পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর নুবুওয়্যাতপ্রাপ্তি ও ওয়াহীর সূচনা

৫৮৫১-[১৫] ইয়াহইয়া ইবনু আবূ কাসীর (রহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন আমি আবূ সালামাহ ইবনু আবদুর রহমান (রাঃ)-কে কুরআনের সর্বপ্রথম অবতীর্ণ হওয়া আয়াত সম্পর্কে প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেন, (یٰۤاَیُّهَا الۡمُدَّثِّرُ) “হে,বস্ত্র আবৃত (ব্যক্তি)!”- (সূরাহ আল মুদ্দাসসির ৭৪: ১)। আমি বললাম, লোকেরা তো বলে- (اِقۡرَاۡ بِاسۡمِ رَبِّکَ..) “পাঠ কর তোমার প্রতিপালকের নামে..."- (সূরাহ আল ’আলাক ৯৬: ১)। আবূ সালামাহ্ বললেন, এ বিষয়ে আমি জাবির (রাঃ)-কে প্রশ্ন করেছিলাম এবং তুমি আমাকে যা বললে, আমিও তাকে হুবহু তাই বলেছিলাম। উত্তরে জাবির (রাঃ) আমাকে বললেন, তিনি (সা.) আমাদের কাছে যা বলেছেন, আমিও তোমাকে হুবহু তাই বলব। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমি হেরা গুহায় (দিবা-রাত্র) একাধারে একমাস অতিবাহিত করেছি। সেখানে অবস্থানকাল শেষ করে আমি সমতল ভূমিতে অবতরণ করলাম। এ সময় আমাকে কেউ ডাক দিল। আমি ডানে তাকালাম, কিন্তু কিছুই দেখতে পেলাম না, আবার বামদিকে দৃষ্টি দিলাম তখনো কিছু দেখলাম না, আবার পিছনে তাকালাম তখনো কিছু দেখলাম না, আবার পিছনে দৃষ্টি দিলাম এবারও কিছুই দেখলাম না। এরপর আমি মাথা তুলে উপরের দিকে দৃষ্টি দিলাম। এবার বিশাল কিছু (জিবরীল আলায়হিস সালাম -কে তাঁর আসল আকৃতিতে) দেখতে পেলাম। অতঃপর আমি খাদীজার কাছে এসে বললাম, আমাকে কম্বল দ্বারা আবৃত কর’ তারা আমাকে কম্বল দ্বারা আবৃত করল এবং আমার দেহে ঠাণ্ডা পানি ঢালল, তখন অবতীর্ণ হলো (অর্থাৎ) হে কম্বল আচ্ছাদিত লোক! উঠ! সকলকে সতর্ক সাবধান কর। তোমার প্রভুর মাহাত্ম ঘোষণা কর। তোমার পোশাক-পরিচ্ছদ পবিত্র রাখ এবং অপবিত্রতা (মূর্তিপূজা) হতে পৃথক থাক।’ এটা সালাত ফরয হওয়ার আগের ঘটনা। (বুখারী ও মুসলিম)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب المبعث وبدء الْوَحْي)

عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ قَالَ: سَأَلْتُ أَبَا سَلَمَةَ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ أَوَّلِ مَا نزل من الْقُرْآن؟ قَالَ: [يَا أَيهَا المدثر] قلت: يَقُولُونَ: [اقْرَأ باسم ربِّك] قَالَ أَبُو سَلَمَةَ: سَأَلْتُ جَابِرًا عَنْ ذَلِكَ. وَقُلْتُ لَهُ مِثْلَ الَّذِي قُلْتَ لِي. فَقَالَ لِي جَابِرٌ: لَا أُحَدِّثُكَ إِلَّا بِمَا حَدَّثَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: جَاوَرْتُ بِحِرَاءٍ شَهْرًا فَلَمَّا قَضَيْتُ جِوَارِي هَبَطْتُ فَنُودِيتُ فَنَظَرْتُ عَنْ يَمِينِي فَلَمْ أَرَ شَيْئًا وَنَظَرْتُ عَنْ شِمَالِي فَلَمْ أَرَ شَيْئًا وَنَظَرْتُ عَنْ خَلْفِي فَلَمْ أَرَ شَيْئًا فَرَفَعْتُ رَأْسِي فَرَأَيْتُ شَيْئًا فَأَتَيْتُ خَدِيجَةَ فَقُلْتُ: دَثِّرُونِي فَدَثَّرُونِي وصبُّوا عليَّ مَاء بَارِدًا فَنزلت: [يَا أَيهَا الْمُدَّثِّرُ. قُمْ فَأَنْذِرْ وَرَبَّكَ فَكَبِّرْ. وَثِيَابَكَ فَطَهِّرْ. وَالرجز فاهجر] وَذَلِكَ قَبْلَ أَنْ تُفْرَضَ الصَّلَاةُ. مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

متفق علیہ ، رواہ البخاری (4922) و مسلم (255 / 161)، (406) ۔
(مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

عن يحيى بن ابي كثير قال سالت ابا سلمة بن عبد الرحمن عن اول ما نزل من القران قال يا ايها المدثر قلت يقولون اقرا باسم ربك قال ابو سلمة سالت جابرا عن ذلك وقلت له مثل الذي قلت لي فقال لي جابر لا احدثك الا بما حدثنا رسول الله صلى الله عليه وسلم قال جاورت بحراء شهرا فلما قضيت جواري هبطت فنوديت فنظرت عن يميني فلم ار شيىا ونظرت عن شمالي فلم ار شيىا ونظرت عن خلفي فلم ار شيىا فرفعت راسي فرايت شيىا فاتيت خديجة فقلت دثروني فدثروني وصبوا علي ماء باردا فنزلت يا ايها المدثر قم فانذر وربك فكبر وثيابك فطهر والرجز فاهجر وذلك قبل ان تفرض الصلاة متفق عليهمتفق علیہ رواہ البخاری 4922 و مسلم 255 161 406 ۔متفق عليه

ব্যাখ্যা: (یٰۤاَیُّهَا الۡمُدَّثِّرُ) এ সূরাটি নাযিল হয়েছে ওয়াহী বিরতির পরে। অর্থাৎ এটা নাযিলের মাধ্যমে ওয়াহীর বিরতিকাল শেষ হয়। এটা সতর্ক করার জন্য নির্দিষ্ট হিসেবে প্রথম আয়াত। আর এটা রিসালাতের প্রথম ওয়াহী। অর্থাৎ এ আয়াতটি নাযিল করে নবী (সা.) -কে রিসালাতের ঘোষণা দেয়া হয়। আর এর আগে যে আয়াত নাযিল করা হয়েছিল তা ছিল নবী হওয়ার ঘোষণা। আল্লাহ ভালো জানেন।
(جَاوَرْتُ بِحِرَاءٍ شَهْرًا) অর্থাৎ এখান থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, এ একমাস ছিল ওয়াহী বন্ধ চলাকালীন সময়ে।
(هَبَطْتُ) অর্থাৎ আমি অবতরণ করলাম। আর এখান থেকে বুঝা যাচ্ছে, এ অবস্থা ছিল দ্বিতীয় পর্যায়ে। কারণ প্রথম পর্যায়ে হিরা গুহায় নাযিল হয়েছিল ইকরা বা তুমি পড়। এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা পূর্বে গত হয়েছে।
এরপর নবী (সা.) বাড়ী ফিরে এসে খাদীজাহ্ (রাঃ)-কে বললেন, আমাকে চাদর জড়িয়ে দাও। পরে আল্লাহ নাযিল করেন।
یٰۤاَیُّهَا الۡمُدَّثِّرُ﴿۱﴾   قُمۡ فَاَنۡذِرۡ﴿۲﴾  وَ رَبَّکَ فَکَبِّرۡ﴿ۙ۳﴾   وَ ثِیَابَکَ فَطَهِّرۡ﴿ۙ۴﴾  وَ الرُّجۡزَ فَاهۡجُرۡ﴿ۙ۵﴾ “ওহে বস্ত্ৰ আবৃত (ব্যক্তি)! ওঠ, সতর্ক কর। আর তোমার প্রতিপালকের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা কর। তোমার পোশাক পরিচ্ছদ পবিত্র রাখ। (যাবতীয়) অপবিত্রতা থেকে দূরে থাক।” (সূরা আল মুদ্দাসসির ৭৪: ১-৫) উল্লেখিত এই পাঁচটি আয়াত। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)