২১৭৬

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

২১৭৬-[৬৮] খালিদ ইবনু মা’দান (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, তোমরা মুক্তিদানকারী সূরা ’আলিফ লাম মিম তানযীল’ (সূরা আস্ সিজদা্) পড়ো। কেননা নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ কথা আমার নিকট পৌঁছেছে যে, এক ব্যক্তি এ সূরা পড়ত, এছাড়া আর কোন সূরা পড়ত না। সে ছিল বড় পাপী মানুষ। এ সূরা তার ওপর ডানা মেলে বলতে থাকত, হে রব! তাকে মাফ করে দাও। কারণ সে আমাকে বেশি বেশি তিলাওয়াত করত। তাই আল্লাহ তা’আলা তার ব্যাপারে এ সূরার সুপারিশ গ্রহণ করেন ও বলে দেন যে, তার প্রত্যেক গুনাহের বদলে একটি করে নেকী লিখে নাও। তার মর্যাদা বৃদ্ধি করো।

তিনি (রাবী) আরো বলেন, এ সূরা কবরে এর পাঠকের জন্য আল্লাহর নিকট নিবেদন করবে, হে আল্লাহ! আমি যদি তোমার কিতাবের অংশ হয়ে থাকি, তুমি তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করো। আর যদি আমি তোমার কিতাবের অংশ না হয়ে থাকি, আমাকে তোমার কিতাব হতে মুছে ফেলো। (অন্য বর্ণনায় আছে) তিনি বলেন, এ সূরা পাখীর রূপ ধারণ করে এর পাঠকারীর ওপর পাখা মেলে ধরবে ও তার জন্য সুপারিশ করবে। এর ফলে কবর ’আযাব হতে হিফাযাত করা হবে। বর্ণনাকারী সূরা তাবা-রকাল্লাযী’ (মুল্‌ক) সম্পর্কেও এ একই বর্ণনা করেছেন। খালিদ এ সূরা দু’টি না পড়ে ঘুমাতেন না।

ত্বাউস (রহঃ) বলেন, এ দু’টি সূরাকে কুরআনের অন্য সব সূরা হতে ষাটগুণ অধিক নেকী অর্জনের মর্যাদা দান করা হয়েছে। (দারিমী)[1]

[২১৭৬ নং উপরোক্ত হাদীসটি মির্’আতের মূল গ্রন্থে তিনটি আলাদা নম্বরে আনা হয়েছে]

اَلْفَصْلُ الثَّالِثُ

وَعَن خَالِد بن معدان قَالَ: اقرؤوا المنجية وَهِي (آلم تَنْزِيل) فَإِن بَلَغَنِي أَنَّ رَجُلًا كَانَ يَقْرَؤُهَا مَا يَقْرَأُ شَيْئًا غَيْرَهَا وَكَانَ كَثِيرَ الْخَطَايَا فَنَشَرَتْ جَنَاحَهَا عَلَيْهِ قَالَتْ: رَبِّ اغْفِرْ لَهُ فَإِنَّهُ كَانَ يُكْثِرُ قِرَاءَتِي فَشَفَّعَهَا الرَّبُّ تَعَالَى فِيهِ وَقَالَ: اكْتُبُوا لَهُ بِكُلِّ خَطِيئَةٍ حَسَنَةٍ وَارْفَعُوا لَهُ دَرَجَةً . وَقَالَ أَيْضًا: إِنَّهَا تُجَادِلُ عَنْ صَاحِبِهَا فِي الْقَبْرِ تَقُولُ: اللَّهُمَّ إِنْ كُنْتُ مِنْ كِتَابِكَ فَشَفِّعْنِي فِيهِ وَإِنْ لَمْ أَكُنْ مِنْ كِتَابِكَ فَامْحُنِي عَنْهُ وَإِنَّهَا تَكُونُ كَالطَّيْرِ تَجْعَلُ جَنَاحَهَا عَلَيْهِ فَتَشْفَعُ لَهُ فَتَمْنَعُهُ مِنْ عَذَابِ الْقَبْر وَقَالَ فِي (تبَارك) مثله. وَكَانَ خَالِد لَا يَبِيتُ حَتَّى يَقْرَأَهُمَا. وَقَالَ طَاوُوسُ: فُضِّلَتَا عَلَى كُلِّ سُورَةٍ فِي الْقُرْآنِ بِسِتِّينَ حَسَنَةً. رَوَاهُ الدَّارمِيّ

ব্যাখ্যা: তোমরা মুক্তি দানকারী সূরা অর্থাৎ- আলিফ-লাম-মীম, তানযীল সূরা পাঠ করো। মুক্তি দানকারী হলো কবরের ‘আযাব থেকে এবং হাশরের শাস্তি থেকে মুক্তি দানকারী। কেউ কেউ বলেছেন, দুনিয়ার ‘আযাব এবং আখিরাতের ‘আযাব থেকে মুক্তিদানকারী।

বিশিষ্ট তাবি‘ঈ ত্বাউস বলেন, আলিফ লা-ম মীম তানযীল এবং সূরা তাবা-রকাল্লাযী-কে অন্যান্য সকল সূরা হতে ষাটগুণ মর্যাদা বেশী দান করা হয়েছে।

ইবনু হাজার আসকালানী (রহঃ) বলেন, এটা ঐ হাদীসের পরিপন্থী নয় যে, সহীহ হাদীসে সূরা আল বাকারাকে সূরা আল ফাতিহার পর কুরআনের সর্বোত্তম সূরা বলে অভিহিত করা হয়েছে। কেননা অনেক সময় তুলনামূলক কম উত্তম বস্ত্তর মধ্যেও এমন কতক গুণ ও বৈশিষ্ট্য পাওয়া যায় যা অধিক উত্তমের মধ্যে পাওয়া যায় না। তোমরা কি দেখো না অনেক উত্তম উত্তম সূরা থাকা সত্ত্বেও বিতর সালাতে সূরা সাব্বিহিসমা, সূরা আল কা-ফিরূন এবং সূরা আল ইখলাস পড়া উত্তম? অনুরূপ সূরা আস্ সিজদা্, সূরা আদ্ দাহর জুমার দিনে ফজরের সালাতে পাঠ করা অন্যান্য সূরা থেকে উত্তম?

কেউ কেউ বলেছেন ঐ দু’টি সূরা সার্বিক বিবেচনায় উত্তম নয় বরং কবরের ‘আযাব থেকে নিষ্কৃতিদানে এবং সেটা বাধাদানে অন্যান্য সকল সূরা থেকে উত্তম।