১২১৯

পরিচ্ছেদঃ ৩৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - ক্বিয়ামুল লায়ল-এর প্রতি উৎসাহ দান

১২১৯-[১] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ তোমাদের কোন লোক যখন (রাতে) ঘুমিয়ে যায়, শায়ত্বন (শয়তান) তার মাথার পেছনের দিকে তিনটি গিরা লাগায়। প্রত্যেক গিরায় শায়ত্বন (শয়তান) তার মনে এ কথার উদ্রেক করে দেয় যে, এখনো অনেক রাত বাকী, কাজেই ঘুমিয়ে থাকো। সে যদি রাতে জেগে উঠে এবং আল্লাহর নাম স্মরণ করে তাহলে তার (গাফলতির) একটি গিরা খুলে যায়। তারপর সে যদি উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করে, (গাফলতির) আর একটি গিরা খুলে যায়। যদি সে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আরম্ভ করে তখন তার তৃতীয় গিরাটিও খুলে যায়। বস্ত্ততঃ এ লোক পাক-পবিত্র হয়ে ভোরের মুখ দেখে, নতুবা অপবিত্র হয়ে ভোরের দিকে কলূষ অন্তর ও অলস মন নিয়ে উঠে। (বুখারী, মুসলিম)[1]

بَابُ التَّحْرِيْضِ عَلى قِيَامِ اللَّيْلِ

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم قَالَ: يَعْقِدُ الشَّيْطَانُ عَلَى قَافِيَةِ رَأْسِ أَحَدِكُمْ إِذَا هُوَ نَامَ ثَلَاثَ عُقَدٍ يَضْرِبُ عَلَى كُلِّ عُقْدَةٍ: عَلَيْكَ لَيْلٌ طَوِيلٌ فَارْقُدْ. فَإِنِ اسْتَيْقَظَ فَذَكَرَ اللَّهَ انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ فَإِنْ تَوَضَّأَ انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ فَإِنْ صَلَّى انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ فَأَصْبَحَ نَشِيطًا طيب النَّفس وَإِلَّا أصبح خَبِيث النَّفس كسلانا

ব্যাখ্যা: শায়ত্বন (শয়তান) কয়েক শ্রেণীর মানুষ ছাড়া সকলের গ্রীবাদেশে নিদ্রার সময় তিনটি গিরা দিয়ে থাকে। শায়ত্বন (শয়তান) দ্বারা এখানে (الجنس) জিন্‌স বা জাতি উদ্দেশ্য অর্থাৎ শায়ত্বনের (শয়তানের) সাথী বা সহকর্মী অথবা সাহায্যকারী ইত্যাদি হতে পারে। তবে এখানে শায়ত্বনের (শয়তানের) শীর্ষ নেতা অর্থাৎ ইবলীসের নিজে হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণী, ‘তোমাদের প্রত্যেকের গ্রীবাদেশে গিরা লাগায়’ কিন্তু কয়েক শ্রেণীর মানুষ শায়ত্বনের (শয়তানের) এ অপকর্মের প্রভাব থেকে নিরাপদে থাকবে। তারা হলেনঃ

১। নাবী রসূলগণ।

২। ঐ শ্রেণীর লোক যাদের ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, ‘আমার এমন বান্দা রয়েছেন যাদের উপর তোমার কোন রাজত্ব চলবে না। যেমন ঐ ব্যক্তি যে রাত্রিবেলা নিদ্রা গমনকালে আয়াতুল করসী পাঠ করে ঘুমায়। (এছাড়াও রাতে সূরাহ্ বাক্বারাহ্ তিলাওয়াতকারীর বাড়ীতেও শায়ত্বন প্রবেশ করতে পারে না।) এরা সকাল হওয়া পর্যন্ত শায়ত্বনের (শয়তানের) অনিষ্টতা থেকে মাহফূয থাকবে।

শায়ত্বন প্রত্যেক গিরা সময় বলে ‘ঘুমাও তোমার জন্য রাত দীর্ঘ রয়েছে।’ তিনটা গীরার কথা বলা হয়েছে হয়তো তাকীদের জন্য অথবা তিনটি কাজের দ্বারা খুলবে এজন্য তিনটি গিরার কথাই বলা হয়েছে। প্রথম গিরা খুললে যিকিরের (জিকিরের) দ্বারা দ্বিতীয়টি উযূর দ্বারা, তৃতীয়টি সালাতের দ্বারা। এ যেন প্রতিটি গিরার জন্য প্রতিটি কাজ প্রতিরোধক ও প্রতিকারক।

এভাবে রাত যাপন করার পর সকালে সে সাওয়াব আর প্রশান্তি নিয়ে আনন্দচিত্তে অতীব পবিত্র অবস্থায় জাগরিত হয়। আল্লাহ তা‘আলা তার এ সুন্দর কাজে বারাকাত দান করেন। আর যদি এরূপ না করে অর্থাৎ দু‘আ কালাম পাঠ না করেই, উযূ (ওযু/ওজু/অজু) না করেই, সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় না করেই শুধু ঘুমিয়ে রাত কাটায় তার উপর শায়ত্বনের (শয়তানের) মন্ত্র কার্যকর হয়, ফলে সে সকাল বেলা অলস অবশ দেহে, বিষণ্ণ ও দুঃশ্চিন্তা মনে জাগরিত হয়।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ