পরিচ্ছেদঃ
১২৮৭। যেনার দ্বারা ভূমিষ্ট সন্তান জান্নাতে প্রবেশ করবে না এবং তার সন্তানাদি থেকে সাত পিতা পর্যন্ত কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না।
হাদীসটি বাতিল।
হাদীসটিকে ইমাম ত্ববারানী “আল-আওসাত” গ্রন্থে (২/৩৬৯-নং ১৪৫/৮৭০) এবং "আল-মুজামুল কাবীর" গ্রন্থে (১৯/১৪২-নং ৩৩৭) হুসাইন ইবনু ইদরীস হুলওয়ানী হতে, তিনি সুলাইমান ইবনু আবী হাওযাহ হতে, তিনি আমর ইবনু আবী কায়েস হতে, তিনি ইবরাহীম ইবনুল মুহাজির হতে, তিনি মুজাহিদ হতে, তিনি মুহাম্মাদ ইবনু আব্দির রহমান ইবনে আবী যুবাব হতে হতে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে মারফু হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
তিনি বলেনঃ আমর ব্যতীত অন্য কেউ হাদীসটি ইবরাহীম হতে বর্ণনা করেননি।
আমি (আলবানী) বলছিঃ তিনি সত্যাবাদী তবে তার বহু সন্দেহমূলক বর্ণনা রয়েছে। তার শাইখ ইব্রাহীম ইবনুল মুহাজির হচ্ছেন ইবনু জাবের বাজালী। তিনি সত্যবাদী তবে হেফযে তার দুর্বলতা রয়েছে। তিনি হাদীসটির সমস্যা।
হাদীসটির সমস্যা সম্পর্কে হায়সামী (৬/২৫৭) বলেছেনঃ এর সমস্যা হচ্ছে হুসাইন ইবনু ইদরীস, কারণ তিনি দুর্বল।
কিন্তু তার এ সমালোচনা সঠিক নয়। কারণ তাকে দারাকুতনী নির্ভরযোগ্য আখ্যা দিয়েছেন এবং ইবনু হিব্বান তার "সহীহ" গ্রন্থে তার থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি হাফিযদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন যেমনটি ইবনু মাকূলা বলেছেন। এছাড়া তিনি এককভাবে হাদীসটি বর্ণনা করেননি। অতএব হুসাইন ইবনু ইদরীস দোষ মুক্ত।
হাদীসটিকে ইবনু জাওযী “আল-মওয়ূয়াত” গ্রন্থে (৩/১১১) উল্লেখ করে বলেছেন (আর সুয়ূতী “আল-লাআলী” গ্রন্থে (২/১৯৩) তার অনুসরণ করেছেনঃ হাদীসটি সহীহ নয়। ইবরাহীম ইবনু মুহাজির দুর্বল। দারাকুতনী বলেনঃ তিনি মুজাহিদ হতে এ হাদীসটি বর্ণনা করার ক্ষেত্রে দশভাবে দ্বন্দ্বে পড়েছেন। একবার মুজাহিদ সূত্রে আবু হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন, আরেকবার মুজাহিদ সূত্রে ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন, আরেকবার মুজাহিদ সূত্রে ইবনু আবী যিইব হতে, আরেক বার মুজাহিদ সূত্রে ইবনু আমর হতে মওকুফ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এ সব কিছুই বর্ণনাকারী কর্তৃক গোলমাল হওয়ার (মস্তিষ্ক বিকৃতির) কারণে।
আমি (আলবানী) বলছিঃ আবু নুয়াইম "হিলইয়াতুল আওলিয়্যা" গ্রন্থে (৩/৩০৭, ৩০৯) দশভাবে সংঘটিত ইযতিরাবের সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
হাদীসটির আরো কিছু সূত্র রয়েছে সেগুলোও ক্রটিযুক্ত। তার কতিপয়কে ইবনু জাওযী উল্লেখ করে সমস্যাগুলোও ব্যাখ্যা করে বলেছেনঃ এ হাদীসগুলো ইসলামী মূলনীতি বিরোধী এবং এ মূলনীতিগুলোর সর্বাপেক্ষা বড় মূলনীতিটি হচ্ছে আল্লাহর বাণীঃ وَلَا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَىٰ "পাপের বোঝা বহনকারী কোন ব্যক্তিই অন্যের পাপের বোঝা বহন করবে না" (সূরা আনয়াম : ১৬৪) এবং রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিম্নোক্ত বাণীর কারণেঃ ليس على ولد الزنى من وزر أبويه شيء “যেনার মাধ্যমে ভূমিষ্ট সন্তান তার পিতা-মাতার গুনাহের অংশীদার নয়।” (এ হাদীসটিকে শাইখ আলবানী হাসান আখ্যা দিয়েছেন। দেখুন “সিলসিল্যাহ সহীহাহ” (৬৭২, ২১৮৬) এবং "সহীহ জামেইস সাগীর" (৫৪০৬)।
এছাড়া একটি হাদীসে যে এসেছেঃ "যেনার মাধ্যমে ভূমিষ্ট সন্তান তিনজনের (পিতা, মাতা ও সন্তান) মধ্যে সর্বাপেক্ষা নিকৃষ্ট" এ হাদীসটি যেনার মাধ্যমে ভূমিষ্ট একজন নির্দিষ্ট সন্তান সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে যে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে কষ্ট দিত। সে তার কর্মের দ্বারা কাফির হয়ে গিয়েছিল এবং সে তার মা এবং মায়ের সাথে যেনাকারী ব্যক্তির চেয়েও নিকৃষ্ট হয়ে গিয়েছিল। সে ছিল মুনাফিকদের অন্তর্ভুক্ত। এ সম্পর্কে বিস্তারিত দেখুন "সিলসিল্যাহ সহীহাহ" (২১৮৬) নং হাদীসের ব্যাখ্যা।
لا يدخل ولد الزنا الجنة، ولا شيء من نسله، إلى سبعة آباء باطل - رواه الطبراني في " الأوسط " (رقم - 145) عن الحسين بن إدريس الحلواني: نا سليمان بن أبي هو ذة: نا عمرو بن أبي قيس عن إبراهيم بن المهاجر عن مجاهد عن محمد بن عبد الرحمن بن أبي ذباب عن أبي هريرة مرفوعا وقال: لم يروه عن إبراهيم إلا عمرو قلت: وهو صدوق له أوهام، لكن شيخه إبراهيم بن المهاجر وهو ابن جابر البجلي صدوق لين الحفظ، فهو علة الحديث وأما إعلال الهيثمي للحديث بقوله (6/257) : وفيه الحسين بن إدريس وهو ضعيف فلا وجه له، لأن الحسين هذا وثقه الدارقطني وأخرج له ابن حبان في صحيحه وكان من الحفاظ كما قال ابن ماكولا، وغاية ما جرح به قول ابن أبي حاتم فيه: " كتب إلي بجزء من حديثه، فأول حديث منه باطل، والثاني باطل، والثالث ذكرته لعلي بن الجنيد فقال: أحلف بالطلاق أنه حديث ليس له أصل، وكذا هو عندي فلا أدري البلاء منه أومن خالد بن هياج فقد تردد ابن أبي حاتم في اتهام الرجل بهذه البواطيل فينبغي التوقف عن الجزم بأنه المتهم، حتى يأتي البيان وقد وجدنا الحافظ ابن عساكر قال: " البلاء في الأحاديث المذكورة من خالد بلا شك ومما يؤكد أن الحسين بن إدريس بريء العهدة من هذا الحديث أنه لم يتفرد به كما يشعر بذلك قول الطبراني المتقدم، وقال عبد بن حميد في " المنتخب من المسند (ق 189/2) : حدثنا عبد الرحمن بن سعد الرازي: حدثنا عمرو بن أبي قيس به وأورده ابن الجوزي في " الموضوعات " (3/111) ، وقال - وتبعه السيوطي في اللآلىء " - 2/193) : " لا يصح، إبراهيم بن مهاجر ضعيف، قال الدارقطني: اختلف على مجاهد في هذا الحديث على عشرة أوجه، فتارة يروى عن مجاهد عن أبي هريرة، وتارة عن مجاهد عن ابن عمر، وتارة عن مجاهد عن ابن أبي ذباب، وتارة عن مجاهد عن ابن عمرو موقوفا، إلى غير ذلك، وكله من تخليط الرواة قلت: وقد بين أبو نعيم في " حلية الأولياء " (3/307 - 309) هذه الوجوه العشرة من الاضطراب، وزاد عليها فأفاد وأجاد، فمن شاء فليرجع إليه وللحديث طرق أخرى بنحوه كلها معلولة، وقد ساق ابن الجوزي بعضها وبين عللها ثم قال " إن هذه الأحاديث مخالفة للأصول، وأعظمها قوله تعالى: "وَلَا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَىٰ " وزاد عليه ابن عراق في " تنزيه الشريعة " (2/228) : " قلت: ولقوله صلى الله عليه وسلم ليس على ولد الزنى من وزر أبويه شيء أخرجه الطبراني من حديث عائشة. قال السخاوي: وسنده جيد. والله أعلم قلت: وقد تكلم على الحديث جماعة من العلماء كالحافظ ابن حجر في " تخريج الكشاف " (4/176/210) والسخاوي في " المقاصد الحسنة " (470/1322) وابن طاهر في " تذكرة الموضوعات (ص 109) وابن القيم في " المنار " (ص 48) واتفقوا جميعا على أنه ليس على ظاهره، وعلى أنه ليس له إسناد صالح للاحتجاج به، وغاية ما ادعاه بعضهم ردا على ابن طاهر وابن الجوزي أنه ليس بموضوع ولذلك تكلفوا في تأويله حتى لا يتعارض مع الأصل المتقدم، بما تراه مشروحا في كثير من المصادر المتقدمة. وأنا أرى أنه لا مسوغ لتكلف تأويله بعد ثبوت ضعفه من جميع طرقه، ولذلك فقد أحسن صنعا من حكم عليه بالوضع كابن طاهر وابن الجوزي. والله أعلم ثم بدا لي تقييد هذا الحكم، بهذا اللفظ المخرج هنا بتمامه، وأما طرفه الأول منه، فقد روي نحوه من طرق أخرى يقوي بعضها بعضا، وصحح أحدها ابن حبان في حديث خرجته في " الصحيحة " برقم (672) ، وذكرت هناك المعنى المراد منه فراجعه