হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code
২২৬৮

পরিচ্ছেদঃ ১. প্রথম অনুচ্ছেদ - আল্লাহ সুবহানাহূ ওয়াতা‘আলার জিকির ও তাঁর নৈকট্য লাভ

২২৬৮-[৮] হানযালাহ্ ইবনুর্ রুবাইয়্যি’ আল উসায়দী (রাঃ) বলেন, আমার সাথে আবূ বকর -এর একবার সাক্ষাৎ হলে তিনি বলেন, কেমন আছো হানযালাহ্? আমি বললাম, হানযালাহ্ মুনাফিক হয়ে গেছে। তিনি বললেন, সুবহানাল্লাহ, এটা কি বলছ হানযালাহ্! আমি বললাম, আমরা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে থাকি। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদেরকে জান্নাত-জাহান্নাম স্মরণ করিয়ে দেন, (মনে হয়) আমরা যেন তা চোখে দেখি। কিন্তু আমরা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছ থেকে বের হয়ে আসি, কিন্তু (পরকক্ষণেই) স্ত্রী-সন্তানাদি, ক্ষেত-খামার নিয়ে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ি। তা অনেকটাই ভুলে যাই। তখন আবূ বকর বললেন, আমরাও এরূপই অনুভব করি। এরপর আমি ও আবূ বকর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে গেলাম। তাঁকে বললাম, হে আল্লাহর রসূল! হানযালাহ্ মুনাফিক হয়ে গেছে। তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সে আবার কেমন কথা?

আমি বললাম, হে আল্লাহ রসূল! আমরা আপনার কাছে থাকলে আপনি আমাদেরকে জান্নাত-জাহান্নামের কথা স্মরণ করিয়ে দেন। তখন মনে হয় তা যেন আমাদের চোখের দেখা। কিন্তু আপনার কাছ থেকে সরে গিয়ে স্ত্রী সন্তান-সন্ততি ও ক্ষেত-খামারের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ি তখন জান্নাত-জাহান্নামের কথা অনেকটাই ভুলে যাই। এসব কথা শুনে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যাঁর হাতে আমার জীবন রয়েছে, তাঁর কসম, যদি তোমরা সবসময় ঐরূপ থাকতে যেরূপ আমার কাছে থাকো। সবসময় জিকির-আযকার করো, তাহলে অবশ্যই মালায়িকাহ্ (ফেরেশতা) (ফেরেশতাগণ) তোমাদের বিছানায় ও তোমাদের চলাচলের পথে তোমাদের সাথে ’মুসাফাহা’ (হাত মিলাতেন) করতেন। কিন্তু হে হানযালাহ্! কখনো ঐরূপ কখনো এরূপই (এ অবস্থা) হবেই। এ বাক্যটি তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তিনবার বললেন। (মুসলিম)[1]

بَابُ ذِكْرِ اللّٰهِ عَزَّ وَجَلَّ وَالتَّقَرُّبُ إِلَيْهِ

وَعَن حَنْظَلَة بن الرّبيع الأسيدي قَالَ: لَقِيَنِي أَبُو بكر فَقَالَ: كَيْفَ أَنْتَ يَا حَنْظَلَةُ؟ قُلْتُ: نَافَقَ حَنْظَلَةُ قَالَ: سُبْحَانَ اللَّهِ مَا تَقُولُ؟ قُلْتُ: نَكُونُ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُذَكِّرُنَا بِالنَّارِ وَالْجَنَّةِ كَأَنَّا رَأْيُ عَيْنٍ فَإِذَا خَرَجْنَا مِنْ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَافَسْنَا الْأَزْوَاجَ وَالْأَوْلَادَ وَالضَّيْعَاتِ نَسِينَا كثيرا قَالَ أَبُو بكر: فو الله إِنَّا لَنَلْقَى مِثْلَ هَذَا فَانْطَلَقْتُ أَنَا وَأَبُو بَكْرٍ حَتَّى دَخَلْنَا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقُلْتُ: نَافَقَ حَنْظَلَةُ يَا رَسُولَ اللَّهُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «وَمَا ذَاكَ؟» قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ نَكُونُ عِنْدَكَ تُذَكِّرُنَا بِالنَّارِ وَالْجَنَّةِ كَأَنَّا رَأْيَ عَيْنٍ فَإِذَا خَرَجْنَا مِنْ عِنْدِكَ عَافَسْنَا الْأَزْوَاجَ وَالْأَوْلَادَ وَالضَّيْعَاتِ نَسِينَا كَثِيرًا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَوْ تَدُومُونَ عَلَى مَا تَكُونُونَ عِنْدِي وَفِي الذِّكْرِ لَصَافَحَتْكُمُ الْمَلَائِكَةُ عَلَى فُرُشِكُمْ وَفِي طُرُقِكُمْ وَلَكِنْ يَا حَنْظَلَةُ سَاعَةٌ وَسَاعَةٌ» ثَلَاث مَرَّات. رَوَاهُ مُسلم

ব্যাখ্যা: (حَنْظَلَةَ بْنِ الرُّبَيِّعِ) অত্র হাদীসে যে হানযালাহ্ (রাঃ)-এর কথা উল্লেখ করা হয়েছে তিনি সেই হানযালাহ্ নন যাকে মালায়িকাহ্ (ফেরেশতা) (ফেরেশতারা) মৃত্যুর পর গোসল দিয়েছিলেন যার নাম হলো হানযালাহ্ বিন আবী ‘আমির (রাঃ)। আর হাদীসে বলা হয়েছে হানযালাহ্ বিন রুবাইয়্যি' কথা।

যাই হোক হানযালাহ্ ইবনুর্ রুবাইয়্যি' (রাঃ)-এর সাথে আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) একবার দেখা করলেন। অন্য বর্ণনায় আছে যে, আবূ বাকর তার সাথে যখন দেখা করেন তখন তিনি কান্না করছিলেন। তাকে দেখে আবূ বাকর  জিজ্ঞেস করলেন, হে হানযালাহ্! আপনার ঈমান-‘আমলের খবর কি? তিনি উত্তরে বললেন, (نَافَقَ حَنْظَلَةُ) তথা হানযালাহ্ মুনাফিক হয়ে গেছে। এখানে অবস্থানগত নিফাক্বের কথা বলা হচ্ছে ঈমানী নিফাক্বের কথা নয়।

ইমাম জাযারী (রহঃ) বলেন, নিফাক হলো ইখলাসের বিপরীত। হানযালাহ্ (রাঃ) অত্র হাদীসে বুঝাতে চেয়েছেন যে, তিনি যতক্ষণ পর্যন্ত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট থাকেন ততক্ষণ তার ইখলাস ঠিক থাকে আর যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট থেকে একাকী চলে আসেন তখন দুনিয়ার প্রতি আসক্ত হয়ে যান। এখানে তিনি নিজের দুর্বলতাটাকে প্রকাশ করেছেন (যদিও তার ঈমান ছিল পূর্ণ ঈমান) এমনটাই ছিল সমস্ত সহাবায়ে কিরামের চরিত্র তারা যত ‘আমল করতেন তার চেয়ে আরো বেশি ‘আমল কিভাবে করা যায় সেই চেষ্টায় মগ্ন থাকতেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ