১৯০৩

পরিচ্ছেদঃ ৬. প্রথম অনুচ্ছেদ - সদাক্বার মর্যাদা

১৯০৩-[১৬] ইবনু ’উমার (রাঃ) ও আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তাঁরা উভয়ে বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ শুধু একটি বিড়ালকে বেঁধে রেখে ক্ষুধায় কষ্ট দিয়ে হত্যা করার কারণে একজন মহিলাকে শাস্তি দেয়া হয়েছিল। মহিলাটি বিড়ালটিকে না খাবার দাবার দিত, না ছেড়ে দিত। বিড়ালটি মাটির নীচের কিছু (ইঁদুর ইত্যাদি) খেত। (বুখারী, মুসলিম)[1]

بَابُ فَضْلِ الصَّدَقَةِ

وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ وَأَبِي هُرَيْرَةَ قَالَا: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «عُذِّبَتِ امْرَأَةٌ فِي هِرَّةٍ أَمْسَكَتْهَا حَتَّى مَاتَتْ مِنَ الْجُوعِ فَلَمْ تَكُنْ تُطْعِمُهَا وَلَا تُرْسِلُهَا فَتَأْكُلَ مِنْ خَشَاشِ الْأَرْضِ»

ব্যাখ্যা: (امْرَأَةٌ) হাফিয ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ) বলেন, আমি এ মহিলার নামটি জানতে পারিনি। তবে অপর এক বর্ণনায় এসেছে, সে মহিলাটি হচ্ছে হিম্ইয়ার গোত্রভুক্ত। অন্য রিওয়ায়াতে আছে, সে বানী ইসরাঈলের অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে এ দু’ বর্ণনায় কোন বৈপরীত্য নেই। কারণ হিম্ইয়ার গোত্রের একটি দাস ইয়াহূদী হয়ে গিয়েছিল। সুতরাং তাকে বানী ইসরাঈলের সাথে সম্পৃক্ত করা এ দৃষ্টিকোণ থেকে ঠিক আছে আবর হিম্ইয়ার গোত্রের দিকেও সম্পৃক্ত করা ঠিক হবে কারণ হিম্ইয়ার তার গোত্রের নাম।

আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেন, অত্র হাদীসে الْأَرْضِ তথা পৃথিবীর উল্লেখ করাটা আল কুরআনের আয়াত وَمَا مِنْ دَابَّةٍ فِي الْأَرْضِ অর্থাৎ ‘‘ভূপৃষ্ঠে বিচরণশীল এমন কোন জীব নেই’’- (সূরাহ্ আল আন্‘আম ৬ : ৩৮)-এর মতো। এখানে الْأَرْضِ ব্যবহার করা হয়েছে ব্যাপকতা বুঝানোর জন্য। তারপর হাদীসের বাহ্যিক অর্থ থেকে বুঝা যায়, বিড়ালটিকে আটকে রেখে হত্যা করার দরুন মহিলাটিকে শাস্তি দেয়া হলো। এ মহিলাটি কি মু’মিনাহ্ ছিল নাকি কাফিরাহ্ ছিল এ ব্যাপারে যথেষ্ট মতবিরোধ রয়েছে।

আল্লামা কুরতুবী ও ক্বাযী ‘আয়ায (রহঃ) বলেন, সম্ভবত সে কাফিরাহ্ ছিল তাই কুফরীর কারণে তাকে শাস্তি দেয়া হলো আর বিড়ালের ওপর যুলম করার কারণে তার শাস্তি আরো বৃদ্ধি করা হলো। এ শাস্তির সে উপযুক্ত হলো কারণ সে মু’মিনা ছিল না যাতে করে কাবীরাহ্ (কবিরা) গুনাহ থেকে বিরত থাকার প্রেক্ষিতে তার ছোট গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেয়া হবে। আর এটাও সম্ভাবনা রয়েছে যে, সে মুসলিমা ছিল কিন্তু বিড়ালের ওপর যুলম করার কারণে তাকে শাস্তি দেয়া হলো।

ইমাম নাবাবী (রহঃ) বলেন, সঠিক কথা হলো সে মু’মিনা ছিল আর হাদীসের বাহ্যিক দিক থেকে বুঝা যায় বিড়ালের কারণে তাকে শাস্তি দেয়া হয়েছে আর এ গুনাহটি কোন সগীরাহ্ গুনাহ নয় বরং এর উপর إصرار তথা অটল থাকার প্রেক্ষক্ষতে তা কাবীরাহ্ (কবিরা) গুনাহের রূপ নিয়েছে। তবে হাদীসের মধ্যে তার চিরস্থায়ী জাহান্নামী হওয়ার কথা বলা হয়নি।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ