হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code
১২৫৮

পরিচ্ছেদঃ ৩৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - বিতরের সালাত

১২৫৮-[৫] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ তোমরা বিতরকে তোমাদের রাতের শেষ সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) করো। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْوِتْرِ

وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «اجْعَلُوا آخِرَ صَلَاتِكُمْ بِاللَّيْلِ وترا» . رَوَاهُ مُسلم

ব্যাখ্যা: তোমাদের শেষ সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) হিসেবে বিতরের সালাত আদায় করো। (অর্থাৎ তাহাজ্জুদের শেষাংশে বিতর পড়)

উপরোক্ত হাদীস থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, বিতরের পর কোন সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করা শুদ্ধ নয়। তবে এ ব্যাপারে মুহাক্কিকদের দু’টি বিষয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। (১) বিতরের পর বসা অবস্থায় দু’ রাক্‘আত সালাত আদায় করা শারী‘আত সম্মত, (২) যে ব্যক্তি বিতর রাতের প্রথমভাগে আদায় করে নিবে এবং গভীর রাতে নফল সালাতের ইচ্ছা করবে, তাহলে রাতের প্রথমভাগে আদায়কৃত বিতর কি তার জন্য যথেষ্ট হবে? নাকি এক রাক্‘আত সালাত আদায় করার মাধ্যমে তার রাতের প্রথমভাগের আদায়কৃত বিতর ভেঙ্গে দিতে হবে? অতঃপর নফল সালাত আদায় করার পর আবার কি বিতর আদায় করা প্রয়োজন? নাকি প্রয়োজন নয়। এ ব্যাপারে অধিকাংশ ‘উলামাগণ যথাক্রমে চার ইমাম, সাওরী ও ইবনু মুবারাকসহ অনেকেই বলেছেন যে, দু’ দু’ রাক্‘আত করে ইচ্ছামত সালাত আদায় করবে বিতর ভাঙ্গার কোন প্রয়োজন নেই। কারণ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে, এক রাত্রিতে দু’বার বিতর পড়া বৈধ নয়। (আহমাদ, আত্ তিরমিযী, আবূ দাঊদ, নাসায়ী, সহীহ ইবনু হিব্বান, সহীহ ইবনু খুযায়মাহ্-এর রিওয়ায়াতে হাদীসটি রয়েছে)

তবে কেউ কেউ বলেছেন যে, বিতর ভাঙ্গা জায়িয। তারা বলেন যে, বিতরের উপর (দু’ বার) বিতর পড়ে তা ভেঙ্গে দিয়ে ইচ্ছামাফিক নফল সালাত আদায় করার পর পুনরায় বিতর আদায় করতে হবে।

তবে প্রথম মতই সবার কাছে গ্রহণযোগ্য এবং সর্বাধিক সহীহ; কেননা অপর বর্ণনায় রয়েছে যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিতরের পরেও সালাত আদায় করেছেন এবং তুহফা প্রণেতা এ মাসআলার ব্যাপারে দৃঢ় মতামত দিয়েছেন যে, বিতর না ভাঙ্গাটাই আমার নিকট অধিক পছন্দনীয় মত এবং তিনি এও বলেছেন যে, বিতর ভাঙ্গার সপক্ষে সহীহ হাদীস দ্বারা কোন প্রমাণ আমি পাইনি।

ইমাম আবূ হানীফাহ্ (রহঃ) উপরোক্ত হাদীস দ্বারা বিতর ওয়াজিব হওয়ার ব্যাপারে দলীল গ্রহণ করেছেন। তিনি বলেন, اجْعَلُوا শব্দটি أمر আর أمر -এর মৌলিকত্বটা ওয়াজিবের জন্য। কাজেই বিতর ওয়াজিব। তার জবাব তিনভাবে দেয়া যায়।

(১) أمر যদিও وجوب বা আবশ্যকতার জন্য, কিন্তু যখন কোন قرينة বা আলামত পাওয়া যায় তবে তা وجوب বা আবশ্যকতা থেকে غير وجوب বা অনাবশ্যকতার দিকে স্থানান্তরিত হয়। তাছাড়া হানাফী ‘উলামাগণ স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন যে, এ হাদীসে اجْعَلُوا শব্দটি أمر বা আবশ্যকতার জন্য নয়। মুল্লা ‘আলী ক্বারী (রহঃ) বলেন, এ হাদীসে اجْعَلُوا শব্দটি বৈধতার জন্য ব্যবহার হয়েছে।

(২) নিশ্চয়ই রাতের সালাত ওয়াজিব নয়। হাফিয ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ) ফাতহুল বারীতে উল্লেখ করেছেন যে, রাতের সালাত ওয়াজিব নয় কাজেই রাতের শেষটাও (অর্থাৎ বিতর) অনুরূপ, তথা ওয়াজিব নয়। আর মৌলিক বিষয় সর্বদাই অনাবশ্যক থাকবে যতক্ষণ না আবশ্যক হওয়ার প্রমাণ না পাওয়া যাবে।

(৩) নিশ্চয়ই যদি এ হাদীস দ্বারা বিতর ওয়াজিব সাব্যস্ত হয় তাহলে ইবনু ‘উমার (রাঃ) অবশ্যই তা বলতেন এবং কোন ধরনের ছাড় দেয়া ছাড়াই তিনি ফাতাওয়া দিতেন। কিন্তু তিনি শুধু এতটুকুই বলতেন, ‘‘নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিতর আদায় করেছেন এবং মুসলিমগণ বিতর আদায় করেছেন’’। (সহীহ মুসলিম)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ