১৩১১

পরিচ্ছেদঃ ৩৮. প্রথম অনুচ্ছেদ - ইশরাক ও চাশ্‌তের সালাত

১৩১১-[৩] আবূ যার গিফারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ সকাল হতেই তোমাদের প্রত্যেকের প্রতিটা গ্রন্থির জন্যে ’সদাক্বাহ্ (সাদাকা)’ দেয়া অবশ্য দায়িত্ব। অতএব প্রতিটা ’তাসবীহ’ই অর্থাৎ ’সুবহা-নাল্ল-হ’ বলা ’সদাক্বাহ্ (সাদাকা)’। প্রতিটি ’তাহমীদ’ই অর্থাৎ ’আলহামদুলিল্লা-হ’ পড়া সদাক্বাহ্ (সাদাকা)। প্রতিটি ’তাহলীল’ অর্থাৎ ’লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ’ বলা সদাক্বাহ্ (সাদাকা)। প্রতিটি ’তাকবীর’ অর্থাৎ ’আল্ল-হু আকবার’ বলা সদাক্বাহ্ (সাদাকা)। ’নেক কাজের নির্দেশ’ করা সদাক্বাহ্ (সাদাকা)। মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করা সদাক্বাহ্ (সাদাকা)। আর এ সবের পরিবর্তে ’যুহার দু’ রাক্’আত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ)’ আদায় করে নেয়া যথেষ্ট। (মুসলিম)[1]

بَابُ صَلَاةِ الضُّحى

وَعَنْ أَبِي ذَرٍّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يُصْبِحُ عَلَى كُلِّ سُلَامَى مِنْ أَحَدِكُمْ صَدَقَةٌ فَكُلُّ تَسْبِيحَةٍ صَدَقَةٌ وَكُلُّ تَحْمِيدَةٍ صَدَقَةٌ وَكُلُّ تَهْلِيلَةٍ صَدَقَةٌ وَكُلُّ تَكْبِيرَةٍ صَدَقَةٌ وَأَمْرٌ بِالْمَعْرُوفِ صَدَقَةٌ وَنَهْيٌ عَنِ الْمُنْكَرِ صَدَقَةٌ وَيُجْزِئُ مِنْ ذَلِكَ رَكْعَتَانِ يَرْكَعُهُمَا من الضُّحَى» . رَوَاهُ مُسلم

ব্যাখ্যা: (يُصْبِحُ عَلى كُلِّ سُلَامى مِنْ أَحَدِكُمْ صَدَقَةٌ) এখানে سُلَامى শব্দের ব্যাপারে অঙ্গুলিগুলোর হাঁড় এবং সমগ্র তালু, অতঃপর এটি ব্যবহার হয় সমস্ত শরীরের হাড় ও তার জোড়া বুঝাতে এবং এ শব্দের উপর প্রমাণ বহন করে সহীহ মুসলিমের হাদীস ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত, মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে ৩৬০টি জোড়ার উপর এবং প্রতিটি জোড়ায় রয়েছে সদাক্বাহ্ (সাদাকা)।

অনুরূপ সকল যিকর-আযকার এবং অন্যান্য ‘ইবাদাতগুলোও স্বয়ং যিকরকারীর ওপর সদাক্বাহ্ (সাদাকা) হিসেবে পরিগণিত হবে। দু’ রাক্‘আত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সদাক্বার জন্য যথেষ্ট হবে। কারণ সালাত শরীরের সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ‘আমল, প্রতিটি অঙ্গ তার কৃতজ্ঞতায় দাঁড়িয়ে যায় এবং সালাত উল্লেখিত সদাক্বাগুলোসহ অন্যান্য সদাক্বাকেও অন্তর্ভুক্ত করে। কেননা তার মধ্যে নিজের জন্য ভাল কর্মের নির্দেশ রয়েছে এবং কৃতজ্ঞতা বর্জনের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে এবং নিশ্চয়ই সালাত অশ্লীল ও ঘৃণিত কাজ থেকে বিরত রাখে।

আলোচ্য হাদীস সালাতুয্ যুহার ফাযীলাত ও তার দৃঢ় অবস্থান এবং শার‘ঈভাবে তার গুরুত্বের উপর প্রমাণ করে এবং সেটার দু’ রাক্‘আত সালাত শরীরের ৩৬০টি জোড়ার সদাক্বাহ্ (সাদাকা) হিসেবে যথেষ্ট হবে। বিষয়টি যখন এরূপই বুঝায় কাজেই তা সর্বদা বা চলমান ‘আমল হওয়াই তার প্রকৃত রূপ বা চাহিদা এবং হাদীসটি এ মর্মেও দলীল যে, বেশী বেশী তাসবীহ পড়া, বেশী বেশী তাহমীদ (আলহাম্‌দুলিল্লা-হ বলা), তাহলীল (‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ বলা) সৎ কাজের আদেশ অসৎ কাজের নিষেধ করা এবং আল্লাহর যাবতীয় আনুগত্য ও নৈকট্য অর্জন শার‘ঈ সুন্নাত, যাতে করে প্রতিদিনে মানুষের ওপর যে আবশ্যকীয় সদাক্বাহ্ (সাদাকা) রয়েছে তা আলোচ্য ‘আমলগুলোর মাধ্যমে সম্পাদিত হয়।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ