হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code
৫৯৭৪

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - অধ্যায় [রাসূলুল্লাহ (সা.) কোন প্রকার আর্থিক ওয়াসিয়্যাত করেননি- মর্মে আলোচনা]

৫৯৭৪-[২] জুওয়াইরিয়াহ্ (রাঃ)-এর ভাই ’আমর ইবনুল হারিস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) মৃত্যুর সময় দীনার-দিরহাম, দাস-দাসী এবং অন্য কিছুই রেখে যাননি। শুধুমাত্র একটি সাদা খচ্চর ও তাঁর যুদ্ধাস্ত্র আর কিছু জমিন এবং এগুলো সাদাকা্ হিসেবে রেখে যান। (বুখারী)

الفصل الاول (بَاب)

عَن عَمْرو بن الْحَارِث أخي جوَيْرِية قَالَ: مَا تَرَكَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عِنْدَ مَوْتِهِ دِينَارًا وَلَا دِرْهَمًا وَلَا عَبْدًا وَلَا أَمَةً وَلَا شَيْئًا إِلَّا بَغْلَتَهُ الْبَيْضَاءَ وَسِلَاحَهُ وَأَرْضًا جَعَلَهَا صَدَقَةً. رَوَاهُ البُخَارِيّ رواہ البخاری (2739) ۔ (صَحِيح)

ব্যাখ্যা: (مَا تَرَكَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عِنْدَ مَوْتِهِ دِينَارًا وَلَا دِرْهَمًا وَلَا عَبْدًا وَلَا أَمَةً) “রাসূল (সা.) তাঁর মৃত্যুর সময় কোন দীনার-দিরহাম ও কোন দাস-দাসী রেখে যাননি।” অর্থাৎ রাসূল (সা.) মৃত্যুর সময় তার কোন দাসদাসী ছিল না যারা দাস-দাসী হিসেবে তাঁর মালিকানায় থেকে তার সেবা করত। এখান থেকে বুঝা যায় যে, যে সব হাদীসে রাসূল (সা.) -এর দাস-দাসী ছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে তারা হয়তো তার জীবদ্দশায় মারা গিয়েছিল অথবা নবী (সা.) তাদেরকে স্বাধীন করে দিয়েছিলেন।
“তার যুদ্ধাস্ত্র ছিল” অর্থৎ যেসব যুদ্ধাস্ত্র তার ব্যবহারে থাকত। যেমন, তরবারি, বর্শা, বর্ম, শিরস্ত্রাণ ইত্যাদি। এখানে এ জিনিসগুলোকে শুধুমাত্র উল্লেখ করা হয়েছে এছাড়াও অন্য কিছু জিনিস তিনি (সা.) রেখে গিয়েছিলেন যা অন্যস্থানে উল্লেখ করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ- কাপড়-চোপড়, বাড়ির প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, তিনি (সা.) যে কাপড় ও অন্যান্য কিছু জিনিস ছেড়ে গেছেন তা অন্য জায়গায় উল্লেখ আছে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)

“তিনি এগুলো সদাকাহ্ হিসেবে রেখে যান।” এ ব্যাপারে ব্যাখ্যাকার লিখেছেন যে, জা'আলাহা- এর যমীর বা সর্বনাম পূর্বের সকল বস্তু তথা খচ্চর, যুদ্ধাস্ত্র ও জমিন- এর দিকে ফিরেছে, যদিও বাহ্যিকভাবে এটা বুঝে আসে যে, জা'আলাহা- এর যমীর শুধুমাত্র জমিনের দিকে ফিরেছে। ইবনু হাজার আল আসকালানী (রহিমাহুল্লাহ) লিখেছেন- “এগুলোকে তিনি সদাকাহ্ হিসেবে রেখে যান। এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, রাসূল (সা.) জমিনের লাভ সদাকাহ করেছিলেন অর্থাৎ এখানে সদাকাহ্ শব্দটা ওয়াকফ-এর হুকুমে। অন্য কথায় এভাবে বলা যায় যে, রাসূল (সা.) উক্ত জমিনকে তা অবশিষ্ট ও বিদ্যমান থাকা পর্যন্ত তাঁর জীবদ্দশায় সদাকায়ে জারিয়াহ্ করে দিয়েছিলেন। এভাবে উক্ত জমিন যতদিন বিদ্যমান থাকবে তার সদাকার সাওয়াব রাসূল (সা.) পেতে থাকবেন। অতএব এ কথা এ বিষয়ের বিরোধী নয় যে, অবশিষ্ট যে কয়টি বস্তু রসূলের নিকট ছিল তা রাসূল (সা.)-এর মৃত্যুর সাথে সাথে সদাকাহ্ হয়ে গেছে।
‘আল্লামাহ্ কিরমানী (রহিমাহুল্লাহ) সহীহুল বুখারীর ব্যাখ্যাগ্রন্থে লিখেছেন, হাদীসে জমির যে উল্লেখ রয়েছে তা দ্বারা ওয়াদীয়ে কুরার অর্ধেক জমি, খায়বারের জমির পঞ্চম অংশ এবং বানূ নাযীর-এর জায়গা জমির ঐ অংশ উদ্দেশ্য যা রাসূল (সা.) নিজের জন্য নির্দিষ্ট করেছিলেন। আর জা'আলাহা-এর জমির উল্লেখিত বস্তুদ্বয় তথা খচ্চর, যুদ্ধাস্ত্র ও জমিরে দিকে ফিরেছে শুধুমাত্র জমিরে দিকে ফিরেনি। আর এ কথা রাসূল (সা.) এর কথার দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, “আমরা নবীরা মীরাস রেখে যাই না, তাই যা কিছু রেখে যান তা সদাকাহ্ হয়ে যায়।” (মিরকাতুল মাফাতীহ, মাযাহিরে হাক শারহে মিশকাত ৭ম খণ্ড, ২২২ পৃষ্ঠা)