পরিচ্ছেদঃ ৬৪/৩১. আহযাব যুদ্ধ থেকে নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রত্যাবর্তন এবং তাঁর বনূ কুরাইযাহ অভিযান ও তাদেরকে অবরোধ।
৪১১৯. ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আহযাব যুদ্ধের দিন (যুদ্ধ শেষে) বললেন, বনূ কুরাইযায় না পৌঁছে কেউ ‘আসরের সালাত আদায় করবে না।[1] তাদের একাংশের পথিমধ্যে আসরের সালাতের সময় হয়ে গেলে কেউ কেউ বললেন, আমরা সেখানে পৌঁছার আগে সালাত আদায় করব না। আবার কেউ কেউ বললেন, আমরা এখনই সালাত আদায় করব, সময় হলেও রাস্তায় সালাত আদায় করা যাবে না উদ্দেশ্য তা নয়। বিষয়টি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে বলা হলে তিনি তাদের কোন দলের প্রতিই অসন্তুষ্টি ব্যক্ত করেননি। [৯৪৬] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৮১৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৮১৬)
[1] বনূ কুরাইযাহর বিশ্বাসঘাতকার কারণে আহযাব যুদ্ধের দিন যুদ্ধ শেষে নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নির্দেশ মতে মুসলিম বাহিনী বনূ কুরাইয়া রওয়ানা হন। নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনু কুরইযাহ্কে তাদের কৃতকর্মের কারণ দর্শানোর জন্য ডেকে পাঠান। কিন্তু বনূ কুরাইযাহ তখন দূর্গদ্বার বন্ধ করে দেয় এবং যুদ্ধের পুরোপুরি প্রস্তুতি গ্রহণ করে। এ সময় মুসলিমগণ জানতে পারেন যে, বনূ নাযীরের নেতা হুইয়াই ইবনু আখতাব যে বনূ কুরাইযাহ্কে মুসলিমদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিতে এসেছিল সেও দূর্গের মধ্যে বিদ্যমান। বনূ কুরাইযাহ্র বিশ্বাসঘাতকার এটাই প্রথম ঘটনা ছিল না। বাদর যুদ্ধেও এরা কুরায়শদেরকে অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে সাহায্য করলেও রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। তারা দূর্গ বন্ধ করে দেয়ায় বাধ্য হয়েই মুসলিমদেরকে যুদ্ধ করতে হয়েছি। যিলহাজ্জ মাসে তাদের দূর্গ অবরোধ করা হয়েছিল যা পঁচিশ দিন স্থায়ী ছিল। এ অবরোধের ফলে তারা কঠিন সংকটে পতিত হয়। ফলে তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সম্মত করে নিল যে, তাউস গোত্রের সা‘আদ ইবনু মু‘আযকে বিচারক বানিয়ে দেয়া হোক। এবং তিনি যে মীমাংসা দিবেন সেটাকে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ও মেনে নিবেন। হয়ত তারা এটা ভেবেছিল যে, যেহেতু তাউস গোত্রের মুসলিমদের সাথে তাদের পূর্বে বন্ধুত্ব ছিল তাই তারা মনে করলো যে, নিশ্চয়ই তারা তাদের ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম অপেক্ষা হালকা শাস্তি দিবে। আল্লাহই ভাল জানেন। কিন্তু সব দিক বিচার বিশ্লেষণ করে তিনি যে ফায়সালা দিলেন তা হলোঃ (১) বনূ কুরাইযাহর পুরুষ যোদ্ধাদের হত্যা করা হবে। (২) মহিলা ও শিশুদেরকে দাস-দাসী বানিয়ে নেয়া হবে। (৩) ধন-সম্পদ বন্টন করে নেয়া হবে। কিন্তু আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) যে বর্ণনা করেছেন তাতে তাদের মহিলা ও শিশুদেরকে দাস দাসী বানিয়ে নেয়ার কথা উল্লেখ নেই।
তাদের নিজেদের মনোনীত ও নির্বাচিত বিচারক ঠিক ঐ ফায়সালাই দিলেন যা ইয়াহূদীরা তাদের শত্রুদেরকে দিয়ে থাকতো, যা তাদের শরী‘আতে আছে। (উর্দু তরজমা কাদীম হিন্দুস্তান কী তাহযীব)
এ ব্যাপারে যথেষ্ট প্রমাণ বিদ্যমান আছে যে, যদি বনূ কুরাইযা তাদের ব্যাপারটা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর অর্পণ করতো তাহলে তাদেরকে তিনি বড়জোর এ শাস্তি দিতেন যে, তাদেরকে বলতেনঃ ‘‘যাও তোমরা খায়বারে গিয়ে বসতি স্থাপন কর।’’ যেমনটি করেছিলেন বনূ কাইনুক ও বনূ নাযীরের ব্যাপারে। কেননা এরূপ ফায়সালার পরও রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনূ কুরায়যার কয়েকজনের প্রতি দয়াপরবশ হয়ে ভিন্ন ফায়সালা কার্যকর করেছিলেন। যেমন ইয়াহূদী যুবায়রের জন্য নির্দেশ ছিল যে, তার স্ত্রী-পুত্র, পরিবার ও ধনমাল সহ মুক্ত করে দেয়া হোক। অনুরূপ রিফা‘আহজ ইবনু শামূঈল নামক ইয়াহূদীকেও তিনি রেহাই দিয়েছিলেন। (তারীখে তাবারী ৫৭ ও ৫৮ পৃষ্ঠা)
بَاب مَرْجِعِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنَ الْأَحْزَابِ وَمَخْرَجِهِ إِلَى بَنِيْ قُرَيْظَةَ وَمُحَاصَرَتِهِ إِيَّاهُمْ
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ أَسْمَاءَ حَدَّثَنَا جُوَيْرِيَةُ بْنُ أَسْمَاءَ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ الْأَحْزَابِ لَا يُصَلِّيَنَّ أَحَدٌ الْعَصْرَ إِلَّا فِيْ بَنِيْ قُرَيْظَةَ فَأَدْرَكَ بَعْضُهُمْ الْعَصْرَ فِي الطَّرِيْقِ فَقَالَ بَعْضُهُمْ لَا نُصَلِّيْ حَتَّى نَأْتِيَهَا وَقَالَ بَعْضُهُمْ بَلْ نُصَلِّيْ لَمْ يُرِدْ مِنَّا ذَلِكَ فَذُكِرَ ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ يُعَنِّفْ وَاحِدًا مِنْهُمْ.
Narrated Ibn `Umar:
On the day of Al-Ahzab (i.e. Clans) the Prophet (ﷺ) said, "None of you Muslims) should offer the `Asr prayer but at Banu Quraiza's place." The `Asr prayer became due for some of them on the way. Some of those said, "We will not offer it till we reach it, the place of Banu Quraiza," while some others said, "No, we will pray at this spot, for the Prophet (ﷺ) did not mean that for us." Later on It was mentioned to the Prophet (ﷺ) and he did not berate any of the two groups.