১৩৩৭

পরিচ্ছেদঃ ৪১. প্রথম অনুচ্ছেদ - সফরের সালাত

১৩৩৭-[৫] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ভ্রমণে গিয়ে ঊনিশ দিন অবস্থান করেন। এ সময় তিনি দু’ রাক্’আত করে ফরয সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করেন। ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমরাও মক্কা মদীনার মধ্যে কোথাও গেলে সেখানে ঊনিশ দিন অবস্থান করলে, আমরা দু’ রাক্’আত করে সালাত আদায় করতাম। এর চেয়ে বেশী দিন অবস্থান করলে চার রাক্’আত করে সালাত ক্বায়িম করতাম। (বুখারী)[1]

بَابُ صَلَاةِ السَّفَرِ

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: سَافَرَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَفَرًا فَأَقَامَ تِسْعَةَ عَشَرَ يَوْمًا يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ رَكْعَتَيْنِ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ: فَنَحْنُ نُصَلِّي فِيمَا بَيْنَنَا وَبَيْنَ مَكَّةَ تِسْعَةَ عَشَرَ رَكْعَتَيْنِ رَكْعَتَيْنِ فَإِذَا أَقَمْنَا أَكْثَرَ مِنْ ذَلِك صلينَا أَرْبعا. رَوَاهُ البُخَارِيّ

ব্যাখ্যা: মক্কা বিজয়ের সময় বুখারীর বর্ণনায় কিতাবুল মাগাযীতে রয়েছে যে, ‘‘নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কায় ১৯ দিন অবস্থান করলেন এবং সালাত ক্বসর করে দু’ রাক্‘আত আদায় করলেন’’ এবং ইবনু তায়মিয়্যাহ্ (রহঃ) তা উল্লেখ করছেন আল মুনতাক্বা‘ গ্রন্থে যে, মক্কা বিজয় হলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে ১৯ দিন অবস্থান করেছেন এবং দু’ রাক্‘আত করে সালাত আদায় করেছেন।

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) এ হাদীস থেকে মাস্আলাহ্ ইস্তিম্বাত স্বরূপ বললেনঃ

(فَنَحْنُ نُصَلِّيْ فِيْمَا بَيْنَنَا وَبَيْنَ مَكَّةَ تِسْعَةَ عَشَرَ)

 অর্থাৎ ১৯ দিন, তিরমিযীর বর্ণনায় রয়েছে যে, আমরা আমাদের ও ১৯ দিনের মাঝে দু’ রাক্‘আত করে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করতাম।

বুখারীতে রয়েছে, আমরা ১৯ দিনের মধ্য সালাত ক্বসর করতাম। বায়হাক্বীতে রয়েছে, যখন আমরা সফর করতাম অতঃপর ১৯ দিন স্থায়ী হতাম তখন দু’ রাক্‘আত করে সালাত আদায় করতাম।

আর যখন আমরা ১৯-এর অধিক অবস্থান করতাম তখন আমরা চার রাক্‘আত সালাত আদায় করতাম এবং এটাই ইসহসক (রহঃ) গ্রহণ করেছেন। যেমন- হাফিয আসক্বালানী (রহঃ)-এর বক্তব্য অতিবাহিত হয়েছে যে, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) ও ইসহাক-এর নিকট সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ক্বসরের সীমা হলো ১৯ দিন।

বরং সারকথা হলো নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কায় এ নির্ধারিত সময়ই (১৯ দিন) অবস্থান করেছেন এবং তিনি জানতেন না যে, তার অবস্থান কখন পর্যন্ত, কারণ প্রয়োজন শেষ হলেই তাকে ফিরে আসতে হবে। আর এরূপ অবস্থার স্বীকার যে হবে তাকে সর্বদাই ক্বসর করতে হবে।

কেননা সে তো স্থায়ী অবস্থানের নিয়্যাতই করেনি, কাজে সে মূলত সফরেই থাকবে। এ জন্য ইমাম আত্ তিরমিযী (রহঃ) বলেছেন, বিদ্বানগণ একমত হয়েছেন যে, যতক্ষণ পর্যন্ত মুসাফির তার অবস্থানের দিন বা স্থান নির্ধারণ না করবে ততক্ষণ তাকে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ক্বসর করতেই হবে, যদি সে এক বছরও অতিবাহিত করে।

ইবনুল মুনযির (রহঃ) অনুরূপ বলেছেন। কিন্তু ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর হাদীস দ্বারা যে ব্যক্তি নির্ধারিত এ সময়ের (১৯ দিন) বেশী অবস্থান করবে সে পূর্ণ সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করবে।

যেমন- ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) ও ইসহসক বলেন যে, এটাই অস্পষ্টতা বা অনিশ্চয়তার (অর্থাৎ সফর থেকে আজ ফিরব, কি কাল, না কি পরশু কিংবা তারপর দিন.....) শেষ চূড়ান্ত।

ইমাম তায়মিয়্যাহ্ (রহঃ) এ জটিলতার সমাধান দিয়েছেন আহকাম আস সফরের ৮১ পৃষ্ঠায়। সেখানে উল্লেখ রয়েছে যে, নিশ্চয় তিনি [ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)] অবহিত ছিলেন যে, মক্কায় এবং তাবূকে কি করতে ছিলেন, তিন কিংবা চার দিনে মক্কা কিংবা তাবূক যুদ্ধের কাজ সমাধা করতে পারেননি, এমনকি বলা হত যে, নিশ্চয় তিনি (রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলতেন যে, আজ সফর থেকে ফিরব, কাল সফর থেকে ফিরব..... কিন্তু তিনি মক্কা বিজয় করলেন এবং তার (মক্কার) চারপাশে কাফির যুদ্ধারা। আর এ শহর ছিল বিজিত শহরগুলোর মধ্যে বৃহৎ ও মর্যাদা সম্পন্ন এবং এ বিজয়টি ছিল শত্রুদের জন্য বড়ই লাঞ্ছনা এবং আরববাসীর ইসলাম কবূল করল এই সফরেই। উদাহরণস্বরূপ এ বৃহৎ কাজগুলো তিনি ৪ দিনে শেষ করতে পারেননি বিধায় এ কাজগুলোর সমাধা পর্যন্ত তিনি মক্কায় অবস্থান করছিলেন। (আর এভাবে তার সফর দীর্ঘায়িত হয়ে ১৯ দিন পর্যন্ত গড়ায়) অনুরূপ ঘটনা তাবূকেও ঘটেছিল।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ