হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code
২২১৪

পরিচ্ছেদঃ ২. প্রথম অনুচ্ছেদ - কিরাআতের ভিন্নতা ও কুরআন সংকলন প্রসঙ্গে

২২১৪-[৪] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জিবরীল (আঃ) আমাকে এক রীতিতে কুরআন পড়ালেন। আমি তাকে এর পাঠ রীতির সংখ্যা বৃদ্ধি করে আনতে আল্লাহর নিকট ফেরত পাঠালাম। আল্লাহ আমার জন্য এ রীতি বৃদ্ধি করতে লাগলেন। অতঃপর এ পাঠ সাত রীতিতে গিয়ে পৌঁছল।

বর্ণনাকারী ইবনু শিহাব যুহরী বলেন, বিশ্বস্ত সূত্রে আমার নিকট খবর পৌঁছেছে যে, এ সাত রীতি অর্থের দিক দিয়ে একই। এর দ্বারা হালাল হারামে কোন পার্থক্য পড়েনি। (বুখারী, মুসলিম)[1]

بَابُ اِخْتِلَافِ الْقِرَاءَاتِ وَجَمْعِ الْقُرْاٰنِ

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «أَقْرَأَنِي جِبْرِيل على حرف فَرَاجعه فَلم أزل استزيده ويزيدني حَتَّى انْتهى إِلَى سَبْعَةِ أَحْرُفٍ» . قَالَ ابْنُ شِهَابٍ: بَلَغَنِي أَنَّ تِلْكَ السَّبْعَةَ الْأَحْرُفَ إِنَّمَا هِيَ فِي الْأَمْرِ تَكُونُ وَاحِدًا لَا تَخْتَلِفُ فِي حَلَالٍ وَلَا حرَام

ব্যাখ্যা: কুরআন প্রথমত এক পদ্ধতিতে পড়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু পরবর্তীতে উম্মাতের নিকটে সহজসাধ্য করার জন্য রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিবরীল-এর মাধ্যমে আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করেন। তাই আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে তাদের সুবিধানুযায়ী পড়ার জন্য প্রশস্ততা দান করেছেন। এক বর্ণনায় রয়েছে যা সুলায়মান বিন সারদ-এর তিনি বর্ণনা করেন, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, হে উবাই! আমার নিকটে দু’জন মালাক (ফেরেশতা) আসলো তাদের একজন বলল, তুমি এক রীতিতে পড়। অপর মালাক বলল, তাকে এর চাইতে বেশি সুযোগটা দাও। আমি বললাম, আমাকে এর চাইতে বেশি সুযোগ দেয়া হোক। অতঃপর বলল, দুই রীতিতে পড়। এরপর বেশি সহজ করতে বললে একজন মালাক বলল, আপনি সাতভাবে পড়ুন।

বায়হাক্বী (রহঃ) বলেছেন, একটি শব্দ দুই তিন থেকে সাত পদ্ধতিতে পড়া যায় যাতে সজহভাবে বা কষ্ট ছাড়াই পড়া সুবিধা হয়। ইমাম ত্বহাবী (রহঃ)-এর নিকটে সাতভাবে পড়া বলতে হালালকে হারাম বা হারামকে হালাল করা যাবে না। এই পরিবর্তন শুধু শব্দের ভিতরে হবে অর্থে নয়। অর্থাৎ- শব্দের অর্থ ঠিক রেখে রূপ পরিবর্তন করা কুরআন মাজীদে জায়িয।

মাওয়ার্দী স্পষ্টভাবে বলেছেন, যে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিরাআতের ক্ষেত্রে একটি অক্ষরকে অন্য একটি অক্ষরের সাথে পরিবর্তন করার ইঙ্গিত প্রদান করেছেন। আর মুসলিমগণ امثال -এর আয়াতকে أحكام-এর সাথে পরিবর্তন করা হারাম মর্মে ঐকমত্য পোষণ করেছেন।

আহমাদ ও বায়হাক্বী বলেছেন, مثبت-কে منفي এবং حلال-কে হারামে পরিবর্তন করা কুরআনে জায়িয নয়। আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ وَلَوْ كَانَ مِنْ عِنْدِ غَيْرِ اللهِ لَوَجَدُوا فِيهِ اخْتِلَافًا كَثِيرًا ‘‘যদি তা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নিকট হতে আসতো, তবে তাতে তারা অবশ্যই বহু অসঙ্গতি পেত’’- (সূরা আন্ নিসা ৪ : ৮২)। আর এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে হওয়াই এতে সামান্যতম মতভেদ পাওয়া যাবে না।