পরিচ্ছেদঃ
১৩০৫। জাহান্নামের আগুনকে এক হাজার বছর প্রজ্জ্বলিত করা হয় ফলে লাল রূপ ধারণ করে, অতঃপর এক হাজার বছর প্রজ্বলিত করা হয় ফলে সাদা রূপ ধারণ করে, অতঃপর আবারও এক হাজার বছর প্রজ্জ্বলিত করা হয় ফলে কালো রূপ ধারণ করে। বর্তমানে তা কালো অন্ধকার।
হাদীসটি দুর্বল।
হাদীসটি ইমাম তিরমিযী (২৫৯১) ও ইবনু মাজাহ (৪৩২০) আব্বাস ইবনু মুহাম্মাদ আদ-দূরী বাগদাদী হতে। আর ইবনু আবিদ দুনিয়া “সিফাতুন নার” গ্রন্থে (কাফ ১/৯) বানু হাশেমের মাওলা আবুল ফাযল হতে, তারা উভয়ে ইয়াহইয়া ইবনু আবী বুকায়ের হতে, তিনি শারীক হতে, তিনি আসেম হতে, তিনি আবূ সালেহ হতে, তিনি আবু হুরাইরাহ (রাঃ) হতে, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে তিনি বলেনঃ ...।
ইমাম তিরমিযী বলেনঃ আমাদেরকে হাদীসটি সুওয়াইদ ইবনু নাসর বর্ণনা করে শুনিয়েছেন, তিনি আব্দুল্লাহ হতে, তিনি শারীক হতে, তিনি আসেম হতে, তিনি আবু সালেহ অথবা অন্য এক ব্যক্তি হতে, তিনি আবু হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন। তিনি মারফু হিসেবে বর্ণনা করেননি। আবু হুরাইরাহ (রাঃ)-এর হাদীসটি মওকুফ হওয়াটাই বেশী সঠিক। শারীক হতে ইয়াহইয়া বুকায়ের ব্যতীত অন্য কেউ এটিকে মারফূ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন বলে জানি না।
আমি (আলবানী) বলছিঃ এ ইয়াহইয়া নির্ভরযোগ্য, বুখারী এবং মুসলিম গ্রন্থদ্বয়ে তার দ্বারা দলীল গ্রহণ করা হয়েছে। অতএব তার ব্যাপারে কোন প্রশ্ন নেই। আর তার উপরের বর্ণনাকারী শারীক হচ্ছেন ইবনু আবদিল্লাহ নাখ’ঈ কাযী তিনি মন্দ হেফযের অধিকারী যেমনটি বারবার পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে। আর এ শারীকই হচ্ছে হাদীসটির সমস্যা। তিনি দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগার কারণে কখনও কখনও মারফু হিসেবে বর্ণনা করেছেন আবার কখনও কখনও মওকুফ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
তিনি একবার দৃঢ়তার সাথে আবু সালেহ হতে বর্ণনা করেছেন আবার সন্দেহ করে আবু সালেহ অথবা অন্য এক ব্যক্তি থেকে বর্ণনা করেছেন। এ সবগুলোই প্রমাণ করছে যে, তার হেফয শক্তিতে ক্রটি ছিল। বর্ণনাকারীগণ সম্পর্কে জ্ঞানী এবং বিদ্বানগণ তাকে দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন। অতএব হাদীসটি মারফু এবং মওকুফ দু’ভাবেই দুর্বল।
হ্যাঁ, হাদীসটির কিছু অংশ আবু হুরাইরাহ (রাঃ) হতে মওকুফ হিসেবে সহীহ সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। সেটি ইমাম মালেক "আল-মুওয়াত্তা” গ্রন্থে (৩/১৫৬) তার চাচা আবূ সুহায়েল ইবনু মালেক হতে, তিনি তার পিতা হতে, তিনি আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেনঃ
أترونها حمراء كناركم هذه؟ لهي أسود من القار. والقار الزفت
তোমরা কি (জাহান্নামের) আগুনকে তোমাদের এ আগুনের মত লাল মনে করছো। তা অবশ্যই আল-ক্বারের চেয়েও বেশী কালো, আর আল-ক্বার হচ্ছে আলকাতরা।
আমি (আলবানী) বলছিঃ এ সনদটি বুখারী এবং মুসলিমের শর্তানুযায়ী সহীহ। এটি যদি ইসরাঈলী বর্ণনা না হওয়ার সম্ভাবনা থাকত তাহলে আমি বলতাম যে, এটি মারফু হাদীসের হুকুম বহন করে যেমনটি আমি ছাড়া অন্যরা বলেছেন।
হাদীসটি ইবনু কাসীর তার তাফসীর গ্রন্থে (৪/৫৪৪) উক্ত দু’উদ্ধৃতিতে উল্লেখ করার পর বলেছেনঃ এ হাদীসটি আনাস (রাঃ) এবং উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে।
আমি (আলবানী) বলছিঃ আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসটির সনদ দুর্বল। এছাড়াও সেটি সংক্ষেপে শুধুমাত্র শেষ বাক্যটি বর্ণিত হয়েছেঃنار جهنم سوداء مظلمة ’জাহান্নামের আগুন কালো অন্ধকারাচ্ছন্ন।’
হায়সামী “মাজমাউয যাওয়াইদ” গ্রন্থে (১০/৩৮৮) বলেনঃ এ হাদীসটি বাযযার বর্ণনা করেছেন। এর বর্ণনাকারীগণ দুর্বল। তাদেরকে সামান্যই নির্ভরযোগ্য আখ্যা দেয়া হয়েছে।
আমি (আলবানী) বলছিঃ এ ভাষার মধ্যে সুস্পষ্ট শিথিলতা করা হয়েছে। কারণ এর একজন বর্ণনাকারী হচ্ছেন যায়েদাহ ইবনু আবির রুকাদ যেমনটি “কাশফুল আসতার” গ্রন্থ (৩৪৮৯) দেখলে মিলে যাবে।
এ বর্ণনাকারীকে হাফিয যাহাবী "আয-যুয়াফা" গ্রন্থে উল্লেখ করে বলেছেনঃ তার সম্পর্কে ইমাম বুখারী বলেনঃ তিনি মুনকারুল হাদীস।
আর উমার (রাঃ)-এর হাদীসটি খুবই দুর্বল। বরং সেটিতে বানোয়াট হওয়ার আলামত সুস্পষ্ট। সেটি হচ্ছে আগত সামনের দীর্ঘ হাদীসটি।
এ হাদীসটি সেই সব দুর্বল হাদীসগুলোর একটি যেগুলোকে শাইখ সাবূনী হালাবী “মুখতাসারু তাফসীর ইবনে কাসীর” গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন এবং ধারণা পোষণ করেছেন তিনি শুধুমাত্র সহীহ হাদীসগুলো উল্লেখ করেছেন। কিন্তু তার কিতাবের বাস্তবতা তাকে মিথ্যুক আখ্যা দিচ্ছে।
أوقد على النار ألف سنة حتى احمرت، ثم أوقد عليها ألف سنة حتى ابيضت، ثم أوقد عليها ألف سنة حتى اسودت، فهي سوداء مظلمة ضعيف - أخرجه الترمذي (3/346 - تحفة) وابن ماجه (2/587) قالا: حدثنا عباس بن محمد الدوري البغدادي، وابن أبي الدنيا في " صفة النار " (ق 9/1) حدثني أبو الفضل مولى بني هاشم قالا: نا يحيى بن أبي بكير: نا شريك عن عاصم عن أبي صالح عن أبي هريرة عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: فذكره وقال الترمذي وحده " حدثنا سويد بن نصر أنا عبد الله عن شريك عن عاصم عن أبي صالح أورجل آخر عن أبي هريرة نحوه، ولم يرفعه وحديث أبي هريرة في هذا موقوف أصح، ولا أعلم أحدا رفعه غير يحيى بن أبي بكير عن شريك قلت: يحيى هذا ثقة محتج به في الصحيحين، فلا مجال للغمز منه، ولا سيما وفوقه شريك وهو ابن عبد الله النخعي القاضي وهو سيء الحفظ كما مر في هذه السلسلة مرارا، فهو علة الحديث، ويؤكد ذلك اضطرابه فيه فتارة يرفعه وأخرى يوقفه، وتارة يجزم في إسناده فيقول: عن أبي صالح، وتارة يشك فيه فيقول عن أبي صالح أوعن رجل آخر "، وذلك من علامات قلة ضبطه وسوء حفظه فلا جرم ضعفه أهل العلم والمعرفة بالرجال، فالحديث ضعيف مرفوعا وموقوفا نعم قد صح بعضه عن أبي هريرة موقوفا، أخرجه مالك في " الموطأ " (3/156) عن عمه أبي سهيل بن مالك عن أبيه عن أبي هريرة أنه قال " أترونها حمراء كناركم هذه؟ لهي أسود من القار. والقار الزفت قلت: وهذا سند صحيح على شرط الشيخين، ولولا أنه يحتمل أن يكون من الإسرائيليات لقلت - كما قال غيري - إنه في حكم الموضوع. والله أعلم والحديث قال ابن كثير في تفسيره (4/544) بعد أن ذكره من المصدرين السابقين وقد روي هذا من حديث أنس، وعمر بن الخطاب قلت: حديث أنس ضعيف الإسناد، ومع ذلك فهو مختصر ليس فيه إلا الجملة الأخيرة منه في حديث آخر بلفظ ونار جهنم سوداء مظلمة قال الهيثمي في " مجمع الزوائد " (10/388) " رواه البزار، ورجاله ضعفاء على توثيق لين فيهم قلت: فيه تساهل ظاهر، فإن من رجاله زائد بن أبي الرقاد كما تبين من الرجوع إلى " كشف الأستار " (3489) وقد أورده الذهبي في " الضعفاء " وقال: " قال البخاري: منكر الحديث وأما حديث عمر فواه جدا، بل آثار الوضع عليه لائحة فلابد من ذكره على طوله وهو الآتي بعده هذا الحديث من الأحاديث الكثيرة الضعيفة التي ضخم بها الشيخ الصابوني الحلبي كتابه " مختصر تفسير ابن كثير " (3/670) وما كنت لأهتم بذلك لولا أنه تشبع بما لم يعط وزعم في مقدمته أنه اقتصر فيه على الأحاديث الصحيحة، وواقع الكتاب يكذبه. وقد كنت بينت ذلك بيانا شافيا، مع بعض الأمثلة في مقدمة المجلد الرابع من " الصحيحة "، وهذا الحديث من الأمثلة الجديدة على ذلك وتقدم غيره ثم اطلعت على " مختصر تفسير ابن كثير " للشيخ نسيب الرفاعي الحلبي، فإذا به قد سبق ابن بلده إلى هذا الزعم الكاذب في مقدمته، وأخل به كإخلاله أوأشد، فقد زاد عليه في التشبع بما لم يعط: أنه وضع في آخر كل مجلد فهرسا لأحاديثه صدر كل حديث منها بذكر مرتبته بقوله: " صح "، " حسن " وأحيانا " مرسل " " ض " كل ذلك بمحض رأيه غير مستند في ذلك إلى عالم بهذا الفن حتى ولا إلى ابن كثير نفسه ، ولا مجال الآن لضرب الأمثلة، وقد مر شيء منها، ثم إني أذكر أنني خرجت مثالا واحدا منها صححه بجهل بالغ، وفي إسناده عند ابن كثير من قال فيه ابن معين: كذاب يضع الحديث، وسيأتي هذا الحديث برقم (5655) بإذن الله تعالى كتبت هذا نصحا للقراء وتحذيرا، والله المستعان من المتاجرين بادعاء العلم في آخر الزمان