হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code
১০০২

পরিচ্ছেদঃ ১৯. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - সালাতের মাঝে যে সব কাজ করা নাজায়িয ও যে সব কাজ করা জায়িয

১০০২-[২৫] উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের ’আফলাহ’ নামক গোলামকে দেখলেন যে, সে যখন সাজদায় যায় (তখন সাজদার স্থান সাফ করার জন্যে) ফুঁ দেয়। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, হে আফলাহ! তুমি তোমার চেহারাকে ধূলিময় করো। (তিরমিযী)[1]

وَعَن أم سَلمَة قَالَتْ: رَأَى النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ غُلَامًا لَنَا يُقَالُ لَهُ: أَفْلَحُ إِذَا سَجَدَ نَفَخَ فَقَالَ: «يَا أَفْلَحُ تَرِّبْ وَجْهَكَ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

ব্যাখ্যা: (تَرِّبْ) অর্থাৎ তোমার চেহারা মাটি পর্যন্ত পৌঁছাও তার সাথে লাগাও এবং তার উপর স্থাপন করো। তোমার চেহারা রাখার স্থান থেকে ধূলা-মাটি ফুঁকে সরিয়ে দিও না। কেননা ধূলাতে চেহারা স্থাপন করা নম্রতার অতি নিকটবর্তী। আর যে অঙ্গটি শরীরের মধ্যে সর্বাপেক্ষা উত্তম তাতে ধূলা লাগানো নম্রতার শেষ প্রান্ত। এ হাদীসটি তাদের দলীল যারা কোন প্রকার আড়াল ব্যতীত সরাসরি মাটিতে সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করার নীতি গ্রহণ করেছেন। আর এ অভিমত বর্ণিত হয়েছে ইবনু মাস্‘ঊদ, ‘উরওয়াহ্ ইবনু যুবায়র (রাঃ)-এবং ইবরাহীম নাখ্‘ঈ (রহঃ) থেকে। জমহূর ‘আলিমদের মত এর বিপরীত।

ইরাক্বী (রহঃ) বলেনঃ এর জওয়াব হল নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ধূলার উপর সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করার নির্দেশ দেননি। এর দ্বারা তাঁর উদ্দেশ্য মাটিতে কপাল রাখা। তিনি যেন তাকে এমতাবস্থায় দেখতে পেয়েছিলেন যে, ঐ ব্যক্তি সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করছে অথচ তার কপাল ভালভাবে জমিনের উপর স্থাপন করছে না। ফলে তাকে জমিনে কপাল স্থাপনের নির্দেশ দেন। তিনি তাকে এমন অবস্থায় দেখেননি যে, সে কোন কিছু দিয়ে জমিন আড়াল করে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করছে। আর তিনি তাকে তা সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিচ্ছেন। অত্র হাদীস দ্বারা দলীল প্রদান করা হয় যে, সালাতরত অবস্থায় ফুঁক দেয়া মাকরূহ। এ বিষয়ে বিদ্বানগণের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে।

ইমাম মালিক (রহঃ) থেকে বর্ণিত, সালাতরত অবস্থায় ফুঁক দেয়া মাকরূহ তবে তা সালাত ভঙ্গ করে না যেমনটি কথা দ্বারা তা ভঙ্গ হয়। ইমাম আহমাদ ও ইসহাক (রহঃ)-এর অভিমতও তাই। ইবনু বাত্তাল (রহঃ)-এর বক্তব্য অনুযায়ী আবূ ইউসুফ ও আশহাব এ অভিমত গ্রহণ করেছেন। মুদাওয়ানাহ্ গ্রন্থে আছে, যে ফুঁক দেয়াও কথা বলার মতই সালাত ভঙ্গ করে।

আবূ হানীফাহ্ এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  (রহঃ)-এর মত হল, যদি ফুঁক দেয়ার শব্দ শ্রবণ করা যায় তবে তা কথা বলার মতই সালাত ভঙ্গ করে। তা না হলে সালাত ভঙ্গ হবে না। আমাদের মতে সঠিক কথা হল ফুঁকের কারণে সালাত ভঙ্গ হবে না। তাতে দু’ একটি হরফ উচ্চারণ হোক বা না হোক, ফুঁকের শব্দ শুনতে পাওয়া যাক অথবা না পাওয়া যাক। এর সপক্ষে দলীল এই যে, ইমাম আহমাদ, তিরমিযী, আবূ দাঊদ ও নাসায়ী প্রমুখ ইমামগণ ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ)  থেকে বর্ণনা করেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূর্য গ্রহণের সালাতে ফুঁক দিয়েছিলেন। মুগীরাহ্ ইবনু শু‘বাহ্ সূত্রে আবূ দাঊদ বর্ণনা করেছেন যে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর সর্বশেষ সাজদাতে ফুঁক দিলেন এবং উফ উফ শব্দ করলেন।

এতে শাফি‘ঈ, হাম্বালী ও হানাফী মাযহাবের মতামত সুস্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যাত হয়। কেননা তাঁর শব্দ শুনা গিয়েছিল। আর হাদীসে এ কথাও উল্লেখ আছে যে, আমার সামনে জাহান্নাম উপস্থাপন করা হয়েছিল, তার তাপ তোমাদের ঘিরে ফেলবে এ আশঙ্কায় আমি ফুঁকে ছিলাম। ইমাম বায়হাক্বী ইঙ্গিত করেছেন যে, এটি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য খাস বিষয়। এর প্রত্যুত্তরে বলা হয় যে, খাস দলীল ব্যতীত সাব্যস্ত হয় না। ইবনু বাত্তাল (রহঃ) বলেনঃ সালাত ভঙ্গ না হওয়ার অভিমতই উত্তম।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ