হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code
৪৮১৪

পরিচ্ছেদঃ ১০. প্রথম অনুচ্ছেদ - জিহ্বার হিফাযাত, গীবত এবং গালমন্দ প্রসঙ্গে

৪৮১৪-[৩] ’আবদুল্লাহ ইবনু মাস্’ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুসলিমদের গালাগালি করা ফাসিক্বী এবং খুনাখুনি করা কুফরী। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ حِفْظِ اللِّسَانِ وَالْغِيبَةِ وَالشَّتَمِ

وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «سِبَابُ الْمُسْلِمِ فُسُوقٌ وَقِتَالُهُ كُفْرٌ» . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

ব্যাখ্যাঃ (سِبَابُ الْمُسْلِمِ) ক্রিয়া বিশেষ্য বা মাসদার তার مفعول বা কর্মের দিকে ইফাযত হয়েছে। سِبَابُ শব্দের আভিধানিক অর্থ গালি দেয়া, মন্দ বলা।

ইবরাহীম আল হার্বী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ السباب أشد من السب অর্থাৎ السباب শব্দটি سَبٌّ গালি দেয়া থেকে আধিক্যতার ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়ে থাকে। সেটা হলো কোন ব্যক্তির যা দোষ আছে তা সম্পর্কে এবং যা নেই তা সম্পর্কেও তাকে গালি দেয়া। এতে উদ্দেশ্য তাকে হেয় করা। কেউ কেউ বলেছেন, এখানে السباب শব্দটি القتال এর মত, অর্থ পরস্পর গালি-গালাজে অংশ নেয়া।

কোন মুসলিম অপর কোন মুসলিমকে গালি দিতে পারে না, নাহক গালি দেয়া হারাম।

الفسوق শব্দের আভিধানিক অর্থ الخروج বের হয়ে যাওয়া। আকমাল বলেনঃ الخروج زنة (সম্মানের) ওজন বা পরিমাপ থেকে বের হয়ে যাওয়া।

শারী‘আতের পরিভাষায় الخروج عن الطاعة আনুগত্য থেকে বের হয়ে যাওয়া। ‘আল্লামা ইবনু হাজার ‘আসকালানী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ الخروج عن طاعة الله ورسوله আল্লাহ ও তার রসূলের আনুগত্য থেকে বের হয়ে যাওয়া। এটা চরম অবাধ্যচারিতা ও পাপাচারিতার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

قِتَالُهٗ এর অর্থ محاربته لأجل الإسلام প্রত্যেকেই একে অপরের (নিজ নিজ ধারণায়) ইসলামের জন্য যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে একজন তার অপর মুসলিম ভাইকে হত্যা করা। বাতিল চিন্তা ও উদ্দেশ্য নিয়ে এ কাজ তো সুস্পষ্ট কুফরী কর্ম। অবশ্য কেউ কেউ বলেছেন, এই কুফরী তাকীদান ও তামহীদান বা ধমকীস্বরূপ বলা হয়েছে। তবে এ কথা সত্য যে, কেউ যদি তার মুসলিম ভাইকে হত্যা বৈধ মনে করে করে তবে তা নিঃসন্দেহে কুফরী।

‘আল্লামা ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ অত্র হাদীসের অর্থ ঐ (হাদীসের) দিকে প্রত্যাবর্তিত হয়েছে, الْمُسْلِمُ مَنْ سَلِمَ الْمُسْلِمُونَ مِنْ لِسَانِه وَيَدِه মুসলিম ঐ ব্যক্তি যার জিহ্বা এবং হাত থেকে অপর মুসলিম নিরাপদ থাকে। এ কথা সুসাব্যস্ত যে, এখানে মুসলিম দ্বারা মুসলিমে কামিল। ঈমানের দাবী অনুপাতে ইসলামের হকসমূহ আদায় করা তার ওপর কর্তব্য, কিন্তু তার কতিপয়ের ঘাটতি বা কমতির দ্বারা সে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে খাঁটি কাফির হয়ে যায় না বরং তার ঈমান কমে যায়।

শারহুস্ সুন্নাহ্ গ্রন্থে রয়েছে, এতে মুরজিয়াদে যুক্তি খন্ডনের দলীল রয়েছে। তারা ‘ইবাদাত ও ‘আমলকে ঈমান বলে মনে করে না। তারা বলেন, ‘আমলের মাধ্যমে ঈমান বাড়ে না এবং পাপের কারণে ঈমান কমে না অর্থাৎ নেককার-গুনাহগার সকল মুসলিমের ঈমান সমান। আহলুস্ সুন্নাহ্ ওয়াল জামা‘আতের ‘আক্বীদাহ্ এর বিপরীত অর্থাৎ নেক ‘আমলের কারণে ঈমানের বৃদ্ধি ঘটে এবং পাপ কাজের কারণে ঈমান হ্রাসপ্রাপ্ত হয়। (ফাতহুল বারী ১ম খন্ড, হাঃ ৬১০৩)