হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code
১৩৮৭

পরিচ্ছেদঃ ৪৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - পবিত্রতা অর্জন ও সকাল সকাল মসজিদে গমন

১৩৮৭-[৭] আবূ সা’ঈদ ও আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তাঁরা বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি জুমু’আর দিন গোসল করবে। উত্তম পোশাক পরবে। তার কাছে থাকলে সুগন্ধি লাগাবে। তারপর মসজিদে গমন করবে। কিন্তু মানুষের কাঁধ ডিঙ্গিয়ে সামনে আসার চেষ্টা করবে না। এরপর যথাসাধ্য সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করবে। ইমাম খুতবার জন্য হুজরা হতে বের হবার পর থেকে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) শেষ হওয়া পর্যন্ত চুপচাপ থাকবে। তাহলে এ জুমু’আহ্ হতে পূর্বের জুমু’আহ্ পর্যন্ত তার যত গুনাহ হয়েছে তা তার কাফফারাহ্ হয়ে যাবে। (আবূ দাঊদ)[1]

عَنْ أَبِي سَعِيدٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ قَالَا: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «من اغْتَسَلَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَلَبِسَ مِنْ أَحْسَنِ ثِيَابِهِ وَمَسَّ مِنْ طِيبٍ إِنْ كَانَ عِنْدَهُ ثُمَّ أَتَى الْجُمُعَةَ فَلَمْ يَتَخَطَّ أَعْنَاقَ النَّاسِ ثُمَّ صَلَّى مَا كَتَبَ اللَّهُ لَهُ ثُمَّ أَنْصَتَ إِذا خرج إِمَام حَتَّى يَفْرُغَ مِنْ صَلَاتِهِ كَانَتْ كَفَّارَةً لِمَا بَيْنَهَا وَبَيْنَ جُمُعَتِهِ الَّتِي قَبْلَهَا» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

ব্যাখ্যা: আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেনঃ উত্তম পোশাক পরিধানের দ্বারা সাদা পোশাক উদ্দেশ্য, অর্থাৎ রঙের দিক থেকে উত্তম পোশাক হলো সাদা পোশাক। কেননা সহীহ হাদীসে রয়েছে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা সাদা পোশাক পরিধান করো, কেননা তা তোমাদের উত্তম পোশাক এবং তাতেই তোমাদের মৃত ব্যক্তিদের কাফন দাও।

অপর সহীহ বর্ণনায় রয়েছেঃ নিশ্চয়ই তা অধিক পূত ও পবিত্র। এখানে দলীল হলোঃ সুন্দর পোশাক পরা শারী‘আত সম্মত এবং জুমু‘আর দিনে সৌন্দর্য অবলম্বন করা মুস্তাহাব, যা মুসলিমদের (সাপ্তাহিক) ঈদ এ ব্যাপারে কারো দ্বিমত নেই।

(وَمَسَّ مِنْ طِيْبٍ إِنْ كَانَ عِنْدَه) অর্থাৎ বাড়িতে কিংবা স্ত্রীর নিকট সুগন্ধি থাকায় তার জন্য তা অর্জনে সহজ হয় তবে অবশ্যই সুগন্ধি লাগাবে এবং জুমু‘আর দিনে সুগন্ধি লাগানো মুস্তাহাব এতে কারো দ্বিমত নেই। আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে সহীহ সানাদে বর্ণিত রয়েছে, যেমন- হাফিয আসক্বালানী (রহঃ) ফাতহুল বারীতে বলেছেন, নিশ্চয় জুমু‘আর দিনে সুগন্ধি লাগানো ওয়াজিব এবং আহলুয্ যাহিরগণ এ মত ব্যক্ত করেছেন। (ثُمَّ أَنْصَتَ إِذَا خَرَجَ إِمَامٌ) মিম্বারের উপর আরোহণের জন্য বের হওয়া। এখান থেকে ইমাম আবূ হানীফাহ্ (রহঃ) দলীল গ্রহণ করেছেন যে, জুমু‘আর দিনের চুপ থাকার সময় হলো ইমামের বের হওয়া থেকে (খুতবার জন্য দাঁড়ানো)। তবে আবুদ্ দারদা (রাঃ) বর্ণিত হাদীসে রয়েছে, যখন তুমি ইমামের কথা শুনবে তখন চুপ থাকবে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) শেষ হওয়া পর্যন্ত। (সুতরাং চুপ থাকার সময় হলে ইমামের খুতবার শুরু থেকে)। (আহমাদ, ত্ববারানী)

আর খতীব খুতবাহ্ শেষ করার পর। কেউ বলেছেন সালাতের শুরুতে কথা বলার ব্যাপারে মত পার্থক্য রয়েছে। আবূ হানীফাহ্ (রহঃ)-এর মতে তা মাকরূহ। মালিক, শাফি‘ঈ, আহমাদ, আবূ ইউসুফ ও মুহাম্মাদ (রহঃ)-এর মতে খুতবাহ্ শেষে বা সালাতের শুরুতে কথা বলাতে কোন দোষ নেই। ইবনু ‘আরাবী (রহঃ) চুপ থাকাই প্রাধান্য দিয়েছেন। (আল্লাহ তা‘আলাই ভাল জানেন)

এমনকি তিনি বলেন, জুমু‘আর দিনে মিম্বার থেকে নামা ও সালাত আরম্ভ করার মাঝে কথা বলা প্রসঙ্গে দু’টি রিওয়ায়াত এসেছে, তার নিকট অধিক বিশুদ্ধ রিওয়ায়াত হলো খুতবার পর জুমু‘আর সালাতের আগে কথা না বলা ইমাম শাওকানী (রহঃ) এ মতই গ্রহণ করেছেন। তবে সালাত শেষ হওয়া পর্যন্ত চুপ থাকার ব্যাপারে একাধিক হাদীস বর্ণিত রয়েছে, যেমন নাসায়ীতে জাইয়্যিদ সানাদে সালমান (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসঃ

(يُنْصِتْ حَتّى يَفْرُغَ مِنْ صَلَاتِه) সালাত শেষ না হওয়া পর্যন্ত চুপ থাকবে। অপরদিকে মুসনাদে আহমাদে সহীহ সানাদে নুবায়শাহ্ (রাঃ) বর্ণিত হাদীস রয়েছে যে,

فاستمع وأنصت حتى يقضي الإمام جمعته وكلامه.

শুনো ও চুপ থাকো যতক্ষণ না ইমাম তার জুমু‘আহ্ ও খুতবাহ্ শেষ না করেন।

এ উভয় হাদীসের সমন্বয় হলো যে, খুতবার পর কথা বলা জায়িয। আর তা হলো ইমামের প্রয়োজনীয় কথা বলা।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ