হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code
২৬৫৫

পরিচ্ছেদঃ ৯. প্রথম অনুচ্ছেদ - হজের কার্যাবলীতে আগ-পিছ করা বৈধতা প্রসঙ্গে

২৬৫৫-[১] ’আব্দুল্লাহ ইবনু ’আমর ইবনুল ’আস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদায় হজে মিনায় এসে জনসম্মুখে দাঁড়ালেন, যাতে লোকেরা তাঁর থেকে (হজের বিধি-বিধান সম্বলিত মাস্আলাহ্-মাসায়িল) জিজ্ঞেস করতে পারে। এ সময় জনৈক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে আসলেন, অতঃপর বললেন, আমি না জেনে কুরবানীর আগে মাথা মুণ্ডন করে ফেলেছি। উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এতে দোষণীয় নয়, এখন কুরবানী করো। আরেক ব্যক্তি এসে জিজ্ঞেস করলো, আমি না জেনে পাথর মারার আগে কুরবানী করে ফেলেছি। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তাতে গুনাহের কিছু নেই, এখন কংকর মারো। অতঃপর আগে পিছে করার যে কোন ’আমলের বিষয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করা হলেই তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলতেন, তাতে কোন গুনাহ হবে না, এখন করো।

[বুখারী, মুসলিম; কিন্তু মুসলিমের এক বর্ণনায় আছে, জনৈক লোক তাঁর কাছে এসে বললো, আমি কংকর মারার পূর্বে মাথার চুল কেটে ফেলেছি। উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এতে কোন গুনাহ হবে না, এখন কংকর মারো। এরপর আরেক লোক এসে বললো, আমি কংকর মারার পূর্বে তাওয়াফে ইফাযাহ্ করেছি। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তাতে কোন গুনাহ হবে না, এখন কংকর মারো।][1]

بَابٌ فِى التَّحَلُّلِ وَنَقْلِهِمْ بَعْضَ الْأَعْمَالِ عَلٰى بَعْضٍ

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَفَ فِي حَجَّةِ الْوَدَاعِ بِمِنًى لِلنَّاسِ يَسْأَلُونَهُ فَجَاءَهُ رَجُلٌ فَقَالَ: لَمْ أَشْعُرْ فَحَلَقْتُ قَبْلَ أَنْ أَذْبَحَ. فَقَالَ: «اذْبَحْ وَلَا حَرَجَ» فَجَاءَ آخَرُ فَقَالَ: لَمْ أَشْعُرْ فَنَحَرْتُ قَبْلَ أَنْ أَرْمِيَ. فَقَالَ: «ارْمِ وَلَا حَرَجَ» . فَمَا سُئِلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ شَيْءٍ قُدِّمَ وَلَا أُخِّرَ إِلَّا قَالَ: «افْعَلْ وَلَا حرج» وَفِي رِوَايَةٍ لِمُسْلِمٍ: أَتَاهُ رَجُلٌ فَقَالَ: حَلَقْتُ قَبْلَ أَنْ أَرْمِيَ. قَالَ: «ارْمِ وَلَا حَرَجَ» وأتاهُ آخرُ فَقَالَ: أفَضتُ إِلى البيتِ قَبْلَ أَنْ أَرْمِيَ. قَالَ: «ارْمِ وَلَا حَرَجَ»

ব্যাখ্যা: (وَقَفَ) অর্থাৎ- তারা উটের উপর অবস্থান করলেন। যেমনটি বর্ণনা করেছেন সলিহ বিন কায়সান এর সনদে ইমাম বুখারী (রহঃ) ও ইমাম মুসলিম মা‘মার-এর সনদে অনুরূপ ইবনুল জারূদ ও মা‘মার-এর সনদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং ইউনুস-এর বর্ণনাটি ইমাম মুসলিমের এবং মা‘মার থেকে ইমাম নাসায়ী ও ইমাম আহমাদ বিন হাম্বলও বর্ণনা করেছেন, সেখানে শব্দ ছিল (وقف النبى ﷺ على راحلته) আর এরা সবাই বর্ণনা করেছেন ইবনু শিহাব যুহরী থেকে, তিনি ‘ঈসা বিন তলহা থেকে, তিনি ‘আবদুল্লাহ বিন ‘আমর থেকে। অপরদিকে ইয়াহ্ইয়া আল কাত্ত্বান ইমাম মালিক থেকে, তিনি ইমাম যুহরী থেকে, ইমাম যুহরীর বর্ণনায় যে, (انه حلس فى حجة الوداع فقام رجل) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাজ্জাতুল ওয়াদা‘তে বসলেন আর একজন লোক দাঁড়ালেন। এ বর্ণনাটি পূর্বের বর্ণনার সাথে সাংঘর্ষিক, তাই এর সমাধানকল্পে দ্বিতীয় বর্ণনাটিকে এভাবে ধরতে হবে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উটে আরোহণ করলেন এবং তার উপর বসলেন।

(بِمِنًى لِلنَّاسِ) অর্থাৎ- মানুষের জন্য। উল্লেখ্য যে, এখানে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিনার কোন্ স্থানে অবতীর্ণ করেছিলেন এবং কোন্ সময় অবতীর্ণ করেছিলেন তা কিছুই উল্লেখ করা হয়নি। তবে অপর হাদীস দ্বারা এ বিষয়ে ঝুঝা যায়, যেমন ইমাম বুখারী তার সহীহাতে ‘আবদুল ‘আযীয বিন আবী সালামাহ্ থেকে, তিনি ইমাম যুহরী থেকে এ সূত্রে বর্ণনা করেন (عند الجمرة) তথা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিনার জামারায়ে ‘আক্বাবায়ে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। আর অপর বর্ণনায় রয়েছে যা ইবনু জুরায়য ইমাম যুহরী থেকে বুখারী, মুসলিম ও ইবনুল জারূদ-এর বর্ণনা মতে যেখানে উক্ত সময়ের কথা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে (يخطب يوم النحر) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুৎবা দিয়েছিলেন কুরবানীর দিন।

অপর বর্ণনা মুহাম্মাদ বিন আবী হাফস্ তিনি ইমাম যুহরী থেকে যা বর্ণনা করেছেন ইমাম মুসলিম ও ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল সেটি হচ্ছে, اتاه رجل يوم النحر وهو واقف عند الجمرة অর্থাৎ- তার নিকট একজন লোক আসলো কুরবানীর দিন এমতাবস্থায় তিনি জামারার নিকটে অবস্থান করছিলেন।

কাযী ‘ইয়ায (রহঃ) বলেন, উক্ত রিওয়ায়াতগুলোর ভিন্নতার সমাধানকল্পে কতক ‘আলিম বলেন, মূলত ঐগুলো সব একই স্থানের কথা বলছে। অর্থাৎ- নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম خطب অর্থ হলো তিনি মানুষদের শিক্ষা দিচ্ছিলেন এখানে হজ্জের জন্য যে খুৎবা দেয়া হয় তা উদ্দেশ্য নয়।

তিনি আরো বলেন, তবে উক্ত বর্ণনাটি দু’টি স্থানের সম্ভাবনা রাখে।

১. জামারায়ে ‘আক্বাবাতে যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উটের উপর ছিলেন এবং উল্লেখ্য যে, এ বর্ণনার মধ্যে (خطب) তিনি খুৎবা দিয়েছেন এমন শব্দের ব্যবহার করা হয়নি। বরং বলা হয়েছে, (وقف وسئل) তিনি অবস্থান করলেন তাকে জিজ্ঞেস করা হলো।

২. কুরবানীর দিন সালাতুয্ যুহরের পর। আর মূলত এটা হচ্ছে সেই শারী‘আতসম্মত খুৎবা যা হজ্জের সময় ইমাম সাহেব প্রদান করেন তাতে তিনি মানবমণ্ডলীকে তাদের হজ্জের কাজে কোন ভুল-ত্রুটি হয়ে থাকলে করণীয়সহ অন্যান্য আনুষাঙ্গিক বিষয়াদি বর্ণনা করেন।

ইমাম নাবাবী (রহঃ) দ্বিতীয় কথাটিতে মতামত ব্যক্ত করেছেন। হাফিয ইবনু হাজার আসকালানী (রহঃ) বলেন, দ্বিতীয় মত আর প্রথম মতের মধ্যে কোন সাংঘর্ষিক অবস্থা সৃষ্টি হয়নি। কেননা হাদীস দু’টির তথা ‘আবদুল্লাহ বিন ‘আব্বাস (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত (যেটি সামনে আসবে) আর অপরটি ‘আবদুল্লাহ বিন ‘আমর (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত-এর কোন একটিতেও এ কথাটি বলা হয়নি যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দিনের কোন অংশে খুৎবা প্রদান করেছেন।

‘আল্লামা ‘উবায়দুল্লাহ মুবারকপূরী (রহঃ) বলেন, হ্যাঁ, এ বিষয়ে স্পষ্টত কোন বর্ণনা নেই ঠিক তবে একটি বর্ণনা আছে যা ইমাম বুখারী (রহঃ) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন যে, ‘‘কিছু প্রশ্নকারী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বললো, আমি তো বিকালের পর কংকর নিক্ষেপ করেছি। এ বর্ণনাটি প্রমাণ করে যে, এ ঘটনাটি ঘটেছিল সূর্য ঢলে যাওয়ার পর কেননা বিকাল বলতে সূর্য ঢুবে যাওয়ার পরের সময়কেই বুঝানো হয়ে থাকে। আর প্রশ্নকারী এ কথা জানতেন যে হাজীদের জন্য সুন্নাত হচ্ছে কংকর নিক্ষেপ করবে সকালেই, তাই তিনি তা বিলম্ব করে ফেললেন, অতএব এর পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করেছেন।

(رجل) হাফিয ইবনু হাজার আসকালানী (রহঃ) বলেন, এ হাদীসের এবং পরবর্তী হাদীসের প্রশণকারীর নাম সম্পর্কে অবগত হতে পারিনি। বস্ত্তত এ ক্ষেত্রে প্রশ্নকারীর সংখ্যা অধিক হওয়ায় রাবী কারো নাম বলেননি। অন্যত্র ইবনু হাজার আসকালানী (রহঃ) বলেন, প্রচুর গবেষণা সত্ত্বেও এ ব্যক্তির নাম আমি জানতে পারিনি, এমনকি তার এবং এ ঘটনায় প্রশ্নকারী ছিলেন সহাবায়ে কিরামের একটি দল আমি তাদের কারো নামই অবগত হতে পারিনি। তবে ইমাম ত্বহাবী সহ অন্যান্যরা যে শব্দের মাধ্যমে বর্ণনা করেছেন তা হচ্ছে (كان الاعراب لونه) একদল ‘আরব বেদুঈন জিজ্ঞেস করলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এ বর্ণনাটিই মূলত তাদের নাম না জানার অন্যতম কারণ। আর তারা যে একাধিক ছিলেন তার প্রমাণ হলো আগে-পিছে করে তাদের প্রশ্নের ভিন্নতা।

(لم أشعر)-এর শব্দটি لم أشعر আইনে পেশ দিয়ে পড়তে হবে। শব্দটি نصر ينصر থেকে এসেছে। অর্থ হল لم افطن আমি বুঝতে পারিনি। তাইতো কেউ যখন বুঝতে পারে কোন বিষয় তখন বলা হয় أشعر بالسير شعورا। কেউ কেউ বলেছেন لم أشعر এর মাধ্যমে বুঝানো হচ্ছে, আমি মনে করতে পারছি না।

বাজী (রহঃ) বলেন, لم أشعر এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো আমি ভুলে গিয়েছি। আবার কেউ কেউ বলেন, الشعور অর্থ العلم অর্থাৎ- আমি পূর্বে থেকেই এ মাসআলাটি সম্পর্কে অবগত ছিলাম না। ইমাম মুসলিম ইউনুস থেকে যে বর্ণনা করেছেন তা এ অর্থকেই শক্তিশালী করছে যেখানে বলা হয়েছে, لم أشعر أن الرمى قبل النحر فنحرت قبل أن ارمى وقال أخر لم أشعر ان النحر অর্থাৎ- আমি বুঝতে পারিনি কুরবানী আগে না কংকর নিক্ষেপ আগে, তাই আমি কংকর নিক্ষেপের আগে কুরবানী করেছি। এ দু’টি অর্থের দিকে ইঙ্গিত করেই ইমাম বুখারী (রহঃ) অধ্যায় রচনা করেছেন, (باب اذا رمى بعد ما امسى أو حلق قبل أن يذبح ناسيا أو جاهلا) অর্থাৎ- কোন ব্যক্তি বিকালে কংকর নিক্ষেপ করেছে অথবা ভুলে বা অজ্ঞতাবশতঃ কুরবানী করে ফেলেছে তার অধ্যায়।

‘আল্লামা বাদরুদ্দীন ‘আয়নী (রহঃ) বলেন, তবে যদি প্রশ্ন করা হয় হাদীসের মধ্যে ناسياجاهلا শব্দ নেই তাহলে ইমাম বুখারী কিভাবে এ শব্দদ্বয়ের মাধ্যমে অধ্যায় রচনা করলেন। উত্তরে আমি [‘উবায়দুল্লাহ মুবারকপূরী (রহঃ)] বলবো এ শব্দ দু’টি ‘আবদুল্লাহ বিন ‘উমার (রাঃ)-এর বর্ণনায় এসেছে আর তা হচ্ছে (لم أشعر فحلقت قبل أن اذبح) এখানে لم أشعر ‘‘আমি বুঝতে পারিনি’’ বলা হয়েছে, এ কথাটি ব্যাপকতার দাবীদার যার মাধ্যমেই ناسياجاهلا-এর অর্থ গৃহীত হয়েছে।

(ولا حرج) অর্থাৎ- কোন অসুবিধা নেই, অতঃপর যারা ফিদিয়া না দেয়ার মতপোষণ করেন তারা মূলত نفى الحرج তথা অসুবিধা না থাকার অর্থটি نفى الاثم والفدية তথা পাপ হবে না ও ফিদিয়া দেয়া লাগবে না এ অর্থের সাথে এক করে দিয়েছেন।

কাযী ‘ইয়ায (রহঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কথা ‘‘اذبح ولا حرج’’ যাবাহ কর কোন অসুবিধা নেই। এ কথাটি কুরবানী পুনরায় করার প্রতি আদেশসূচক নয় বরং এটা হচ্ছে তার পূর্বোক্ত কর্মের বৈধতা ঘোষণা করেছেন কেননা তিনি তো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে কাজ সম্পাদনের পর প্রশ্ন করেছিলেন। সুতরাং সবশেষে অর্থ হল (افعل ذلك متى شئت) যখন ইচ্ছা হয় তখন তা করতে পার এবং ইচ্ছা করে ও ভুলবশতঃ এ ধরনের কাজে যারা জড়িত হয় তাদের কোন ফিদিয়া দেয়া জরুরী নয় আর বিশেষ করে যারা ভুলবশতঃ করেছে তাদের পাপ হবে না। অতঃপর ইচ্ছাকৃতভাবে যে করেছে তার ক্ষেত্রে কথা হলোঃ

الاصل ان تارك السنة عمدا لا يأثم الا ان يتهاون فيأثم للتهاون لا للترك

অর্থাৎ- মূলনীতি হচ্ছে ইচ্ছা করে যারা সূন্নাত বর্জন করবে তারা পাপী হবে না তবে যদি সুন্নাতকে অবজ্ঞা করে তাহলে তারা পাপী হবে, সুতরাং দেখা গেল সুন্নাত কাজ ছেড়ে দিলে নয় বরং অবজ্ঞা করলে পাপ হয়। তবে বিনা কারণে সুন্নাত ছেড়ে দেয়াও তা অবজ্ঞা করারই শামিল।

অপরদিকে যারা বলেছেন ফিদিয়া দেয়া আবশ্যক তারা لا حرج কে نفى الاثم তথা পাপ হবে না এ অর্থে গ্রহণ করেছেন। ‘আল্লামা বাজী (রহঃ)-ও ঠিক একই কথা বলেছেন।

‘আল্লামা সিনদী (রহঃ) বলেন, জমহূর ‘উলামায়ে কিরামের নিকট لا حرج অর্থ لا اثم ولافدية অর্থাৎ- কোন পাপও হবে না এবং কোন ফিদ্ইয়াও দিতে হবে না।

অপরদিকে যারা ফিদিয়া দেয়াকে আবশ্যক বলেছেন তারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণী لا حرج তথা কোন অসুবিধা নেই- এ কথাটিকে دفع الاثم পাপ হবে না-এর অর্থে গ্রহণ করেছেন। যা দূরবর্তী অর্থ কারণ لا حرج কোনই অসুবিধা নেই। এ কথাটি ‘‘আম’’ তথা ব্যাপক অর্থবোধক যা দুনিয়া আখিরাত দু’ ক্ষেত্রটিই অন্তর্ভুক্ত করে। দ্বিতীয় কথা হচ্ছে যদি (دم) বা ফিদিয়া দিতেই হতো তাহলে অবশ্যই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা বর্ণনা করে দিতেন। তার বর্ণনা না করাই প্রমাণ করে এখানে ফিদিয়া আবশ্যক নয়।

এ বিষয়ে বর্ণিত সবগুলো হাদীস লক্ষ্য করলে বুঝা যায় যে, সহাবায়ে কিরাম সর্বমোট চারটি বিষয়ে প্রশ্ন করেছিলেন।

১. কুরবানী করার পূর্বে মাথা হলক।

২. কংকর নিক্ষেপ করার পূর্বে মাথা হলক।

৩. কংকর নিক্ষেপ করার পূর্বে কুরবানী এবং

৪. কংকর নিক্ষেপ করার পূর্বে তাওয়াফে ইফাযাহ্।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ