হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code
২৯৮৪

পরিচ্ছেদঃ ১৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - ভাড়ায় প্রদান ও শ্রম বিক্রি

২৯৮৪-[৪] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা বলেন, কিয়ামত দিবসে আমি তিন লোকের বিরুদ্ধে বাদী হবো- [১] যে লোক আমার নামে অঙ্গীকার করে পরে তা ভঙ্গ করেছে, [২] যে লোক স্বাধীন মানুষকে বিক্রি করে তার মূল্য খেয়েছে এবং [৩] যে লোক শ্রমিক নিয়োগ করে পূর্ণ কাজ আদায় করে নিয়েছে, কিন্তু তার প্রাপ্য মজুরী প্রদান করেনি। (বুখারী)[1]

بَابُ الْإِجَارَةِ

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: قَالَ اللَّهُ تَعَالَى: ثَلَاثَةٌ أَنَا خَصْمُهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ: رَجُلٌ أَعْطَى بِي ثُمَّ غَدَرَ وَرَجُلٌ بَاعَ حُرًّا فَأَكَلَ ثَمَنَهُ وَرَجُلٌ اسْتَأْجَرَ أَجِيرًا فَاسْتَوْفَى مِنْهُ وَلَمْ يُعْطِهِ أَجْرَهُ . رَوَاهُ البُخَارِيّ

ব্যাখ্যা: (ثَلَاثَةٌ أَنَا خَصْمُهُمْ) ইবনু খুযায়মাহ্, ইবনু হিব্বান এবং ইসমা‘ঈলী এ হাদীসে (وَمَنْ كُنْتُ خَصمه خصمته) অর্থাৎ- আমি তার বিপক্ষে দাঁড়াব তার বিপক্ষে কথা বলব।’’ এ অংশটুকু বৃদ্ধি করেছেন। ইবনুত্ তীন বলেন, তিনি সুবহানাহূ ওয়াতা‘আলা সমস্ত অত্যাচারীদের বিরুদ্ধে, তবে এদের ওপর তিনি স্পষ্টভাবে কঠোরতা আরোপ করেছেন।
(أَعْطٰى بِىْ ثُمَّ غَدَرَ) সকল বর্ণনাতে মাফউল বিলুপ্ত হওয়াবস্থায় এসেছে, উহ্য হলো (أَعْطٰى يَمِينَه بِي) অর্থাৎ- সে আমার নামে অঙ্গীকার করল, ঐ ব্যাপারে সে আল্লাহর শপথ করল। অতঃপর তা ভঙ্গ করল। (بَاعَ حُرًّا فَأَكَلَ ثَمَنَه) বর্ণনার মাধ্যমে ‘‘খাওয়া’’ কথাকে নির্দিষ্ট করা হয়েছে, কেননা তা সর্বাধিক বড় উদ্দেশ্য।

আবূ দাঊদে ‘আব্দুল্লাহ বিন ‘উমার কর্তৃক মারফূ‘ সূত্রে বর্ণিত হয়েছে- (ثَلَاثَةٌ لَا تُقْبَلُ مِنْهُمْ صَلَاةٌ) ‘‘তিন ব্যক্তির সালাত গ্রহণ করা হয় না।’’ অতঃপর তাদের মাঝে বর্ণনা করেছেন, (وَرَجُلٌ اعْتَبَدَ مُحَرَّرًا) ‘‘এবং এমন ব্যক্তি যে স্বাধীন ব্যক্তিকে দাসে পরিণত করেছে।’’

খত্ত্বাবী বলেনঃ সাধীন ব্যক্তিকে দাসে পরিণত করা দু’টি বিষয়ের মাধ্যমে সংঘটিত হয়, প্রথমতঃ দাসকে মুক্তি দেয়া। তা গোপন করে রাখা অথবা তা অস্বীকার করা। দ্বিতীয়তঃ দাস হতে মুক্তি দেয়ার পর ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে কাজে লাগানো, দু’টির মাঝে প্রথমটি শক্তিশালী।

মুহাল্লাব বলেনঃ এর পাপ অধিক কঠিন তার কারণ মুসলিমরা স্বাধীনতার ক্ষেত্রে সমান। সুতরাং যে ব্যক্তি স্বাধীন ব্যক্তিকে বিক্রি করবে, সে ঐ ব্যক্তিকে আল্লাহর বৈধ করা বিষয়ে স্বাধীন ইচ্ছা হতে বাধা দিবে, আল্লাহ যে অপমান হতে তাকে রক্ষা করেছেন সে ঐ ব্যক্তির জন্য তা আবশ্যক করল।

ইবনুল জাওযী বলেনঃ স্বাধীন ব্যক্তি আল্লাহর বান্দা, সুতরাং যে স্বাধীন ব্যক্তির ক্ষতি করবে তার মালিক (আল্লাহ) তার বিপক্ষে থাকবে।

ইবনুল মুনযির বলেনঃ তারা (বিদ্বানগণ) এ ব্যাপারে দ্বিমত করেনি যে, যে ব্যক্তি স্বাধীন ব্যক্তিকে বিক্রয় করবে তার হাত কাটা যাবে না। অর্থাৎ- যখন তাকে তার মতো সুরক্ষেত স্থান হতে চুরি না করবে। তবে ‘আলী হতে যা বর্ণনা করা হয় তা হলো- যে ব্যক্তি স্বাধীন ব্যক্তিকে বিক্রয় করবে, তার হাত কাটা হবে। তিনি বলেন, স্বাধীন ব্যক্তিকে বিক্রয় বৈধ হওয়ার ব্যাপারে প্রাচীন মতানৈক্য ছিল, অতঃপর তা উঠে গেছে। অতঃপর ‘আলী হতে বর্ণনা করা হয়েছে, তিনি বলেন, যে ব্যক্তি নিজের ব্যাপারে স্বীকৃতি দিবে যে, সে দাস তাহলে সে দাস।
 

(وَرَجُلٌ اسْتَأْجَرَ أَجِيرًا فَاسْتَوْفَى مِنْهُ وَلَمْ يُعْطِهِ أَجْرَه) এ অংশটুকু ঐ ব্যক্তির অর্থে যে ব্যক্তি স্বাধীন ব্যক্তিকে বিক্রি করে এবং তার মূল্য খেয়ে ফেলে, কেননা অত্র হাদীসে ব্যক্তি শ্রমিক থেকে বিনা মজুরীতে পূর্ণাঙ্গ উপকারিতা লাভ করেছে, এ ক্ষেত্রে সে যেন তার মূল্য খেয়ে ফেলেছে। কেননা সে তার থেকে বিনা পারিশ্রমিকে সেবা গ্রহণ করেছে, এ ক্ষেত্রে যেন সে তাকে দাস বানিয়েছে। (ফাতহুল বারী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ২২২৭)