৬৯২

পরিচ্ছেদঃ ৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - মাসজিদ ও সালাতের স্থান

৬৯২-[৪] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মসজিদে হারাম ছাড়া, আমার এই মসজিদে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করা অন্য জায়গায় এক হাজার রাক্’আত সালাত আদায় করার চেয়ে উত্তম। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ الْمَسَاجِدِ وَمَوَاضِعِ الصَّلَاةِ

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «صَلَاةٌ فِي مَسْجِدِي هَذَا خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ صَلَاةٍ فِيمَا سِوَاهُ إِلَّا الْمَسْجِدَ الْحَرَام»

ব্যাখ্যা: এ মাসজিদ বলতে মসজিদে নাবাবী, মসজিদে কুবা নয়।

মসজিদে নাবাবীর যে ফাযীলাত ও মাহাত্ম্য হাদীসে বর্ণিত হয়েছে তা কি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে নির্মিত মসজিদের অংশের সাথে নির্দিষ্ট, না পরবর্তীতে বর্ধিতাংশের মধ্যেও উক্ত ফাযীলাত রয়েছে- এ ব্যাপারে মতবিরোধ রয়েছে।

ইমাম নাবাবী বলেন, এ মাহাত্ম্য ও মর্যাদা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক নির্মিত মসজিদের অংশের জন্যই নির্দিষ্ট। কেননা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- مَسْجِدِي هذَا এটা আমার মাসজিদ। তবে হানাফী মাযহাব মতাবলম্বী ও অন্যান্য মতে বর্ধিতাংশও মসজিদের ফাযীলাতের অন্তর্ভুক্ত। ‘উমার (রাঃ) যখন মসজিদে নাবাবী বৃদ্ধি করেছিলেন বলেছিলেন যদি যুল্ হুলায়ফাহ্ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হতো, তাহলে তা রসূলের মাসজিদ হিসেবে গণ্য করা হতো।

মসজিদে নাবাবীর ফাযীলাত সম্পর্কে ত্ববারানীতে মারফূ‘ সূত্রে হাদীসে এসেছে। মসজিদে হারামে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ১ লক্ষ গুণ, আমার মসজিদে এক হাজার গুণ এবং বায়তুল আক্বসা (আকসা)‘ পাঁচশত গুণ।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ইন্তিকালের পরে মসজিদে নাবাবীর যে অংশ সম্প্রসারণ করা হয়েছে তা কি মসজিদে নাবাবীর অন্তর্ভুক্ত- এ বিষয়ে মতভেদ রয়েছে। হানাফীদের মতে তা মসজিদে নাবাবীর অন্তর্ভুক্ত। কেননা, সাহাবীগণের উপস্থিতিতে মসজিদে নাবাবী বৃদ্ধির ব্যাপারে খুলাফায়ে রাশিদীনরা জায়িয বলেছেন। অথচ এ ব্যাপারে কোন সাহাবী অস্বীকৃতি জানাননি। আর মদীনার ইতিহাসে ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি যখন মসজিদে সম্প্রসারণের কাজটুকু শেষ করলেন, তখন তিনি বললেনঃ যদি এটা জাবানা নামক জায়গায় গিয়ে শেষ হয়। অন্য একটি বর্ণনায় এসেছে, যদি এটা যুলহুলায়ফায় গিয়ে শেষ হয় তাহলেও সম্পূর্ণ জায়গাটাই আল্লাহর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মাসজিদরূপে গণ্য হবে।

تميز الطيب من الخبيث নামক গ্রন্থে বলেছেনঃ আমার মসজিদে এক রাক্‘আত সালাত আদায় করা অন্যান্য মসজিদে এক হাজার রাক্‘আত সালাত আদায় করার সমতুল্য, মসজিদে হারাম ব্যতীত। যদি তা ইয়ামানের সন্‘আ নামক জায়গা পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়।

রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার মসজিদে (নাবাবী) এক রাক্‘আত সালাত আদায় করা অন্যান্য মসজিদে এক হাজার রাক্‘আত সালাত আদায় করা হতেও উত্তম, মসজিদে হারাম ব্যতীত। আর মসজিদে হারামে এক রাক্‘আত সালাত আদায় করা মসজিদে নাবাবীতে একশত রাক্‘আত সালাত আদায় করা হতে উত্তম। (ইবনু হিব্বান)

ইবনু হিববানে অন্য একটি বর্ণনায় এসেছে- মসজিদে হারামে এক রাক্‘আত সালাত আদায় করা মদীনার মসজিদে একশত রাক্‘আত সালাত আদায় করা হতে উত্তম।

জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীস অনুরূপ প্রমাণ করে যেটা ইবনু মাজাহ মারফূ' সূত্রে বর্ণনা করেছেন। তাতে রয়েছে-

মসজিদে হারামে এক রাক্‘আত সালাত আদায় করা অন্যান্য মসজিদে একহাজার রাক্‘আতের সালাত আদায় করা হতেও উত্তম।

বাযযার এবং ত্ববারানী মারফূ' সূত্রে বর্ণনা করেছেন। হাদীসটি হলোঃ মসজিদে হারামে এক রাক্‘আত সালাত আদায় করা অন্য মসজিদে একলক্ষ রাক্‘আত সালাত আদায় করার মতো। আর আমার মসজিদে (মসজিদে নাবাবীতে) এক রাক্‘আত সালাত আদায় করা অন্য মসজিদে একহাজার রাক্‘আত সালাত আদায় করার অনুরূপ। আর বায়তুল মুকাদ্দাসে এক রাক্‘আত সালাত আদায় করা পাঁচশত রাক্‘আত সালাত আদায়ের ন্যায়।

মুল্লা ‘আলী ক্বারী বলেছেনঃ দ্বিগুণ হওয়ার ব্যাপারে বিরোধপূর্ণ রিওয়ায়াতের মাঝে কোন সমস্যা নেই এটার উপর ভিত্তি করে যে, কম সংখ্যার হাদীসগুলো বেশী সংখ্যার হাদীসগুলোর পূর্বেকার। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা একটার উপর আরেকটাকে বৃদ্ধি করে দিয়েছেন- অবস্থা ও সংখ্যার তারতম্যের মাধ্যমে। যা বর্ণিত হয়েছেঃ নিশ্চয়ই উত্তম কর্মগুলো দশ থেকে সত্তর এ থেকে সাতশত গুণের চেয়েও বেশী বৃদ্ধি করা হয়।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ