হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code
২৬৬৮

পরিচ্ছেদঃ ১০. প্রথম অনুচ্ছেদ - কুরবানীর দিনের ভাষণ, আইয়্যামে তাশরীক্বে পাথর মারা ও বিদায়ী তাওয়াফ করা

২৬৬৮-[১০] ’আব্দুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, (হজ্জ/হজ সম্পন্ন করে শেষ তাওয়াফ না করেই) লোকজন চারদিক হতে দেশের দিকে ফিরতে শুরু করতো। তাই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমাদের কেউ যেন বায়তুল্লাহর সাথে (শেষ) সাক্ষাৎ না করে বাড়ীর দিকে রওয়ানা না হয়। তবে ঋতুমতী মহিলাদের (প্রতি শিথিলতা স্বরূপ) এর থেকে বিরত থাকার অনুমতি দেয়া হয়েছে। (বুখারী, মুসলিম)[1]

بَابٌ خُطْبَةُ يَوْمِ النَّحْرِ وَرَمْىِ أَيَّامِ التَّشْرِيْقِ وَالتَّوْدِيْعِ

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: كَانَ النَّاسُ يَنْصَرِفُونَ فِي كُلِّ وَجْهٍ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا يَنْفِرَنَّ أَحَدُكُمْ حَتَّى يَكُونَ آخِرُ عَهْدِهِ بِالْبَيْتِ إِلَّا أَنَّهُ خُفِّفَ عَنِ الْحَائِضِ»

ব্যাখ্যা: মিনায় অবস্থান করার দিনগুলো শেষ হলে সবাই ফিরে যায়, কেউ তাওয়াফ করে আবার কেউ বা তাওয়াফ করে না। ‘আল্লামা মুল্লা ‘আলী কারী হানাফী (রহঃ) বলেন, এ অংশটুকুর অর্থ হলো, তাদের হজ্জ/হজ শেষে তারা বিভিন্ন রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন কেউ বা তাওয়াফে ওয়াদা' তথা বিদায়ী তাওয়াফকারী হিসেবে আবার কেউ তাওয়াফে ওয়াদা‘ না করে।

(لَا يَنْفِرَنَّ أَحَدُكُمْ) ‘তোমাদের কেউ যেন ফিরে না যায়’ এ ফিরে যাওয়া দ্বারা উদ্দেশ্য হলো النفر الأول প্রথমধাপে ফিরে যাওয়া যেটি তাড়াতাড়ি করে যারা তারা আইয়্যামে তাশরীক্বের দ্বিতীয় দিনে করে থাকে অথবা এর দ্বারা النفر الثانى তথা যারা দেরীতে করতে চায় তারা এটা আইয়্যামে তাশরীক্বের তৃতীয় দিনে করে থাকে এটাও উদ্দেশ্য হতে পারে। অথবা এর দ্বারা এটাও উদ্দেশ্য হতে পারে যে, তোমাদের কেউ যেন মক্কা থেকে বের না হয়। এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো মক্কার বাইরে থেকে যারা হজ্জে এসেছে তারা মিশকাতের বর্ণনায় احدكم তথা ‘তোমাদের কেউ’ এ শব্দ এসেছে, তবে সহীহ মুসলিমে لاينفرن احد ‘কেউ যেন’ শব্দ এসেছে।

(حَتّٰى يَكُونَ اٰخِرُ عَهْدِه بِالْبَيْتِ) অর্থাৎ- ‘বায়তুল্লাহর বিদায়ী তাওয়াফ না করে যেন ফিরে না যায়’ সেদিকে ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে যেমনটা বর্ণনা করেছেন ইমাম আবূ দাঊদ। এটা মূলত সহীহ মুসলিমের বর্ণনা কিন্তু সহীহুল বুখারীতে আছে, (قال ابن عباس : اأمر الناس ان نكون اخر عهدهم بالبيت الا انه خفف عن الحائض) অর্থাৎ- আদেশ দেয়া হয়েছে মানুষদের তারা যেন সবাই তাওয়াফে ওয়াদা‘ করে তবে হায়িযগ্রস্থ মহিলাদের ব্যাপারে একটু ছাড় দেয়া হয়েছে।

হাফিয ইবনু হাজার আসকালানী (রহঃ) বলেন, এভাবে صيغة مجهول দিয়ে সুফইয়ান ‘আবদুল্লাহ বিন ত্বাউস তার পিতা থেকে এবং তিনি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। তবে এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলেন আদেশ প্রদানকারী নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। অনুরূপ হালকা করা হয়েছে-এর ক্ষেত্রেও হালকাকারী নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। অবশ্য সুফিয়ান-এর অন্য রিওয়ায়াত সুলায়মান আল আওয়াল তিনি তাউস থেকে যেটি বর্ণনা করেছেন সেখানে صيغة مجهول তথা সরাসরি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে কর্তা করে বর্ণনা করেছেন।

আর এর শব্দটি ইবনু ‘আব্বাস -এর তিনি বলেন, كان الناس ينهرفون فى كل وجه فقال رسول الله ﷺ : لا ينفرن احد حتى يكون اخر عهده بالبيت

হাদীসের এ ভাষ্য থেকে বুঝা যায় طواف الوداع তথা বিদায়ী তাওয়াফ ওয়াজিব যেহেতু কড়া আদেশ দেয়া হয়েছে।

ইমাম নাবাবী (রহঃ) বলেন, অত্র হাদীসে প্রমাণ রয়েছে তাদের জন্য যারা বলেন, طواف الوداع তথা বিদায়ী তাওয়াফ ওয়াজিব। আর যারা বিদায়ী তাওয়াফ না করবে তাদের কাফফারাহ্ স্বরূপ একটি কুরবানী দেয়া আবশ্যক হবে। এটাই অধিকাংশ ‘উলামায়ে কিরামের মতামত; হাসান বাসরী, হাকাম, হাম্মাদ, সাওরী, আবূ হানীফা, আহমাদ, ইসহাক, আবূ সাওর তাদের অন্যতম।

حَائِضِ ‘‘হায়িয’’ তথা ‘ঋতুবতী মহিলার সাথে যে সব মহিলার নিফাস হয়েছে তারাও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হবেন। আর হায়িয-নিফাসওয়ালী মহিলাদের طواف الوداع তথা বিদায়ী তাওয়াফ করা লাগবে না। এ ব্যাপারে সকল ‘উলামায়ে কিরামের ঐকমত্য রয়েছে। তাওয়াফ করার জন্য যে পবিত্রতা শর্ত- এ হাদীস তার দলীল হিসেবে পেশ করা হয়ে থাকে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ