হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code
৫২৮৯

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ইবাদতের জন্য হায়াত ও দৌলতের আকাঙ্ক্ষা করা

৫২৮৯-[৬] শাদ্দাদ ইবনু আওস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: যে ব্যক্তি নিজের প্রবৃত্তিকে স্বীয় আয়ত্তাধীনে রেখেছেন এবং মৃত্যুর পরের জন্য নেকির পুঁজি সংগ্রহ করেছে, সে ব্যক্তিই প্রকৃত সবল ও বুদ্ধিমান। আর যে ব্যক্তি স্বীয় প্রবৃত্তির অনুসারী হয়ে আল্লাহর প্রতি ক্ষমার আশা পোষণ করে, মূলত সে-ই অক্ষম (নির্বোধ)। (তিরমিযী ও ইবনু মাজাহ)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابُ اسْتِحْبَابِ الْمَالِ وَالْعُمُرِ لِلطَّاعَةِ)

وَعَنْ شَدَّادِ بْنِ أَوْسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : «الْكَيِّسُ مَنْ دَانَ نَفْسَهُ وَعَمِلَ لِمَا بَعْدَ الْمَوْتِ. وَالْعَاجِزُ مَنْ أَتْبَعَ نَفْسَهُ هَوَاهَا وَتَمَنَّى عَلَى اللَّهِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (2459) و ابن ماجہ (4260) * ابوبکر بن ابی مریم ضعیف مختلط ۔ (ضَعِيف)

ব্যাখ্যা : (الْكَيِّسُ مَنْ دَانَ نَفْسَهُ) বিচক্ষণ সেই ব্যক্তি যে নিজেকে আল্লাহর আনুগত্যে নিয়োজিত রাখে বা নিজের নফসের হিসাব নিজেই করে থাকে। হাদীসে (الْكَيِّسُ) শব্দের অর্থ হচ্ছে, যে কোন বিষয়ের পরিণতি সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান রাখে।

(مَنْ دَانَ نَفْسَهُ) এর অর্থ হচ্ছে যে নিজের নাফসে আল্লাহর বিধানের অনুগত করে রাখে। কেউ কেউ বলেন, যে নিজের নাফসের হিসাব নেয়। অর্থাৎ যে দুনিয়াতে তার কথা, ‘আমল ও অবস্থা হিসাব করে দেখে। যদি তা ভালো হয় তাহলে আল্লাহর প্রশংসা করে আর যদি মন্দ হয় তাহলে আল্লাহর নিকট তাওবাহ্ করে এবং ছুটে যাওয়া ‘আমলগুলো সম্পাদন করার চেষ্টা করে। যেমনটি হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, (حَاسِبُواأَنْفُسَكُمْ قَبْلَ أَنْ تُحَاسَبُوا) এবং আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন,  (…وَ لۡتَنۡظُرۡ نَفۡسٌ مَّا قَدَّمَتۡ لِغَدٍ ...)“...প্রত্যেকেই চিন্তা করে দেখুক, আগামীকালের জন্য সে কী (পুণ্য কাজ) অগ্রিম পাঠিয়েছে...”- (সূরা আল হাশর ৫৯ : ১৮)। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)।

(وَعَمِلَ لِمَا بَعْدَ الْمَوْتِ) অর্থাৎ মৃত্যু আসার পূর্বেই ভালো কাজগুলো সম্পাদন করে যাতে পরকালে আল্লাহ প্রদত্ত নূর পেতে সক্ষম হয়। অতএব মৃত্যু হচ্ছে দুনিয়ার কাজগুলোর পুরস্কার প্রাপ্তির মাধ্যম, তাই পরিণতি ভেবে যে কাজ করে সেই জ্ঞানী।
 (وَالْعَاجِزُ) অক্ষম হচ্ছে সেই ব্যক্তি যে জ্ঞানকে কাজে লাগাতে ব্যর্থ এবং কাজের পরিণতি সম্পর্কে অসচেতন বা অবহেলাকারী। মূলত বিচক্ষণ ব্যক্তি হলো শক্তিশালী ঈমানদার আর অক্ষম ব্যক্তি হলো দুর্বল ঈমানের অধিকারী।
(مَنْ أَتْبَعَ نَفْسَهُ هَوَاهَا) যে নিজেকে প্রবৃত্তির অনুসারী বানায় ফলে তাকে প্রবৃত্তির অনুসরণ করা থেকে বিরত রাখতে সক্ষম হয় না এবং হারাম কাজে জড়িত হওয়াকে বাধা দান করে না।
(وَتَمَنَّى عَلَى اللَّهِ) আর আল্লাহর নিকট এই আশা পোষণ করে যে, তিনি যেন তাকে ক্ষমা করে দেন, যদিও সে আল্লাহর আনুগত্য করা থেকে অবহেলা করে ও প্রবৃত্তির দাসত্ব করে, আর সে এ কথা বলে,  (رَبِّي كَرِيمٌ رَحِيمٌ) আমার রব অতি দয়ালু মেহেরবান। অথচ আল্লাহ তা'আলা ঘোষণা করেছেন, (..مَا غَرَّکَ بِرَبِّکَ الۡکَرِیۡمِ) “...কিসে তোমাকে তোমার মহান প্রতিপালক সম্পর্কে ধোঁকায় ফেলে দিয়েছে?” (সূরা আল ইনফিত্বার ৮২: ৬); আর ঘোষণা করেন, (نَبِّیٴۡ عِبَادِیۡۤ اَنِّیۡۤ اَنَا الۡغَفُوۡرُ الرَّحِیۡمُ ﴿ۙ۴۹﴾ وَ اَنَّ عَذَابِیۡ هُوَ الۡعَذَابُ الۡاَلِیۡمُ ﴿۵۰﴾) “আমার বান্দাদেরকে সংবাদ দাও যে, আমি বড়ই ক্ষমাশীল, বড়ই দয়ালু। আর আমার শাস্তি- তা বড়ই ভয়াবহ শাস্তি”- (সূরাহ্ আল হিজর ১৫ : ৪৯-৫০)। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ, তুহফাতুল আহওয়াযী ৬/২৪৫৯)