২২৬৯

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আল্লাহ সুবহানাহূ ওয়াতা‘আলার জিকির ও তাঁর নৈকট্য লাভ

২২৬৯-[৯] আবূ দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি কি তোমাদেরকে বলে দিব না, তোমাদের কাজ-কর্মের মধ্যে কোন্ কাজটি তোমাদের মালিকের কাছে অধিক পবিত্র এবং তোমাদের মর্যাদা বৃদ্ধির ব্যাপারে অধিক কার্যকর। তাছাড়া তোমাদের জন্য সোনা-রূপা দান করার চেয়েও শ্রেষ্ঠ এবং এ কথার চেয়েও শ্রেষ্ঠ যে, তোমরা শত্রুর মুকাবিলা করবে, তাদের গলা কাটবে, আর তারা তোমাদের গলা কাটবে (যুদ্ধ করবে)। তাঁরা উত্তরে বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনি বলুন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তা হলো আল্লাহর জিকির বা স্মরণ করা। (মালিক, আহমদ, তিরমিযী, ইবনু মাজাহ। কিন্তু ইমাম মালিক এ হাদীসটিকে মাওকূফ হাদীস অর্থাৎ- আবূ দারদা (রাঃ)-এর কথা বলে মনে করেন।)[1]

وَعَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَلَا أُنَبِّئُكُمْ بِخَيْرِ أَعْمَالِكُمْ وَأَزْكَاهَا عِنْدَ مَلِيكِكُمْ؟ وَأَرْفَعِهَا فِي دَرَجَاتِكُمْ؟ وَخَيْرٍ لَكُمْ مِنْ إِنْفَاقِ الذهبِ والوَرِقِ؟ وخيرٍ لكم مِنْ أَنْ تَلْقَوْا عَدُوَّكُمْ فَتَضْرِبُوا أَعْنَاقَهُمْ وَيَضْرِبُوا أَعْنَاقَكُمْ؟» قَالُوا: بَلَى قَالَ: «ذِكْرُ اللَّهِ» . رَوَاهُ مَالِكٌ وَأَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ إِلَّا أَنَّ مَالِكًا وَقفه على أبي الدَّرْدَاء

ব্যাখ্যা:( أَلَا أُنَبِّئُكُمْ) আমি কি তোমাদেরকে সংবাদ দিব না?

(فِىْ دَرَجَاتِكُمْ) অর্থাৎ- জান্নাতের মধ্যে সর্বাধিক মর্যাদার অধিকারীর ব্যাপারে।

(ذِكْرُ اللّٰهِ) অর্থাৎ- সেই উত্তম ‘আমলটি হলো ذِكْرُ اللّٰهِ তথা আল্লাহ স্মরণ করা। এখানে জিকির শব্দটি শর্তহীন রাখার প্রেক্ষিতে এ কথা বুঝায় যে, জিকির কম হোক বা বেশি হোক স্থায়ী হোক আর অস্থায়ী হোক সকল ক্ষেত্রেই কেবল জিকির হলেই হাদীসে বর্ণিত ফাযীলাত লাভে ধন্য হওয়া সম্ভব।

হাদীসটি থেকে এ কথাও বুঝা যায় জিকির হল সর্বাধিক উত্তম ‘আমল যা বান্দা করে থাকে তার রবকে সন্তুষ্ট করার জন্য। ‘আল্লামা সিনদী হানাফী (রহঃ) বলেন, আমরা দেখতে পাই বিভিন্ন সময় রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিভিন্নভাবে প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে সর্বোত্তম ‘আমল সম্পর্কে ভিন্ন ভিন্ন মতামত দিয়েছেন। সুতরাং এর সুষ্ঠু সমাধানকল্পে ‘উলামায়ে কিরাম কয়েকটি কথা বলেছেন।

কেউ কেউ বলেছেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মূলত প্রশ্নকারীর প্রতি খেয়াল করে উত্তর দিয়েছেন তাই যার ভিতরে যে ‘আমলের অভাব দেখেছেন তাকে সে ‘আমলের কথাই বলেছেন যে, এটাই সর্বোত্তম ‘আমল।

যাকে তিনি যা দেখেছেন যে, সে শক্তিমান সুঠাম দেহের ও বিরত্বের অধিকারী তাকে তিনি জিহাদের কথা বলেছেন যে, জিহাদই হলো সর্বোত্তম ‘আমল। আবার যাকে দেখেছেন সম্পদশালী তাকে বলেছেন, দান সদাকাহ্ বা যাকাতের কথা। যাকে দেখেছেন পিতা-মাতার অবাধ্য তাকে বলেছেন পিতা-মাতার সাথে সদাচরণই হলো সর্বোত্তম ‘আমল। আর যাকে দেখেছেন সে না শক্তিশালী না বিত্তবান তাই তাকে বলেছেন তোমার জন্য জিকিরই হলো সর্বোত্তম ‘ইবাদাত।

হাফেয ইবনু হাজার আসকালানী (রহঃ) বলেন, আবূ দারদা (রাঃ) এর হাদীসে উল্লেখিত জিকির দ্বারা জিকিরে কামিল তথা পূর্ণাঙ্গ জিকিরই উদ্দেশ্য যাতে অন্তর ও মুখের সমন্বয় সাধন হয়।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ