হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code
৫০১২

পরিচ্ছেদঃ ১৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ভালোবাসা এবং আল্লাহ তা‘আলার জন্য বান্দার প্রতি ভালোবাসা

৫০১২-[১০] ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলার বান্দাদের মধ্যে কিছু লোক এমন আছে যে, তাঁরা নবীও নন, শাহীদও নন; কিন্তু কিয়ামতের দিন নবীগণ ও শাহীদগণ আল্লাহ তা’আলার কাছে তাঁদের মর্যাদা দেখে ঈর্ষা করবেন। সাহাবায়ে কিরাম জিজ্ঞেস করলেনঃ হে আল্লাহর রসূল! তাঁরা কারা? আমাদেরকে বলুন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তাঁরা সেসব লোক, যারা শুধু আল্লাহ তা’আলার ক্বুরআনের খাতিরে একে অপরকে ভালোবাসে, তাদের মধ্যে কোন নিকট আত্মীয়তার সম্পর্কও নেই, তাঁদের পরস্পরের মধ্যে ধন-সম্পদের লেনদেনের সম্পর্কও নেই। আল্লাহর কসম! তাদের মুখমণ্ডলে উজ্জ্বল হবে অথবা তাঁরা স্বয়ং আলোকবর্তিকা হবে। তারা সে সময় ভীত-সন্ত্রস্ত হবে না, যখন সকল মানুষ ভীত-সন্ত্রস্ত হবে; তাঁরা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হবে না, যখন সকল মানুষ দুশ্চিন্তাগ্রস্ত থাকবে। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ আয়াত পাঠ করলেনঃ অর্থাৎ- ’’সাবধান! নিশ্চয় আল্লাহর বন্ধুগণের কোন ভয় নেই। তারা দুশ্চিন্তাগ্রস্তও হবে না’’- (সূরাহ্ ইউনুস ১০ : ৬২)। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ عُمَرَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ مِنْ عِبَادِ اللَّهِ لَأُنَاسًا مَا هُمْ بِأَنْبِيَاءٍ وَلَا شُهَدَاءَ يَغْبِطُهُمُ الأنبياءُ والشهداءُ يومَ القيامةِ بِمَكَانِهِمْ مِنَ اللَّهِ» . قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ تُخْبِرُنَا مَنْ هُمْ؟ قَالَ: «هُمْ قَوْمٌ تَحَابُّوا بِرُوحِ اللَّهِ عَلَى غَيْرِ أَرْحَامٍ بَيْنَهُمْ وَلَا أَمْوَالٍ يَتَعَاطَوْنَهَا فَوَاللَّهِ إِنَّ وُجُوهَهُمْ لَنُورٌ وَإِنَّهُمْ لَعَلَى نُورٍ لَا يَخَافُونَ إِذَا خَافَ النَّاسُ وَلَا يَحْزَنُونَ إِذَا حَزَنَ النَّاسُ» وَقَرَأَ الْآيَةَ: (أَلَا إِنَّ أَوْلِيَاءَ اللَّهِ لَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُم يحزنونَ) رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

ব্যাখ্যাঃ (إِنَّ مِنْ عِبَادِ اللهِ) অর্থাৎ যাদের পূর্ণ ঈমান আছে এবং যারা ইখলাসের সাথে সৎকাজ করে।

(تَحَابُّوا بِرُوحِ اللهِ) অর্থাৎ যারা মহান আল্লাহর ‘‘রূহ’’-এর জন্য একে অপরকে ভালোবাসবে। আর এ সমস্ত লোকেদের মর্যাদা হাশরের মাঠে এত উঁচু হবে যে, নবী ও রসূলগণ পর্যন্ত তা দেখে ঈর্ষান্বিত হবেন। এখানে رُوحِ  শব্দের ব্যাখ্যায় নিম্নরূপ অভিমত।

رُوحِ শব্দের ব্যাখ্যায় নিম্নরূপ অভিমত পাওয়া যায়। رُوحِ এর (ر) অক্ষরকে পেশ এবং যবর উভয় ক্বিরাআতে পড়া যায়। পেশযোগে এর অর্থ- এমন বস্তু, যা দ্বারা সৃষ্টবস্তু জীবিত থাকে। অর্থাৎ রূহ বা আত্মা। আর এটা দ্বারা পবিত্র কুরআন উদ্দেশ্য। যেমন মহান আল্লাহ বলেন, وَكَذٰلِكَ أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ رُوحًا مِنْ أَمْرِنَا ‘‘এভাবে (উল্লেখিত ৩টি উপায়েই) আমার নির্দেশের মূল শিক্ষাকে তোমার কাছে আমি ওয়াহীযোগে প্রেরণ করেছি...’’- (সূরাহ্ আশ্ শূরা ৪২ : ৫২)। এখানে رُوحِ শব্দ দ্বারা মহাগ্রন্থ আল কুরআনকে বুঝানো হয়েছে। এ নামকরণের কারণ হলো, কুরআন যেমন আত্মাকে সজীব রাখে, অনুরূপভাবে রূহ ও শরীরকে উজ্জীবিত রাখে। এ অবস্থায় হাদীসাংশের অর্থ হবে, তারা কুরআনের অনুসরণে, ইসলামের বৃহত্তর স্বার্থে এবং মুসলিম বন্ধুত্ব ও ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখার জন্য পরস্পর ভালোবাসার সূত্রে আবদ্ধ হয়। অথবা رُوحِ শব্দের অর্থ- মুহববাত বা ভালোবাসা। যেমন প্রিয়জনকে বলা হয় أنت روح ‘‘তুমি আমার প্রাণ’’। অর্থাৎ আমার প্রাণের ন্যায়। তখন এর অর্থ হবে, মহান আল্লাহর উদ্দেশেই পরস্পরের মধ্যে ভালোবাসার একই সূত্রে প্রথিত হয়। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)

(وَإِنَّهُمْ لَعَلَى نُورٍ) অর্থাৎ কিয়ামতের দিন তারা নূরের বা আলোকসজ্জাবিশিষ্ট মিম্বারের উপর থাকবে। যেমনটি অন্য একটি হাদীসেও বর্ণিত হয়েছে। কাযী ‘ইয়ায (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ এখানে তাদের মর্যাদা তাদেরকে সম্মান্বিত করা হবে যেমনিভাবে দুনিয়াতে তাদেরকে সম্মান করে উঁচুস্থানে বসার ব্যবস্থা করা হতো ঠিক সেভাবে। তাদের সেদিন আনন্দের উপর আনন্দ হবে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ