৯২৬

পরিচ্ছেদঃ ১৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওপর দরূদ পাঠ ও তার মর্যাদা

৯২৬-[৮] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছিঃ তোমরা তোমাদের ঘরকে কবরস্থান বানিও না, আর আমার কবরকেও উৎসবস্থলে পরিণত করো না। আমার প্রতি তোমরা দরূদ পাঠ করবে। তোমাদের দরূদ নিশ্চয়ই আমার কাছে পৌঁছে, তোমরা যেখানেই থাক না কেন। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْهُ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «لَا تَجْعَلُوا بُيُوتَكُمْ قُبُورًا وَلَا تَجْعَلُوا قَبْرِي عِيدًا وَصَلُّوا عَلَيَّ فَإِنَّ صَلَاتكُمْ تبلغني حَيْثُ كُنْتُم» . رَوَاهُ النَّسَائِيّ

ব্যাখ্যা: (لَا تَجْعَلُوْا بُيُوْتَكُمْ قُبُوْرًا) তোমরা তোমাদের ঘরকে কবরস্থানে পরিণত করো না। অর্থাৎ- তোমরা ঘরকে কবরের মতো করে ফেলো না যেখানে কোন ‘ইবাদাত করা যায় না। এমনকি সালাতও আদায় করা যায় না। বরং ঘরেও তোমরা সালাত আদায় কর এবং ‘ইবাদাতের একটি অংশ তাতে আদায় কর। এও বলা হয়ে থাকে যে, হাদীসের এ অংশ দ্বারা ঘরে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় ও ‘ইবাদাত করার জন্য উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। মৃত ব্যক্তি তাদের ঘরে, অর্থাৎ- কবরে সালাত আদায় করে না। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেন বলতে চেয়েছেন তোমরা মৃত ব্যক্তির মতো হইও না যারা তাদের ঘরে সালাত আদায় করে না। আর তা হলো কবর। অথবা তিনি বলেছেন, তোমরা তোমাদের ঘরে সালাত পরিত্যাগ করো না যাতে তোমরা মৃত ব্যক্তির ন্যায় হয়ে যাও। আর তোমাদের ঘরগুলো কবরের মতো হয়ে যায়। এখানে ‘ইবাদাতহীন ঘরকে কবরের সাথে আর ঘরে ‘ইবাদাত থেকে গাফিল ব্যক্তির সাথে তুলনা করা হয়েছে। মূলত এ হাদীসে কবরে ‘ইবাদাত করতে নিষেধ করা হয়েছে এবং ঘরে ‘ইবাদাত করতে উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে।

(لَا تَجْعَلُوْا قَبْرِىْ عِيْدًا) আমার কবরকে ঈদগাহে পরিণত করো না। অর্থাৎ- আমার কবর যিয়ারতের নামে ঈদগাহে সমবেত হওয়ার মতো সমবেত হইও না। ঈদের দিন হচ্ছে আনন্দ ও সাজগোজ করার দিন। আর কবর যিয়ারতের অবস্থা এর বিপরীত। ইমাম মা'নাবী বলেন, এর অর্থ হচ্ছে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কবর যিয়ারতের উদ্দেশে ঈদের দিনের মতো সমবেত হতে বারণ করেছেন। এই নিষেধটা তাঁর উম্মাতকে কষ্ট থেকে পরিত্রাণ দেয়া অথবা কবর যিয়ারত করতে যেয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সম্মান দেয়ার ক্ষেত্রে সীমালঙ্ঘন করাও উদ্দেশ্য হতে পারে। এটা তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) অপছন্দ করেছেন সে কারণেও নিষেধ করে থাকতে পারেন। তিনি আরো বলেন, এ হাদীস থেকে এটাও সাব্যস্ত হয় যে, কোন ওলী বা দরবেশের কবরে বছরের কোন নির্দিষ্ট দিনে বা মাসে একত্র হয়ে তার জন্ম দিবস পালন করা, খানাপিনা করা, নাচ গান করা ইসলামী শারী‘আতে নিষিদ্ধ।

ইমাম ইবনু তায়মিয়াহ্ (রহঃ) তাঁর ‘ইক্বতিযাউস্ সিরাতিল মুস্‌তাক্বীম’ নামক গ্রন্থে বলেন, এ হাদীসের অর্থ হলো তোমরা ঘরগুলোতে সালাত আদায়, দু‘আ করা ও কুরআন তিলাওয়াত করা বন্ধ করে দিও না। তাহলে তা কবরের ন্যায় হয়ে যাবে। অতএব তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঘরে ‘ইবাদাত করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং কবরের পাশে ‘ইবাদাত করতে নিষেধ করেছেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ