হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code
৩২২১

পরিচ্ছেদঃ ৮. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ওয়ালীমাহ্ (বৌভাত)

৩২২১-[১২] সাফীনাহ্ (রাঃ) (উম্মুল মু’মিনীন উম্মু সালামাহ্ (রাঃ)-এর মুক্ত দাসী) হতে বর্ণিত। একদিন জনৈক ব্যক্তি ’আলী ইবনু আবূ ত্বালিব (রাঃ)-এর মেহমান হলে তার জন্য খাবারের আয়োজন করেন। এমতাবস্থায় ফাতিমা (রাঃ) বললেন, আমরা যদি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দা’ওয়াত করি আর তিনি আমাদের সাথে আহার করতেন, তবে কতই না উত্তম হত! অতঃপর তারা তাঁকে দা’ওয়াত করলেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এসে ঘরের দরজায় দুই পাশের দুই চৌকাঠ ধরে দাঁড়িয়ে দেখলেন যে, ঘরের এককোণে একটি রঙিন নকশাদার পর্দা ঝুলছে। এটা দেখে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ফিরে যেতে লাগলে ফাতিমা (রাঃ) তাঁর পিছু ছুটে বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনাকে ঘরে প্রবেশ করা থেকে কিসে পিছুটান দিয়েছে (বাধাদান করেছে)? উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আমার পক্ষে অথবা কোনো নবীর পক্ষে নকশাকৃত এমন সুসজ্জিত ঘরে প্রবেশ ঠিক নয়। (আহমাদ, ইবনু মাজাহ)[1]

وَعَنْ سَفِينَةَ: أَنَّ رَجُلًا ضَافَ عَلِيَّ بْنَ أَبِي طَالِبٍ فَصَنَعَ لَهُ طَعَامًا فَقَالَتْ فَاطِمَةُ: لَوْ دَعَوْنَا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَكَلَ مَعَنَا فَدَعَوْهُ فَجَاءَ فَوَضَعَ يَدَيْهِ عَلَى عِضَادَتَيِ الْبَابِ فَرَأَى الْقِرَامَ قَدْ ضُرِبَ فِي نَاحِيَةِ الْبَيْتِ فَرَجَعَ. قَالَتْ فَاطِمَةُ: فَتَبِعْتُهُ فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا رَدَّكَ؟ قَالَ: «إِنَّهُ لَيْسَ لِي أَوْ لِنَبِيٍّ أَنْ يَدْخُلَ بَيْتا مزوقا» . رَوَاهُ أَحْمد وَابْن مَاجَه

ব্যাখ্যা: হাদীসের বর্ণনাকারী হলেন, উম্মুল মু’মিনীন উম্মু সালমাহ্ (রাঃ)-এর আযাদকৃত দাসী।
এক ব্যক্তি ‘আলী -এর মেহমান হয়েছিল। ‘আরবদের পরিভাষায় إِذَا نَزَلَ بِه ضَيْفًا যখন কোনো বাড়ীতে মেহমান আসে তখন বলা হয় «ضَافَه ضَيْفًا» অর্থাৎ তার নিকটে মেহমান এসেছে। আবার «ضَافَ الرَّجُلُ» লোকটি মেহমানদারী করল; ঐ সময় বলা হয় «إِذَا نَزَلَ بِه ضَيْفًا» যখন তার নিকট মেহমান (হয়েছে) আগমন করে।

ফাতিমা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দা‘ওয়াতের ইচ্ছা পোষণ করার কারণ হলো খাদ্যে বরকত লাভ করা, আর খানার অনুষ্ঠানটাও সুন্দর হওয়া। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সর্বোচ্চ সম্মান প্রর্দশন এবং পিতৃত্বেও পরিচয় তো আছেই। ইচ্ছা মোতাবেক তাকে দা‘ওয়াত করাও হলো এবং তিনি সময়মত আসলেনও, কিন্তু ঘরের দরজার দু’দিকে দুই চৌকাঠে হাত দিয়ে ঘরের মধ্যে তাকাতেই ভিতরে খুব উন্নত চিকন রঙিন পশমী নকশাদার পর্দার কাপড় টাঙ্গানো দেখলেন। এটা দেখেই তিনি খানাপিনা না করে সোজা বাড়ী রওনা হলেন। ফাতিমা (রাঃ) পিছে পিছে এসে বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনি আমাদের ঘরে না ঢুকে এবং খাদ্য গ্রহণ না করেই ফিরে আসার কারণ কি? উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আমার মতো মানুষের অথবা কোনো নাবীর জন্য উচিত নয় এমন ঘরে প্রবেশ করা যা খুব চাকচিক্যময় করে সাজানো হয়। হাদীসে (مُزَوَّقًا) শব্দ এসেছে, যার অর্থ সাজানো, অলংকৃত ও নকশাদার করা, চাকচিক্য করে তোলা ইত্যাদি।

ইবনুল মালিক ঐ হাদীসের মুতাবা‘আত করে বলেন, «كَانَ ذٰلِكَ مُزَيَّنًا مُنَقَّشًا» অর্থাৎ পর্দার কাপড়টি ছিল নকশাদার এবং অলংকৃত। কেউ কেউ বলেছেন ওটা নকশাদার ছিল এমনটি নয় তবে তা বর সাজানোর আসনের মতো ছিল, যা দিয়ে ঘরের প্রাচীর বা বেড়াকে ঢেকে রেখেছে। এটাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মনের ব্যাকুলতা সৃষ্টি করেছিল। যা অহংকারীদের কাজের সাদৃশ্য। এ দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান যে, যেখানে অপছন্দনীয় কাজ বিদ্যমান সেখানে দা‘ওয়াত গ্রহণ করা আবশ্যক নয়।
(‘আওনুল মা‘বূদ ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ৩৭৫১; মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
বর্ণনাকারীঃ সাফীনাহ্ (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ