১১৩৭

পরিচ্ছেদঃ ২৮. প্রথম অনুচ্ছেদ - মুক্তাদীর ওপর ইমামের যা অনুসরণ করা কর্তব্য এবং মাসবূকের হুকুম

১১৩৭-[২] আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করালেন। সালাত শেষে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের দিকে মুখ ফিরিয়ে বসলেন এবং বললেন, হে লোক সকল! আমি তোমাদের ইমাম। তাই তোমরা রুকূ’ করার সময়, সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করার সময়, দাঁড়াবার সময় সালাম ফিরাবার সময় আমার আগে যাবে না, আমি নিশ্চয়ই তোমাদেরকে আমার সম্মুখ দিয়ে পেছন দিক দিয়ে দেখে থাকি। (মুসলিম)[1]

بَابُ مَا عَلَى الْمَأْمُومِ مِنَ الْمُتَابَعَةِ وَحُكْمِ الْمَسْبُوْقِ

وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: صَلَّى بِنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَاتَ يَوْمٍ فَلَمَّا قَضَى صَلَاتَهُ أَقْبَلَ عَلَيْنَا بِوَجْهِهِ فَقَالَ: أَيُّهَا النَّاسُ إِنِّي إِمَامُكُمْ فَلَا تَسْبِقُونِي بِالرُّكُوعِ وَلَا بِالسُّجُودِ وَلَا بِالْقِيَامِ وَلَا بِالِانْصِرَافِ: فَإِنِّي أَرَاكُمْ أَمَامِي وَمن خَلْفي . رَوَاهُ مُسلم

ব্যাখ্যা: (فَلَا تَسْبِقُونِي بِالرُّكُوعِ وَلَا بِالسُّجُودِ وَلَا بِالْقِيَامِ وَلَا بِالِانْصِرَافِ) হাদীস থেকে অর্জন উল্লেখিত অবস্থাগুলোতে ইমামের অনুকরণ তথা ইমামের কাজের পর মুক্তাদী কাজ করবে তবে কতিপয় বিদ্বান উল্লেখিত দলীলের মাধ্যমে ইমাম ও মুক্তাদীর কাজ একই সময় সমাধা করাকে বৈধ বলেছেন। কিন্তু এ ধরনের প্রমাণ বহন করে যে, মুক্তাদী সালাতে কোন কাজ ইমামের আগে করবে না। অপরদিকে উল্লেখিত ভাষ্যের অর্থ প্রমাণ বহন করছে যে, প্রতিটি কাজ মুক্তাদীকে ইমামের পরে করতে হবে। পক্ষান্তরে মুক্তাদীর কাজ ইমামের সাথে সাথে হতে হবে এ ব্যাপারে হাদীসটি নিশ্চুপ। ইমাম নাবাবী বলেনঃ হাদীসে (انصراف) শব্দ দ্বারা সালাম ফিরানো উদ্দেশ্য।

এছাড়া এ সম্ভাবনাও রয়েছে যে, মুক্তাদী দু‘আ পাওয়ার উদ্দেশ্য ইমামের পূর্বে সালাতের স্থান থেকে উঠে যাওয়াকে নিষেধ করা উদ্দেশ্য। অথবা (انصراف) দ্বারা সালাতের স্থান থেকে উঠে যাওয়াকে নিষেধ করা উদ্দেশ্য এ কারণেও হতে পারে যে, হয়ত সালাতে ইমামের কোন ভুল হবে অতঃপর তা স্মরণ হলে ইমাম তা দোহরাবে এমতাবস্থায় সে মসজিদে থাকলে ইমামের সাথে তা দোহরাবে যেমন যুল ইয়াদাঈন এর ঘটনাতে ঘটেছে। অথবা মহিলারা যাতে পুরুষদের আগে বাড়ি ফিরে যেতে পারে। যেমন তাশাহুদের ক্ষেত্রে দু‘আর অধ্যায়ে আনাসের পূর্বোক্ত হাদীসে নিষেধাজ্ঞার কারণ বর্ণনাতে বলা হয়েছে।

আর তা ‘‘নিশ্চয় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে সালাতের ব্যাপারে উৎসাহ দিয়েছেন এবং সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) থেকে তাঁর ফিরে যাওয়ার পূর্বে তাদেরকে ফিরতে নিষেধ করেছেন’’ এ শব্দে বর্ণনা করেছেন। অধ্যায়ের হাদীসের ব্যাখ্যাতে ত্বীবী বলেনঃ হাদীসে (انصراف) দ্বারা সালাত পরিসমাপ্তি করাও উদ্দেশ্য হতে পারে এবং মাসজিদ থেকে বের হওয়াও উদ্দেশ্য হতে পারে। ক্বারী বলেনঃ আগে পরের সাথে মিল না থাকাতে দ্বিতীয় সম্ভাবনাটি চূড়ান্ত পর্যায়ের বাতিল অবস্থায় রয়েছে এবং নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাসজিদ থেকে বের হওয়ার আগে মুসল্লীদের বের হওয়া সম্পর্কে কোন নিষেধাজ্ঞাও জানা যায়নি।

‘উবায়দুল্লাহ মুবারকপূরী বলেনঃ আমি বলব, দ্বিতীয় সম্ভাবনাটিকে আমাদের এইমাত্র বর্ণনা করা আনাস (রাঃ)-এর হাদীস সমর্থন করছে। একে আরও সমর্থন করছে তাশাহুদে দু‘আ করা অধ্যায়ে উম্মু সালামার পূর্বোক্ত হাদীস। আর তা ‘‘নিশ্চয় রসূলের যুগে মহিলাগণ যখন ফরয সালাতের সালাম ফিরাতো তখন তারা দাঁড়িয়ে যেত এবং রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও পুরুষদের থেকে যারা রসূলের সাথে সালাত আদায় করত তারা আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী বিলম্ব করত।

অতঃপর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন দাঁড়াতো তখন পুরুষেরাও দাঁড়াতো। (أَمَامِي) অর্থাৎ সালাতের বাইরে আমার সামনে। (وَمن خَلْفي) অর্থাৎ সালাতের ভিতরাংশে অলৌকিক পদ্ধতিতে লক্ষ্য করা। অর্থাৎ আমি তোমাদেরকে যেমন আমার সামনের দিক থেকে দেখতে পাই যেমন পেছন দিক থেকে দেখতে পাই।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ