১৩৭৬

পরিচ্ছেদঃ ৪৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জুমু‘আর সালাত ফরয

১৩৭৬-[৭] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জুমু’আর সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) তার ওপরই ফরয যে তার ঘরে রাত কাটায়। (তিরমিযী, তার মতে হাদীসের সানাদ দুর্বল)[1]

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «الْجُمُعَةُ عَلَى مَنْ آوَاهُ اللَّيْلُ إِلَى أَهْلِهِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيث إِسْنَاده ضَعِيف

ব্যাখ্যা: আল মাজহার (রহঃ) বলেন যে, জুমু‘আহ্ ঐ ব্যক্তির ওপর ওয়াজিব যার বাসস্থান এবং যে স্থানে জুমু‘আর সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করা হয় তার মাঝে এমন দূরত্ব যে, সে জুমু‘আহ্ আদায় করার পর তার বাসস্থানে রাতের পূর্বেই ফিরতে পারবে তার ওপর জুমু‘আহ্ ওয়াজিব। হাফিয (রহঃ) ফাতহুল বারীতে এ হাদীস উল্লেখ করার পর বলেন, এর অর্থ হলোঃ যে জুমু‘আহ্ পড়ে রাত হওয়ার পূর্বেই তার পরিবারে ফিরতে পারবে তার ওপরই জুমু‘আহ্ ওয়াজিব।

‘‘প্রিয় পাঠক, জেনে রাখতে হবে যে, ‘উলামাগণ ঐকমত্য পোষণ করেছেন যে, জুমু‘আর জন্য জামা‘আত, সময়, খুতবাহ্, বালেগ বিবেকবান বা জ্ঞান সম্পন্ন, পুরুষ, স্বাধীন, সুস্থ এবং মুক্বীম হওয়া শর্ত। তবে জুমু‘আর জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যা শর্ত কি-না এ ব্যাপারে ‘উলামাগণের মাঝে মতপার্থক্য রয়েছে এবং তাতে অনেক মত রয়েছেন, যা ইবনু হাজার (রহঃ) উল্লেখ করেছেন ফাতহুল বারীতে (৪র্থ খন্ড, ৫০৭ পৃঃ), ইবনু হাযম উল্লেখ করেছেন আল মাহলীতে (৫ম খন্ড, ৪৬-৪৯ পৃঃ), শাওকানী (রহঃ) উল্লেখ করেছেন আন নায়লুল আওতারে (৩য় খন্ড, ১০৮, ১০৯ পৃষ্ঠা)।

তন্মধ্যে একটি মত হলোঃ দু’জন, যেমন জামা‘আতের জন্য দু’জন শর্ত। এটাই আন্ নাখ্‘ঈ ও আহলুয্ যাহিরদের মত। দ্বিতীয় মত হলো, দু’জন ইমামের সাথে এবং এটা আবূ ইউসুফ ও মুহাম্মাদ (রহঃ)-এর মত। তৃতীয়তঃ ইমামের সাথে তিনজন, আর এটাই হানাফী মাযহাবের মত। চতুর্থতঃ ১২ জন, পঞ্চমতঃ ইমামের সাথে ৪ জন, এটা ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ)-এর মত এবং এ দু’টো মতের যে কোন একটি গ্রহণ করার পক্ষে ইমাম আহমাদ (রহঃ) মত দিয়েছেন।

মির‘আত প্রণেতা (রহঃ) বলেনঃ আমার নিকট অধিক অগ্রগণ্য মত হলো আহলুয্ যাহিরদের মত, তা হলোঃ দু’জনের সাথেই জুমু‘আহ্ বিশুদ্ধ হবে। কেননা সংখ্যার শর্তের কোন দলীল নেই, আর সকল সালাতে দু’জনেই জামা‘আত বিশুদ্ধ হয়। আর জুমু‘আহ্ ও জামা‘আত-এর মাঝে কোন পার্থক্য নেই। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে কোন বক্তব্য নেই যে, এ সংখ্যা ছাড়া জুমু‘আহ্ সংঘটিত হবে না। (আল্লাহ তা‘আলাই ভাল জানেন)

জুমু‘আহ্ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার স্থান নিয়েও ‘উলামাদের মাঝে মতপার্থক্য রয়েছে। ইমাম আবূ হানীফাহ্ ও তার সহচরবৃন্দ বলেছেন, শহর ব্যতীত জুমু‘আহ্ সঠিক হবে না। ইমামত্রয় বলেছেন, শহর ও গ্রামে সবখানেই জুমু‘আহ্ বৈধ। হানাফীগণ ‘আলী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত ‘‘জামে' শহর ব্যতীত জুমু‘আহ্ হবে না’’ হাদীস দ্বারা দলীল গ্রহণ করেছেন। আহমাদ এটিকে য‘ঈফ বলেছেন, তবে আমাদের নিকট ইমামত্রয়ের মতই গ্রহণযোগ্য ও অগ্রগণ্য যে, জুমু‘আর জন্য শহরবাসী হওয়া শর্ত নয় বরং তা গ্রামবাসীর জন্যও বৈধ, কারণ সূরাহ্ আল জুমু‘আর ৯নং আয়াতটি ‘আম এবং মুত্বলাক্ব।

গ্রামে জুমু‘আহ্ পড়া শারী‘আত সম্মত, এর উপর ইমাম বুখারী (রহঃ) ও অন্যান্যের বর্ণনায় ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত (মাসজীদে নাবাবীতে সংঘটিত জুমু‘আর পর প্রথম জুমু‘আহ্ হয়েছিল যাওয়াই গ্রামের ‘আবদুল ক্বায়স গোত্রের মাসজিদ যা ছিল বাহরাইনের একটি গ্রাম [যাওয়াই]) হাদীস প্রমাণ করে। আর বায়হাক্বীর বর্ণনায় রয়েছে যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনায় আগমনের সময় মদীনাহ্ এবং কুবা-এর মধ্যবর্তী গ্রামে প্রথম জুমু‘আহ্ আদায় করেছেন।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ