হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code
৯২৭

পরিচ্ছেদঃ ১৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওপর দরূদ পাঠ ও তার মর্যাদা

৯২৭-[৯] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ লাঞ্ছিত হোক সেই ব্যক্তি, যার নিকট আমার নাম উচ্চারিত হয় কিন্তু সে আমার প্রতি দরূদ পাঠ করে না। লাঞ্ছিত হোক সেই ব্যক্তি, যার কাছে রমাযান মাস আসে আবার তার গুনাহ ক্ষমার আগে সে মাস চলে যায়। লাঞ্ছিত হোক সেই ব্যক্তি, যার নিকট তার বৃদ্ধ মা-বাপ অথবা দু’জনের একজন বেঁচে থাকে অথচ তারা তাকে জান্নাতে পৌঁছায় না। (তিরমিযী)[1]

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «رَغِمَ أَنْفُ رَجُلٍ ذُكِرْتُ عِنْدَهُ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَيَّ وَرَغِمَ أَنْفُ رَجُلٍ دَخَلَ عَلَيْهِ رَمَضَانُ ثُمَّ انْسَلَخَ قَبْلَ أَنْ يُغْفَرَ لَهُ وَرَغِمَ أَنْفُ رَجُلٍ أَدْرَكَ عِنْدَهُ أَبَوَاهُ الْكبر أَو أَحدهمَا فَلم يدْخلَاهُ الْجنَّة» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

ব্যাখ্যা: (رَغِمَ أَنْفُ) নাক ধূলায় ধূসরিত হোক রূপক অর্থ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে আর তা লাঞ্ছনা, ধ্বংস, অপমান ইত্যাদি।

(فَلَمْ يُصَلِّ عَلَيَّ) যে আমার ওপর দরূদ পাঠ করলো না। ‘আল্লামা শাওকানী ‘তুহফাতুজ্ জাকিরীন’ কিতাবে ২৫ পৃষ্ঠায় বলেন, হাদীসটি প্রমাণ করে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নাম উল্লেখ করার সময় তাঁর প্রতি দরূদ পাঠ করা আবশ্যক। আবশ্যক না হলে যারা দরূদ পাঠ করে না তাদের জন্য লাঞ্ছনা ও ধ্বংসের বদদু‘আ করতেন না।

আর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওপর দরূদ পাঠ করা মূলত তাঁর সম্মান ও মর্যাদার ঘোষণা দেয়া। সুতরাং যে ব্যক্তি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সম্মান করবে, আল্লাহ তাকে সম্মানিত করবেন এবং দুনিয়া ও আখিরাতে মর্যাদা বাড়িয়ে দিবেন।

আর যে ব্যক্তি তাঁকে সম্মান করবে না, আল্লাহ তাকে অপমানিত ও লাঞ্ছিত করবেন। বিবেকবানের নিকট মর্যাদার বিষয়টি বুঝতে সমস্যা হলেও মু’মিনার বিশ্বাস করে একবার দরূদ পাঠ করলে অসংখ্য প্রতিদান পাবে। সুতরাং একবার দরূদ পাঠ করলে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর ওপর দশবার রহমাত করবেন এবং তাঁর দশটি মর্যাদা বাড়িয়ে দিবেন এর দশটি গুনাহ মাফ করে দিবেন যে ব্যক্তি এটা গনীমাত মনে করবে না তথা দরূদ পাঠ করবে না, সে এ সমস্ত ফাযীলাত থেকে বঞ্চিত হবে। বাস্তব হলো আল্লাহ তাকে লাঞ্চিত করবেন। আর তার ওপর দুঃখ-দুর্দশা চেপে বসবে।

অনুরূপ রমাযান মাস, সম্মানিত মাস যে মাসে কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে। সে কুরআন মানুষের জন্য হিদায়াত এবং সত্য পথযাত্রীদের জন্য সুস্পষ্ট পথ-নির্দেশক আর ন্যায়-অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য সৃষ্টিকারী। যে ব্যক্তি এ মাসকে সম্মানিত হওয়ার সুযোগ হিসেবে পেল। ঈমান ও প্রতিদানের আশায় সিয়াম ও ক্বিয়ামের মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা তাকে সম্মানিত করবেন আর যে ব্যক্তি এ মাসকে সম্মানিত করলো না তথা সিয়াম ও ক্বিয়াম (কিয়াম) সাধনা করলো না আল্লাহ তাকে অপমানিত করবেন।

আর পিতা-মাতাকে সম্মান করার অর্থ হলো আল্লাহ তা‘আলাকে সম্মান করা এজন্য আল্লাহ তা‘আলা তাদের (পিতা-মাতা) প্রতি সদ্ব্যবহার করা ও সম্মানজনক আচরণ করা তার একত্ববাদ ও ‘ইবাদাতের সাথে সংশ্লিষ্ট করেছেন, যেমন আল্লাহ বলেনঃ ‘‘তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাকে ছাড়া অন্য কারও ‘ইবাদাত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করো।’’ (বানী ইসরাঈল ১৭ : ২৩)

সুতরাং যে ব্যক্তি তাদের সাথে সৎ আচরণ ও খিদমাত করা থেকে নিজেদেরকে গুটিয়ে রাখে বিশেষ করে বার্ধক্যে অবস্থায় যখন তারা বাড়ীতে অত্যন্ত দুর্বল অবস্থায় থাকে এবং তাদের তত্ত্বাবধানের আর কোন লোক থাকে না সে ছাড়া এ সময়টাকে যদি গনীমাত মনে না করে তাহলে আল্লাহ তাকে ধ্বংস ও লাঞ্ছিত করবেন।

(لَمْ يُدْخِلَاهُ الْجَنَّةَ) তাকে তারা (পিতা-মাতারা) জান্নাতে প্রবেশ করায়নি। আল্লাহর পক্ষ হতে জান্নাতের প্রবেশ অনুমোদন হবে পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ ও সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে। (জান্নাতে যাওয়ার জন্য) পিতা-মাতার সম্বন্ধের বিষয়টি মূলত রূপক যেমন বলা হয় বসন্তকাল শস্য উৎপন্ন করেছে।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ