হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code
৫৮

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কাবীরাহ্ (কবিরা) গুনাহ ও মুনাফিক্বীর নিদর্শন

৫৮-[১০] সফ্ওয়ান ইবনু ’আস্‌সাল (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা এক ইয়াহূদী তার সঙ্গীকে বলল, এসো, আমাকে এ নবী লোকটির নিকট নিয়ে চল। সঙ্গী বলল, তাঁকে ’নবী’ বলবে না, কারণ সে যদি তা শুনে তাহলে সে আনন্দে আত্মহারা হয়ে যাবে। অতঃপর তারা উভয়ে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এলো এবং তাঁকে (মূসার) নয়টি স্পষ্ট হুকুম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করল। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ (১) আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করবে না, (২) চুরি করবে না, (৩) ব্যভিচার করবে না, (৪) [শারী’আতের অনুমতি ব্যতিরেকে) কাউকে হত্যা করবে না যা আল্লাহ হারাম করেছেন, (৫) (মিথ্যে অপবাদ দিয়ে) কোন নিরপরাধ ব্যক্তিকে হত্যা করবার জন্য আদালতের নিকট নিয়ে যাবে না, (৬) যাদু করবে না, (৭) সুদ খাবে না, (৮) কোন সতী-সাধ্বীর ওপর ব্যভিচারের মিথ্যা অভিযোগ দিবে না এবং (৯) জিহাদকালে ময়দান থেকে পিঠ ফিরিয়ে পলায়নের উদ্দেশে আসবে না। আর হে ইয়াহূদীরা! তোমাদের জন্য শনিবারের ব্যাপারে আল্লাহর হুকুমের সীমালঙ্ঘন করো না।

বর্ণনাকারী (সফ্ওয়ান) বলেন, তারা উভয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দুই হাতে-পায়ে চুম্বন করলো এবং বললঃ আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, সত্যিই আপনি আল্লাহর নবী! তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আমার অনুসরণের পথে তোমাদের বাধা কী? তারা বলল, (সত্যি কথা হল) দাঊদ (আঃ) আল্লাহর নিকট দু’আ করেছিলেন যে, নবী সবসময় যেন তার বংশে জন্মগ্রহণ করেন। সুতরাং আমাদের ভয় হয়, যদি আমরা আপনার অনুসারী হই তাহলে ইয়াহূদীরা আমাদেরকে হত্যা করবে। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ ও নাসায়ী)[1]

باب الكبائر وعلامات النفاق - الفصل الثاني

عَنْ صَفْوَانَ بْنِ عَسَّالٍ قَالَ: قَالَ يَهُودِيٌّ لصَاحبه اذْهَبْ بِنَا إِلَى هَذَا النَّبِي فَقَالَ صَاحِبُهُ لَا تَقُلْ نَبِيٌّ إِنَّهُ لَوْ سَمِعَكَ كَانَ لَهُ أَرْبَعَة أَعْيُنٍ فَأَتَيَا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَسَأَلَاهُ عَنْ تِسْعِ آيَاتٍ بَيِّنَاتٍ فَقَالَ لَهُم: «لَا تُشْرِكُوا بِاللَّهِ شَيْئًا وَلَا تَسْرِقُوا وَلَا تَزْنُوا وَلَا تَقْتُلُوا النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللَّهُ إِلَّا بِالْحَقِّ وَلَا تَمْشُوا بِبَرِيءٍ إِلَى ذِي سُلْطَانٍ لِيَقْتُلَهُ وَلَا تَسْحَرُوا وَلَا تَأْكُلُوا الرِّبَا وَلَا تَقْذِفُوا مُحصنَة وَلَا توَلّوا الْفِرَار يَوْمَ الزَّحْفِ وَعَلَيْكُمْ خَاصَّةً الْيَهُودَ أَنْ لَا تَعْتَدوا فِي السبت» . قَالَ فقبلوا يَده وَرجله فَقَالَا نَشْهَدُ أَنَّكَ نَبِيٌّ قَالَ فَمَا يَمْنَعُكُمْ أَنْ تتبعوني قَالُوا إِن دَاوُد دَعَا ربه أَن لَا يزَال فِي ذُرِّيَّتِهِ نَبِيٌّ وَإِنَّا نَخَافُ إِنْ تَبِعْنَاكَ أَنْ تَقْتُلَنَا الْيَهُودُ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ

Chapter: Major Sins and the Signs of Hypocrisy - Section 2


Safwan b. ‘Assal told how, when a Jew said to his friend, “Let us go to this prophet,” his friend said to him, “Don’t say ‘prophet’, for if he heard you he would be greatly pleased.” * They went to God’s messenger and asked him about nine clear signs. God’s messenger said, “Do not associate anything with God. do not steal, do not commit fornication, do not kill anyone whom God has declared inviolate without a just cause, do not bring an innocent person before a ruler in order that he may put him to death, do not use magic, do not devour usury, do not slander a chaste woman, do not turn in flight on the day the army marches, and, a matter which affects you Jews particularly, do not break the Sabbath.” He said that thereupon they kissed/his hands and feet saying, “We testify that you are a prophet.” He asked “What prevents you from following me?” to which they replied, “David prayed to his Lord that prophets might never cease to arise from his offspring, and we are afraid that if we follow you the Jews will kill us.”

Tirmidhi, Aba Dawud and Nasa’i transmitted it.

* Lit. “he would have four eyes.”

ব্যাখ্যা: এ হাদীসে এক ইয়াহূদী তার সঙ্গীকে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে নাবী শব্দ প্রয়োগ করতে বাধা প্রদান করে এবং বলে, সে যদি এ শব্দ শুনতে পায় তাহলে খুশীতে সে দৃষ্টি মেলে ধরবে ফলে উজ্জ্বলতা আরো বেড়ে যাবে। কেননা আনন্দ মানুষের দৃষ্টিকে প্রসারিত করে। আর চিন্তা তাতে বিঘ্ন ঘটায়। তারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে পরীক্ষা স্বরূপ নয়টি স্পষ্ট নিদর্শন সম্পর্কে প্রশ্ন করে। এ নয়টি নিদর্শন দ্বারা হয়ত নয়টি মু‘জিযা উদ্দেশ্য। যেমন মহান আল্লাহ তা‘আলার বাণীতে বিদ্যমান ‘‘তোমার হাত তোমার জামার বক্ষদেশে প্রবেশ করাও, ফলে তা কোন অকল্যাণ ব্যতিরেকেই ফর্সা হয়ে বেরিয়ে আসবে।’’ এটি নয়টি মু‘জিযার একটি, অবশিষ্টগুলো হলোঃ লাঠি, তুফান, পঙ্গপাল, উকুন, ব্যাঙ, রক্ত, দুর্ভিক্ষ ও ফসলের ঘাটতি। অথবা সাধারণ নির্দেশাবলী যা সকল উম্মাতের জন্য প্রযোজ্য। যেমন আল্লাহ তা‘আলার বাণী, ‘‘আমি মূসা (আঃ)-কে নয়টি স্পষ্ট নিদর্শন প্রদান করেছি’’ এমনটি হলে হাদীসে উল্লিখিত বিষয়গুলো তাদের প্রশ্নোত্তর।

বিশেষ করে হে ইয়াহূদী সম্প্রদায়! তোমরা শনিবারের ব্যাপারে সীমালঙ্ঘন করো না। অর্থাৎ- শনিবারের মর্যাদার ব্যাপারে আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে ঐ দিনে মাছ শিকার করো না। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি নাবী। কেননা একজন লেখাপড়া না জানা ব্যক্তির পক্ষে এ ধরনের জ্ঞান মু‘জিযা। আর তা নুবূওয়্যাতের সাক্ষী। তবে আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি ‘আরব জাতির নাবী। কারণ দাঊদ (আঃ) দু‘আ করেছিলেন তার সন্তানদের মধ্যেই যেন নুবূওয়্যাতের ধারা অব্যাহত থাকে। তিনি নাবী হওয়ার কারণে তাঁর দু‘আ গ্রহণীয়, কেননা আল্লাহ তা‘আলা নাবীদের দু‘আ অগ্রাহ্য করেন না। বিষয়টি যদি তাই হয়, তাহলে তার সন্তানদের মধ্যে নুবূওয়্যাতের ধারা অব্যাহত থাকবে। আর ইয়াহূদী সম্প্রদায় সে নাবীর অনুসরণ করবে। হতে পারে যে তারা বিজয়ী হবে এবং তারা শক্তিশালী হবে। আর যদি এমনটি হয় আর আমরা তাদের ধর্ম পরিত্যাগ করে আপনার অনুসরণ করি তাহলে তারা আমাদেরকে হত্যা করবে। তাদের এ দাবী মিথ্যা এবং দাঊদ (আঃ)-এর প্রতি অপবাদ। কেননা তিনি এমন দু‘আ করেননি। আর কোন ব্যক্তির পক্ষে দাঊদ (আঃ) সম্পর্কে এমন ধারণা পোষণ করা বৈধ নয়। কেননা দাঊদ (আঃ) যাবূরে পাঠ করেছেন যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সর্বশেষ নাবী করে প্রেরণ করা হবে। তার মাধ্যমে নুবূওয়্যাতের ধারাবাহিকতা শেষ হয়ে যাবে এবং সকল বিধান বাতিল হয়ে যাবে। অতএব একজন নাবীর পক্ষে কিভাবে সম্ভব হবে যে, আল্লাহ তাঁকে যা অবহিত করেছেন তার বিপরীত দু‘আ করা?