হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code
৩৫৪৩

পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মুরতাদ এবং গোলযোগ সৃষ্টিকারীকে হত্যা করা প্রসঙ্গে

৩৫৪৩-[১১] আবূ সা’ঈদ আল খুদরী ও আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)হতে বর্ণিত। তারা উভয়ে বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ অতি শীঘ্রই আমার উম্মাতের মধ্যে মতানৈক্য ও দলাদলি সৃষ্টি হবে। তন্মধ্যে একদল এরূপ হবে যে, তারা খুব সদাচরণ করবে কিন্তু তাদের ’আমল খারাপ হবে। তারা কুরআন মাজীদ পাঠ করবে কিন্তু তা তাদের গলদেশ অতিক্রম করতে পারবে না। অতঃপর তারা দীন থেকে এমনভাবে বের হয়ে যাবে যেভাবে তীর শিকার ভেদ করে বের হয়ে যায়। তারা দীনের দিকে ফিরে আসবে না, যেভাবে নিক্ষিপ্ত তীর ধনুকের দিকে ফিরে আসে না। তারা মানুষ এবং পশু-প্রাণীর মাঝে সবচেয়ে নিকৃষ্টতম। এমতাবস্থায় সুসংবাদ ঐ সকল লোকেদের জন্য যারা তাদেরকে হত্যা করবে (গাজী হবে) এবং তারা যাকে হত্যা করবে (শহীদ হবে)। তারা আল্লাহর কিতাবের দিকে লোকেদেরকে আহবান করবে। অথচ তাদের কোনো কিছুই আমাদের সুন্নাত অনুযায়ী হবে না। অতএব যে ব্যক্তি তাদের সাথে যুদ্ধ করবে সে আল্লাহ তা’আলার সবচেয়ে প্রিয়ভাজন হবে। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রসূল! তাদের পরিচয়-নমুনা কি? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, মাথা মুন্ডানো। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ وَأَنَسِ بْنِ مَالِكٍ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: سَيَكُونُ فِي أُمَّتِي اخْتِلَافٌ وَفُرْقَةٌ قَوْمٌ يُحسِنونَ القيلَ ويُسيئونَ الفِعلَ يقرؤون الْقُرْآنَ لَا يُجَاوِزُ تَرَاقِيَهُمْ يَمْرُقُونَ مِنَ الدِّينِ مُروقَ السَّهمِ فِي الرَّمِيَّةِ لَا يَرْجِعُونَ حَتَّى يَرْتَدَّ السَّهْمُ عَلَى فُوقِهِ هُمْ شَرُّ الْخَلْقِ وَالْخَلِيقَةِ طُوبَى لِمَنْ قَتَلَهُمْ وَقَتَلُوهُ يَدْعُونَ إِلَى كِتَابِ اللَّهِ وَلَيْسُوا منَّا فِي شيءٍ مَنْ قاتلَهم كَانَ أَوْلَى بِاللَّهِ مِنْهُمْ قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا سِيمَاهُمْ؟ قَالَ: «التَّحْلِيقُ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

ব্যাখ্যা: (لَا يُجَاوِزُ تَرَاقِيَهُمْ) এর অর্থ তাদের কুরআন অথবা ক্বিরাআত অর্থাৎ কণ্ঠ ও হরফের মাখরাজ থেকে তাদের ক্বিরাআতের প্রভাব অন্তরে অতিক্রম করবে না। অথবা এর অর্থ হলো তাদের ক্বিরাআত আল্লাহর নিকট উঠবে না এবং আল্লাহ কবুল করবেন না। এরা মানুষের মাঝে এবং জন্তুর মাঝে সর্বনিকৃষ্ট। কেউ বলেনঃ خَلْقِ ও الْخَلِيقَةِ শব্দদ্বয়ের অর্থ অভিন্ন। এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো সমস্ত সৃষ্টজীব। এদেরকে হত্যাকারী এবং এদের হাতে শহীদ হওয়া সৌভাগ্য।

ইমাম নববী বলেনঃ এ হাদীস দ্বারা কেউ দলীল গ্রহণ করেছেন যে, মাথা মুন্ডানো মাকরূহ। কিন্তু এখানে সেই ধরনের কোনো নিদর্শন নেই। বস্তুতঃ এটা তাদের চিহ্ন বিশেষ। আর চিহ্ন কখনো হারাম হয় আবার কখবো মুবাহ হয়। যেমন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ آيَتهمْ رَجُل أَسْوَد إِحْدٰى عَضُدَيْهِ مِثْل ثَدْي الْمَرْأَة ‘‘তাদের নিদর্শন হলো কালো লোক, তার এক বাহু মহিলাদের স্তনের বুটির মতো’’। বুঝা গেলো এটা হারাম নয়।

উপরোক্ত সুনানে আবূ দাঊদে বর্ণিত হয়েছে-

أَنَّ رَسُول اللّٰه ﷺ رَأَى صَبِيًّا قَدْ حُلِقَ بَعْض رَأْسه، وَقَالَ : احْلِقُوهُ كُلَّه، أَوِ اتْرُكُوهُ كُلَّه

অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি বালককে মাথার কিছু অংশ মুন্ডানো দেখলেন এবং বললেন, তুমি মাথার সম্পূর্ণটা হয় মুড়িয়ে ফেলো অথবা পূর্ণটায় ছেড়ে দাও। এই হাদীসটি মাথা মুন্ডানো বৈধ হওয়ার স্পষ্ট প্রমাণ। এখানে কোনো ব্যাখ্যার দরকার নেই।
বিদ্বানগণ বলেন- মাথা মুন্ডানো সব সময় জায়িয। কিন্তু মাথায় চুল থাকাকালীন তৈল মাখা এবং কেশবিন্যাস করা কষ্টসাধ্য হলে মাথা মুন্ডানো মুস্তাহাব। আর যদি কষ্টকর না হয় তবে মাথা না মুন্ডানো মুস্তাহাব। (‘আওনুল মা‘বূদ ৮ম খন্ড, হাঃ ৪৭৫২)