধ্যায়টি অত্যন্ত ব্যাপক, এ অধ্যায়ের তুলনায় ব্যাপক কোন অধ্যায় কিতাবটি (মিশকাতুল মাসাবীহ)-তে নেই। আর আমি এ ব্যাপকতার মাঝেও সংক্ষিপ্তকরণের ক্ষেত্রে কিছু আলোচনা করব ইনশা-আল্ল-হ। সুতরাং যে তার সমস্ত ’আমল (অধ্যায়ে উল্লেখিত সমস্ত জিকির-আযকার) করতে সক্ষম হবে এটা তার জন্য নিয়ামত, আল্লাহ তা’আলার পক্ষ হতে অনুগ্রহ এবং তার জন্য সুখবর। আর যে সমস্ত জিকির-আযকার করতে অক্ষম, সে যেন সংক্ষিপ্তাকারে হলেও এ জিকির-আযকারগুলো করে, এমনকি একটি জিকির হলেও। অতঃপর ’আল্লামা নাবাবী (রহঃ) সকাল-সন্ধ্যা, ইশরাক, সূর্য উদিত হওয়ার আগে এবং অস্ত যাওয়ার পরের জিকির, তাসবীহ ও দু’আর নির্দেশ সংক্রান্ত কুরআনুল কারীমের আয়াতে কারীমাগুলো উল্লেখ করলেন।


২৩৮১-[১] ’আবদুল্লাহ ইবনু মাস্’ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সন্ধ্যার সময় বলতেন,

’’আম্‌সায়না- ওয়া আমসাল মুলকু লিল্লা-হি ওয়াল হামদুলিল্লা-হি ওয়ালা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহদাহূ লা- শারীকা লাহূ লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুওয়া ’আলা- কুল্লি শাইয়িন কদীর, আল্ল-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকা মিন খয়রি হা-যিহিল লায়লাতি ওয়া খয়রি মা- ফীহা- ওয়া আ’ঊযুবিকা মিন শার্‌রিহা- ওয়া শার্‌রি মা- ফীহা- আল্ল-হুম্মা ইন্নী আ’ঊযুবিকা মিনাল কাসালি ওয়াল হারামি ওয়াসূয়িল কিবারি ওয়া ফিত্‌নাতিদ্ দুন্ইয়া- ওয়া ’আযা-বিল কবরি’’

(অর্থাৎ- আমরা সন্ধ্যায় প্রবেশ করলাম এবং সন্ধ্যায় প্রবেশ করল সাম্রাজ্যসমূহ আল্লাহর উদ্দেশে। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। আল্লাহ ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন মা’বূদ নেই। তিনি একক, তার কোন শারীক নেই। তাঁরই সাম্রাজ্য। তাঁরই সমস্ত প্রশংসা এবং তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান। হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে এ রাতের কল্যাণ চাই এবং এতে যা আছে তার কল্যাণ। আর আমি আশ্রয় চাই তোমার কাছে রাতের অকল্যাণ হতে আর এতে যা আছে তার অকল্যাণ হতে। হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আশ্রয় চাই, অলসতা, বার্ধক্য ও বার্ধক্যের অপকারিতা এবং দুনিয়ার বিপদাপদ ও কবরের ’আযাব হতে।)।

আর যখন ভোর হতো তখনও তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এরূপ বলতেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলতেন, ’’আস্‌বাহনা- ওয়া আস্‌বাহাল মুলকু লিল্লা-হি’’ (অর্থাৎ- আমরা ভোরে প্রবেশ করলাম, ভোরে প্রবেশ করল সাম্রাজ্যসমূহ আল্লাহর উদ্দেশে)। আর এক বর্ণনায় রয়েছে, ’’রব্বি ইন্নী আ’ঊযুবিকা মিন ’আযা-বিন ফিন্‌না-রি ওয়া ’আযা-বিন ফিল কবরি’’ (অর্থাৎ- হে রব! আমি আশ্রয় চাই তোমার কাছে জাহান্নামের ’আযাব ও কবরের শাস্তি হতে)। (মুসলিম)[1]

بَابُ مَا يَقُوْلُ عِنْدَ الصَّبَاحِ وَالْمَسَاءِ وَالْمَنَامِ

عَن عَبْدِ اللَّهِ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا أَمْسَى قَالَ: «أَمْسَيْنَا وَأَمْسَى الْمُلْكُ لِلَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَلَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ مِنْ خَيْرِ هَذِهِ اللَّيْلَةِ وَخَيْرِ مَا فِيهَا وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا وَشَرِّ مَا فِيهَا اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْكَسَلِ وَالْهَرَمِ وَسُوءِ الْكِبَرِ وَفِتْنَةِ الدُّنْيَا وَعَذَابِ الْقَبْرِ» وَإِذَا أَصْبَحَ قَالَ أَيْضًا: «أَصْبَحْنَا وَأَصْبَحَ الْمُلْكُ لِلَّهِ» . وَفِي رِوَايَةٍ: «رَبِّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابٍ فِي النَّار وَعَذَاب فِي الْقَبْر» . رَوَاهُ مُسلم

ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীসটিতে রুবূবিয়্যাতের দিকে দাসত্ব ও মুখাপেক্ষিতার প্রকাশ ঘটেছে। নিশ্চয়ই প্রত্যেকটি বিষয়ের ভাল ও মন্দ আল্লাহ তা‘আলার হাতেই রয়েছে। আর বান্দার হাতে তার কিছুই নেই এবং এখানে মুসলিম মিল্লাতের জন্য দু‘আ করার আদব জানার ব্যাপারেও শিক্ষা রয়েছে।