হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code
২১৪৫

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ

২১৪৫-[৩৭] নু’মান ইবনু বাশীর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আসমান ও জমিন সৃষ্টি করার দু’ হাজার বছর আগে আল্লাহ তা’আলা একটি কিতাব লিখেছেন। এ কিতাব হতে পরবর্তীতে দু’টি আয়াত নাযিল করেছেন যা দ্বারা সূরা আল বাকারাহ্ শেষ করেছেন। কোন ঘরে তা তিন রাত পড়া হবে, অথচ এরপরও এ ঘরের কাছে শয়তান যাবে, এমনটা হতে পারে না। (তিরমিযী ও দারিমী। কিন্তু ইমাম তিরমিযী বলেছেন, হাদীসটি গরীব।)[1]

اَلْفَصْلُ الثَّانِىْ

وَعَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ اللَّهَ كتب كتابا قبل أَن يخلق السَّمَوَات وَالْأَرْضَ بِأَلْفَيْ عَامٍ أَنْزَلَ مِنْهُ آيَتَيْنِ خَتَمَ بِهِمَا سُورَةَ الْبَقَرَةِ وَلَا تُقْرَآنِ فِي دَارٍ ثَلَاثَ لَيَالٍ فَيَقْرَبَهَا الشَّيْطَانُ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَالدَّارِمِيُّ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيب

ব্যাখ্যা: আল্লাহ তা‘আলার ইচ্ছানুযায়ী তাকদীর বা সৃষ্টির সকল নির্ধারিত বিষয় আসমান এবং জমিন সৃষ্টির দু’ হাজার বছর পূর্বেই লাওহে মাহফূযে লিখে রেখেছেন। দু’ হাজার বছর এ কথাটি হলো দীর্ঘ সময়ের প্রতি ইঙ্গিত মাত্র।

এজন্য মুহাদ্দিসীনগণ এটাকে মুসলিমে বর্ণিত ‘‘আল্লাহ তা‘আলা আসমান জমিন সৃষ্টির পঞ্চাশ হাজার বছর পূর্বে তাকদীর বা সৃষ্টির নির্ধারিত বিষয় লিখে রেখেছেন’’, এ হাদীসকে ঐ কথার বিরোধী মনে করেন না। কেননা মূল তাকদীর আল্লাহ তা‘আলা পঞ্চাশ হাজার বছর পূর্বেই লাওহে মাহফূযে লিখে রেখেছেন। অতঃপর আসমান জমিন সৃষ্টির দুই হাজার বছর পূর্বে (আল্লাহ তা‘আলা) মালায়িকাহ্’র (ফেরেশতাদের) নির্দেশ করেন, তারা তা খণ্ড খণ্ড বা আলাদা আলাদাভাবে লিপিবদ্ধ করে ফেলেন।

অথবা তাকদীর আল্লাহ তা‘আলা একবারেই লিখে ফেলেননি বরং পর্যায়ক্রমে লিখতে লিখতে কোনটি পঞ্চাশ হাজার বছর পূর্বে কোনটা দুই হাজার বছর পূর্বে লিখেছেন, সুতরাং দুই হাদীসের মধ্যে কোন বিরোধ নেই।

 কেউ বলেছেন, এখানে الكتابة লিখা الاظهار প্রকাশ অর্থে ব্যবহার হয়েছে।

অতএব, পরস্পর বিরোধপূর্ণ দু’ হাদীসের সমন্বয়ী অর্থ হলো আল্লাহ তা‘আলা আসমান জমিন সৃষ্টির পঞ্চাশ হাজার বছর পূর্বেই তাকদীর লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন, অতঃপর আসমান জমিন সৃষ্টির দু’ হাজার বছর পূর্বে তা এক শ্রেণীর মালায়িকাহ্ (ফেরেশতা)’র নিকট اظهار বা প্রকাশ করেছেন। অত্র হাদীসে সেটাই বলা হয়েছে।

‘আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেন, সম্ভবতঃ এর সার কথা এই যে, পৃথিবীতে যা কিছু হবে তা আসমান জমিন সৃষ্টির পঞ্চাশ হাজার বছর পূর্বেই লাওহে মাহফূযে লিপিবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। লাওহে মাহফূযে পবিত্র কুরআনুল কারীমের লিপিবদ্ধও এর অন্তর্ভুক্ত। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা কিছু মালাক (ফেরেশতা) এবং অন্যান্য কিছু সৃষ্টি করলেন, এরপর আসমান জমিন সৃষ্টির দুই হাজার বছর পূর্বে তাদের নিকট কুরআনুল কারীমের লিখনী প্রকাশ করলেন।

লাওহে মাহফূযে লিখিত বা রক্ষিত পবিত্র কুরআনুল কারীম থেকে আল্লাহ তা‘আলা দু’টি আয়াত নাযিল করেছেন। এ দু’টি আয়াত হলো সূরা আল বাকারাহ্’র শেষ দু’টি আয়াত। কোন ঘরে বা বাড়িতে যদি এ দু’টি আয়াত একাধারে তিনদিন তিলাওয়াত করা হয় এবং এর সাথে অতীব মহিমান্বিত সূরা আল ফাতিহাহ্ পাঠ করা হয় তাহলে সেখানে শয়তান প্রবেশ করতে পারে না।