২৬

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ

২৬-[২৫] আবূ যার গিফারী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি (একবার) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমাতে পৌঁছলাম। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একটি সাদা কাপড় পরিহিত অবস্থায় ঘুমিয়েছিলেন। আমি ফেরত চলে এলাম। অতঃপর পুনরায় তাঁর নিকট গেলাম। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জেগে ছিলেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) (আমাকে দেখে) বললেন, যে ব্যক্তি (অন্তরের সাথে) ’লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ বলবে আর এ বিশ্বাসের উপর তার মৃত্যু হবে, সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে। আমি বললাম, সে চুরি ও ব্যভিচার (এর মতো বড় গুনাহ) করে থাকে তবুও? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ সে চুরি ও ব্যভিচার করলেও। আমি পুনরায় জিজ্ঞেস করলাম, চুরি ও ব্যভিচার করার পরও? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ হ্যাঁ, চুরি ও ব্যভিচারের ন্যায় গুনাহ করলেও। আবূ যার-এর নাক ধূলায় মলিন হলেও। বর্ণনাকারী বলেন, যখনই আবূ যার (রাঃ) এ হাদীসটি বর্ণনা করতেন (গৌরবের সাথে) এ শেষ বাক্যটি ’আবূ যার-এর নাক ধূলায় মলিন হলেও’ অবশ্যই বর্ণনা করতেন। (বুখারী, মুসলিম)[1]

الفصل الاول

وَعَنْ أَبِي ذَرٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ أَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَعَلَيْهِ ثَوْبٌ أَبْيَضُ وَهُوَ نَائِمٌ ثُمَّ أَتَيْتُهُ وَقَدِ اسْتَيْقَظَ فَقَالَ: «مَا مِنْ عَبْدٍ قَالَ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ ثُمَّ مَاتَ عَلَى ذَلِكَ إِلَّا دَخَلَ الْجَنَّةَ قُلْتُ وَإِنْ زَنَى وَإِنْ سَرَقَ قَالَ وَإِنْ زَنَى وَإِنْ سَرَقَ قُلْتُ وَإِنْ زَنَى وَإِنْ سَرَقَ قَالَ وَإِنْ زَنَى وَإِنْ سَرَقَ قُلْتُ وَإِنْ زَنَى وَإِنْ سَرَقَ قَالَ وَإِنْ زَنَى وَإِنْ سَرَقَ عَلَى رَغْمِ أَنْفِ أَبِي ذَرٍّ وَكَانَ أَبُو ذَرٍّ إِذَا حَدَّثَ بِهَذَا قَالَ وَإِنْ رَغِمَ أَنْفُ أَبِي ذَر»

Chapter - Section 1


Abu Dharr said: I came to the Prophet and found him asleep under a white sheet. When I came back to him after he had awakened he said, “If anyone says there is no god but God and dies in that belief, he will enter paradise.” I asked, “Even if he commits fornication and even if he steals?” He replied, “Even if he commits fornication and even if he steals.” I asked, “Even if he commits fornication and even if he steals?” He replied, “Even if he commits fornication and even if he steals.” I asked, “Even if he commits fornication and even if he steals?” He replied, “Even if he commits fornication and even if he steals, in spite of Abu Dharr.” When Abu Dharr told this he said, “Even if Abu Dharr’s pride is humbled.” (Bukhari and Muslim.)

ব্যাখ্যা : হাদীস থেকে এ কথা স্পষ্ট যে, কোন ব্যক্তি ঈমানের উপর মৃত্যুবরণ করলে সে নিশ্চিত জান্নাতে প্রবেশ করবে। তবে এ কথা ঠিক যদি সে কাবীরাহ্ (কবিরা) গুনাহ না করে। অথবা কাবীরাহ্ (কবিরা) গুনাহ করলেও তার উপর অটল থেকে মারা না যায়। তবে সে প্রথমেই অর্থাৎ- কোন প্রকার শাস্তি ভোগ না করেই জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যদি সে কোন কাবীরাহ্ (কবিরা) গুনাহ করে এবং তার উপর অটল থেকেই মারা যায় তবে সে আল্লাহর ইচ্ছার অধীন। তাকে যদি আল্লাহ ক্ষমা করেন তবে সে শাস্তি ভোগ না করেই জান্নাতে যাবে। আর আল্লাহ যদি ক্ষমা না করেন তবে পাপানুসারে সে শাস্তি ভোগ করবে। অতঃপর তাকে জাহান্নাম থেকে বের করে স্থায়ীভাবে জান্নাতে দেয়া হবে।

‘‘যদিও সে যিনা করে ও চুরি করে’’ এ থেকে বুঝা যায় যে, যদি কোন মু’মিন সকল ধরনের কাবীরাহ্ (কবিরা) গুনাহ করে আর তাকে ক্ষমা করা হয় তাহলে শাস্তি ভোগ না করেই সে জান্নাতে যাবে। আর ক্ষমা করা না হলে শাস্তি ভোগ করার পর জান্নাতে যাবে। হাদীসে কাবীরাহ্ (কবিরা) গুনাহের দু’টি প্রকার উল্লেখ করা হয়েছে। এ কথা বুঝানোর জন্য যে, গুনাহ দুই প্রকারঃ আল্লাহর হক যেমন যিনা করা, আর বান্দার হক যেমন অন্যায়ভাবে তাদের মাল আত্মসাৎ করা।

হাদীসের শিক্ষাঃ

(১) কাবীরাহ্ (কবিরা) গুনাহ দ্বারা ঈমান দূরীভূত হয় না। কেননা যে ব্যক্তি মু’মিন নয় সে কক্ষনো জান্নাতে প্রবেশ করবে না। এ বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত।

(২) কাবীরাহ্ (কবিরা) গুনাহ তার অন্যান্য পুণ্যকর্মের সাওয়াব বিনষ্ট করে না।

(৩) কাবীরাহ্ (কবিরা) গুনাহকারী স্থায়ীভাবে জাহান্নামী হবে না। শাস্তি ভোগ করার পর সে জান্নাতে যাবে।